কোহলিরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে পেলেন ২০ কোটি, ড্রেক বাজি ধরেই ১১ কোটি
Published: 5th, June 2025 GMT
এবারের আইপিএলে শুধু খেলোয়াড়দের বেতন বাবদই ১০০ কোটি রুপির বেশি খরচ করেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। গতকাল রাতে দলটি ফাইনালে পাঞ্জাব কিংসকে হারিয়ে প্রাইজমানি হিসেবে পেয়েছে ২০ কোটি রুপি। খেলোয়াড়দের বেতনে প্রায় একই খরচ করা পাঞ্জাব কিংস রানার্সআপ হিসেবে পেয়েছে ১৩ কোটি রুপি।
আর ফাইনালে কে জিতবে—এই বাজি ধরেই ১১ কোটি রুপির বেশি পেয়ে গেছেন ড্রেক। কানাডার এই র্যাপার ও সংগীতশিল্পী আইপিএল ফাইনালে বেঙ্গালুরুর পক্ষে বাজি ধরেছিলেন।
বিভিন্ন আলোচিত ঘটনায় ড্রেকের বাজি ধরা নতুন কিছু নয়। মঙ্গলবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আইপিএল ফাইনাল শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ড্রেক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জানান, কারা চ্যাম্পিয়ন হবে, তা নিয়ে বাজি ধরেছেন তিনি।
বেঙ্গালুরুর দলীয় স্লোগান ‘এ সালা কাপ নামদে (এই বছর কাপ আমাদের) শিরোনামের পোস্টে দেখা যায়, ক্রিপ্টো-বেটিং প্ল্যাটফর্ম স্টেক-এ বেঙ্গালুরুর পক্ষে সাড়ে সাত লাখ মার্কিন ডলার বাজি ধরেছেন ড্রেক, যা ভারতীয় মুদ্রায় ৬ কোটি ৪১ রুপির মতো। বাজিতে বেঙ্গালুরুর পক্ষে অড ছিল ১.
ফাইনালে বেঙ্গালুরু ৬ রানে জিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ড্রেক বাজিতে জিতেছেন ১৩ লাখ মার্কিন ডলার বা ১১ কোটি রুপির বেশি।
আইপিএলের ট্রফি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উল্লাস বেঙ্গালুরুর খেলোয়াড়দের।উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে মুখ থুবড়ে পড়েছে ২৪ কোটি টাকার পানি প্রকল্প
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার বাসিন্দাদের সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য প্রায় ২৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। কিন্তু প্রকল্প শেষ হওয়ার বহু বছর পরও পৌরবাসীর ঘরে পৌঁছায়নি এক ফোঁটা পানিও। নিন্মমানের কাজ, অব্যবস্থাপনা ও তদারকির অভাবে মাটির নিচে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে পুরো প্রকল্প।
২০১৯-২০ অর্থবছরে জাতীয় পর্যায়ের পানি সরবরাহ প্রকল্পের অংশ হিসেবে শ্রীপুর পৌরসভায় কাজ শুরু হয়। নির্ধারিত সময়ে ২০২১ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা টেনে নেয় ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ১৩৮ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানো ও ১০টি পাম্প হাউস নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। এর মধ্যে পাইপলাইনের জন্য বরাদ্দ হয় প্রায় ১৫ কোটি টাকা এবং পাম্প হাউসের জন্য ৮ কোটি টাকারও বেশি। মনিরা ট্রেডার্স পাইপলাইন ও জিলানী ট্রেডার্স পাম্প হাউস নির্মাণের কাজ করে। তদারকির দায়িত্বে ছিল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
কাগজে-কলমে কাজ শেষ দেখালেও বাস্তবে অধিকাংশ পাইপলাইন ভেঙে অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ১০টির মধ্যে মাত্র ৯টি পাম্প হস্তান্তর করা হলেও সেগুলোও বিকল হয়ে আছে। একটি পাম্প হাউস এখনো নির্মাণাধীন।
পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “এত কোটি টাকা খরচ হলো, কিন্তু আমাদের ঘরে একদিনও পানি আসেনি। পাইপলাইন মাটির নিচে পচে গেছে, বাসাবাড়ির গ্যাস লাইন কিংবা সড়ক সংস্কারের সময়ও এগুলো কেটে একাকার করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি আসলে টাকার লুটপাট ছাড়া কিছু নয়।”
৯ নম্বর ওয়ার্ডের আরেক বাসিন্দা খোরশেদ আলমের ক্ষোভ, “২৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, অথচ একটি ফোঁটা পানিও মানুষ পায়নি। নিম্নমানের পাইপ বসানো হয়েছিল, সেগুলো সব ভেঙে গেছে। প্রকল্প চালু হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই।”
প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে বলে দেখানো হলেও, বাস্তবে শ্রীপুর পৌরবাসীর ঘরে এখনো পৌঁছায়নি পানি। কোটি কোটি টাকা খরচ করেও শুধু মাটির নিচে চাপা পড়েছে স্বপ্নের এই পানি সরবরাহ প্রকল্প। নাগরিকরা বলছেন, সরকারের মূল্যবান অর্থ অপচয়ের এমন নজির দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে দীর্ঘদিন।
শ্রীপুর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন) আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, “আমি দায়িত্বে থাকলেও শুরুতে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তবে সত্যি বলতে, নিম্নমানের পাইপ ব্যবহার হয়েছে। ১৫০০ সংযোগ দেওয়া হয়েছিল, এখন একটিও চালু নেই।”
গাজীপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মশিউর রহমান বলেন, “২০২৩ সালে কাজ পৌরসভার কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাজের মান খারাপ হলে তারা কেন গ্রহণ করলো?”
পৌর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাহেদ আখতার বলেন, “কাজ বুঝে নেওয়ার পরও বাস্তবে পানি সরবরাহ চালু করা যায়নি। পাইপ নষ্ট হয়ে গেছে। প্রকল্প চালু হবে কিনা তা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে।”
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক সজীব আহমেদ বলেন, “প্রকল্প হস্তান্তর হয়েছে আমার দায়িত্ব নেওয়ার আগেই। আমি আসার পর থেকে পুরো প্রকল্প বিকল অবস্থায় রয়েছে। চালু হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।”
ঢাকা/রফিক/এস