পবিত্র ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটি উপলক্ষে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক পর্যটনকেন্দ্রের রিসোর্ট-কটেজে বেড়েছে আগাম কক্ষ বুকিং। এরই মধ্যে সাজেকের রিসোর্ট-কটেজগুলোর প্রায় ৮০ শতাংশের আগাম বুকিং হয়েছে।

পর্যটকদের কাছে সারা বছরই পছন্দের তালিকায় থাকে রাঙামাটির সাজেক পর্যটনকেন্দ্র। এবার ঈদের ছুটি তুলনামূলক দীর্ঘ হওয়ায় সাজেকে পর্যটক সমাগম অন্যবারের তুলনায় বেশি হবে বলে আশাবাদী পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সাজেকের রিসোর্ট-কটেজে আগাম কক্ষ বুকিং নেওয়া হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত রিসোর্ট-কটেজের প্রায় ৮০ শতাংশের বুকিং হয়েছে। বেশির ভাগ পর্যটক আগাম বুকিং দিয়েছেন ৮ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সময়ের জন্য। এর মধ্যে ৯ ও ১০ জুন দু-একটি ছাড়া সব রিসোর্ট-কটেজের বুকিং শেষ। এই দুই দিন আগাম কক্ষ বুকিং না দিয়ে সাজেকে এলে পর্যটকদের স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘর, ক্লাবঘরে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির নেতারা। বর্তমানে সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে চালু রয়েছে ৯৮টির মতো রিসোর্ট-কটেজ।

সাজেক ভ্যালির হলিডে ও টারেং রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী রিন্টু চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার দুটি রিসোর্টের মধ্যে টারেং রিসোর্টের ১৩টি কক্ষের আগাম বুকিং হয়ে গেছে। এই ১৩ কক্ষে ৩৭ জন থাকতে পারেন। অন্যদিকে হলিডে রিসোর্টে এখন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। ওই রিসোর্টের ২২টি কক্ষে ৫৫ জনের থাকার সুযোগ রয়েছে।’

সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এবার লম্বা ছুটি, তাই পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে চাপ বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। সাজেকেও আগাম বুকিংয়ের হিড়িক পড়েছে। রিসোর্ট-কটেজের ৮০ শতাংশের বুকিং এরই মধ্যে হয়ে গেছে। তবে আগাম বুকিং চলমান। আশা করছি, এবার ঈদের পর সপ্তাহজুড়েই সাজেকে মানুষের ভিড় থাকবে।’

এদিকে সাজেকের মতো জেলা শহর রাঙামাটির হোটেল-মোটেলগুলোতেও আগাম বুকিংয়ের হিড়িক পড়েছে। এরই মধ্যে আবাসিক হোটেল-মোটেলের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়েছে।

রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সে ৮৭টি কক্ষ রয়েছে। ৮০ শতাংশ কক্ষ এরই মধ্যে বুকিং হয়ে গেছে। ৯ থেকে ১৩ জুনের জন্য আগাম বুকিং চলছে। তিনি বলেন, গত ঈদুল ফিতরের পর পর্যটন কমপ্লেক্সে ‘সানরাইজ ইকো পার্ক’ নির্মাণ করা হয়েছে, যেখান থেকে কাপ্তাই হ্রদের সৌন্দর্যসহ চারপাশের নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। তাই এবার পর্যটন কমপ্লেক্সে পর্যটকদের আগ্রহ তুলনামূলক বেশি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আগ ম ব ক

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।

আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’

হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।

নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্‌যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।

এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’

বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।

প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।

বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুর্গাপূজায় নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থায় থাকবে পুলিশ: আইজিপি
  • শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সিঙ্গাইরের ৭৭ মণ্ডপে অনুদান বিতরণ
  • শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন উপলক্ষে বন্দরে প্রস্তুুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত 
  • সৈকতে নারী পর্যটকদের গোসলের ভিডিও ধারণ, কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের কারাদণ্ড
  • মোদির জন্মদিনে ট্রাম্পের ফোন, মেসির উপহার
  • বেনাপোল দিয়ে ইলিশের প্রথম চালান গেল ভারতে
  • সদর উপজেলায় শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা
  • ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেল ৩৭টি প্রতিষ্ঠান
  • ‘ওজোনস্তর ক্ষয়ে স্বাস্থ্য, কৃষি ও প্রাণিজগৎ ঝুঁকির মুখে’
  • দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ