ব্যবসায়ীদের ওপর করের চাপ বাড়বে: আইসিএবি
Published: 4th, June 2025 GMT
ব্যবসায়ীদের ওপর করের চাপ বাড়বে বলে মনে করে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। করপোরেট কর বৃদ্ধি এবং লাভ-ক্ষতিনির্বিশেষে উৎসে কর বাড়ানোর ফলে তাঁদের ওপর আগামী অর্থবছরে এই চাপ বাড়বে বলে জানিয়েছে আইসিএবি।
আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাজেট-পরবর্তী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আইসিএবি। এতে বক্তব্য দেন আইসিএবির সভাপতি মারিয়া হাওলাদার, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ বসু, সাবেক সভাপতি হুমায়ূন কবির প্রমুখ। স্নেহাশীষ মাহমুদ অ্যান্ড কোংয়ের অংশীদার স্নেহাশীষ বড়ুয়া একটি উপস্থাপনা দেন। কারওয়ান বাজারে আইসিএবি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, টার্নওভার করের হার বৃদ্ধি করে দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ এবং ব্যক্তিদের জন্য দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ করা করদাতাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। প্রতিষ্ঠানের টার্নওভারের ওপর ন্যূনতম কর করনীতির পরিপন্থী। ব্যবসায় লাভ হলেই শুধু করযোগ্য আয়ের ওপর কর আরোপ করা সমীচীন। তাই এই কর বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে আইসিএবি।
আইসিএবি আরও বলছে, পরের দুই বছর করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। এতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য খুব একটা স্বস্তিদায়ক হবে না। আগামী অর্থবছর থেকে অনলাইনে রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে আইসিএবি।
আইসিএবি আরও বলেছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে জাতীয় বাজেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক ব্যবস্থাপনায় দেশের নারীদের অবৈতনিক ও অস্বীকৃত সেবা ও গৃহস্থালির কাজের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
স্নেহাশীষ বড়ুয়া জানান, নতুন বাজেটে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির ক্ষেত্রে করের হারের ব্যবধান বেড়েছে। ১০ শতাংশ শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে শেয়ারবাজারে ছাড়লে সাড়ে ২২ শতাংশ এবং সব লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে হলে ২০ শতাংশ করপোরেট কর হবে। এ ছাড়া বাকি সব কোম্পানিকে সাড়ে ২৭ শতাংশ কর দিতে হবে। এতে কোনো কোনো কোম্পানি ১০ শতাংশের কম শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে ছাড়লেও করসুবিধা পাবে না।
স্নেহাশীষ বড়ুয়া বলেন, ১৯৯৯ সালে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়ম মেনে আইপিওর মাধ্যমে ১০ শতাংশের কম শেয়ার বাজারে ছাড়তে পারে। তাহলে ওই কোম্পানিও কর সুবিধা পাবে না। ওই কোম্পানিকে তখন কম শেয়ার আইপিওতে ছাড়ার সুযোগের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ূন কবির বলেন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যবসা করার উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। করহারও যৌক্তিক করা উচিত। তিনি আরও বলেন, অতীতে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ দিয়েও তেমন কাজ হয়নি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পণ্য রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে ১১ শতাংশ
গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট ও ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মধ্যেও দেশের পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় আছে। গত মাসে ৪৭৪ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানিতে সেই প্রমাণই মেলে। এই রপ্তানি গত বছরের একই মাসের তুলনায় ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আজ মঙ্গলবার পণ্য রপ্তানি আয়ের এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-মে পর্যন্ত ১১ মাসে মোট ৪ হাজার ৪৯৫ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা এর আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ের সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সদ্য সমাপ্ত মে মাসে তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াপণ্য, হোম টেক্সটাইল, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা, হিমায়িত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। অন্যদিকে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রপ্তানি কমেছে।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, গত মে মাসে ৩৯২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের মে মাসের তুলনায় ১১ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৩ হাজার ৬৫৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি।