আইসিসির বিচারকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানাল ইই
Published: 7th, June 2025 GMT
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) চার বিচারকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছে ইইউ।  খবর আল জাজিরার।   
শুক্রবার (৬ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ একটি পোস্টে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লেইন বলেন, “ আইসিসির বিচারকদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঘটনায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গত বৃহস্পতিবার (৫ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের চার বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেন। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ ও ভিত্তিহীন পদক্ষেপ’ নেওয়ার অভিযোগে নিষেধাজ্ঞাটি জারি করা হয়।
আরো পড়ুন:
প্রকাশ্য বিরোধে ট্রাম্প-মাস্ক: পাল্টাপাল্টি হুমকিতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি
অনুমোদিত ভ্রমণকাল শেষে থাকলে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র
এর প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার (৬ জুন) ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লেইন বলেন, “হেগ-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রতি ইইউর ‘পূর্ণ সমর্থন’ রয়েছে।”
‘এক্স’ পোস্টে তিনি আরো বলেন, “আইসিসি বিশ্বের সবচেয়ে গুরুতর অপরাধের অপরাধীদের জবাবদিহি করে এবং ভুক্তভোগীদের কথা বলার সুযোগ দেয়। বিচারকদের চাপ ছাড়াই কাজ করার স্বাধীনতা থাকা উচিত।”
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টার্ক জানান, তিনি মার্কিন সিদ্ধান্তে ‘খুবই বিরক্ত।’
টার্ক বলেন, “জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিচারকদের বিচারিক কার্য সম্পাদনের জন্য তাদের উপর আক্রমণ- আইনের শাসন ও আইনের সমান সুরক্ষার প্রতি শ্রদ্ধার সরাসরি পরিপন্থি- যে মূল্যবোধের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে দাঁড়িয়ে আছে।”
তিনি আরো বলেন, “এই ধরনের আক্রমণ সুশাসন ও ন্যায়বিচারের যথাযথ প্রশাসনের জন্য গভীরভাবে ক্ষতিকর।”
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান আইসিসির বিচারকদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।
২৭টি ইইউ সদস্য রাষ্ট্রের জাতীয় সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি আন্তোনিও কস্তাও আইসিসিকে ‘আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিপ্রস্তর’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আইসিসিরি স্বাধীনতা ও অখণ্ডতা অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।”
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, আইসিসি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি এবং ২০২০ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে কথিত যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু করার জন্য এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা আইসিসির চার বিচারকের সবাই নারী। তারা হলেন- উগান্ডার সোলোমি বালুঙ্গি বোসা, পেরুর লুজ ডেল কারমেন ইবানেজ কারানজা, বেনিনের রেইন অ্যাডিলেড সোফি আলাপিনি গানসো এবং স্লোভেনিয়ার বেটি হোলার।
ইইউ সদস্য স্লোভেনিয়া বলেছে, তারা ‘বিচারিক প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ প্রত্যাখ্যান করে’ এবং ইইউকে তার ব্লকিং আইন ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছে।
স্লোভেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছে, “নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ইইউ সদস্য রাষ্ট্রের নাগরিকের অন্তর্ভুক্তির কারণে, স্লোভেনিয়া ব্লকিং আইনটি অবিলম্বে সক্রিয় করার প্রস্তাব করবে।”
ব্লকিং আইনটি ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার অ্যানেক্সে তালিকাভুক্ত আইনগুলোর সঙ্গে ‘প্রত্যক্ষ’ বা ‘পরোক্ষ’ (সাবসিডিয়ারি বা মধ্যস্থতাকারী ব্যক্তিদের মাধ্যমে) সম্মতি থেকে নিষিদ্ধ করে। কিউবা এবং ইরানের সঙ্গে ইউরোপীয় বাণিজ্য নিষিদ্ধ করা থেকে ওয়াশিংটনকে বিরত রাখতে অতীতে এই আইন ব্যবহার করা হয়েছে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মানে হলো, বিচারকদের বিশেষভাবে মনোনীত অনুমোদিত ব্যক্তিদের তালিকায় যুক্ত করা হবে। তাদের যে কোনো মার্কিন সম্পদ জব্দ করা হবে এবং সেগুলো কেবল মার্কিন ব্যাংকগুলোই নয় বরং বিশ্বব্যাপী অনেক ব্যাংক দ্বারা ব্যবহৃত একটি স্বয়ংক্রিয় নজরদারি প্রক্রিয়ায় রাখা হবে, যার ফলে অনুমোদিত ব্যক্তিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রাখা বা খোলা বা অর্থ স্থানান্তর করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে।
২০ জানুয়ারি ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে এটিই প্রথমবার নয় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার কয়েকটি পরেই ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে আইসিসি তদন্তে অংশগ্রহণকারী যে কাউকে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন। সেসময় সমালোচকরা সতর্ক করে বলেছিলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ন্যায়বিচারের পথকে বিকৃত করতে পারে, উদাহরণস্বরূপ, সাক্ষীদের প্রমাণ নিয়ে এগিয়ে আসতে নিরুৎসাহিত করবে।
কিন্তু ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছিলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও সাবেক ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের আইসিসিরি গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পরিপ্রেক্ষিতে এই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন ছিল।
তিনি আরো দাবি করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল ‘যুদ্ধের আইন কঠোরভাবে মেনে চলা গণতন্ত্রের বিকাশ’ করছে এবং আইসিসির তদন্ত সামরিক সদস্যদের ‘হয়রানি, নির্যাতন ও সম্ভাব্য গ্রেপ্তারের’ হুমকি দিচ্ছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র র ব চ রকদ র র ব চ রক ইউর প য আইস স র মন ত র র জন য সদস য র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
জাতির স্বার্থে খোলামেলা আলোচনায় বসার আহ্বান জামায়াতের
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ও জাতির স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে খোলামেলা আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, সরকারসহ সব পক্ষ আন্তরিক হলে আলোচনার মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক সংকটের সমাধান সম্ভব।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ভোরে বিদেশ সফর শেষে দেশে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন শফিকুর রহমান।
জাতীয় নির্বাচনে দলের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা সময়মতো ঘোষণা করা হবে বলে বলেও জানান তিনি। এছাড়া, জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইঙ্গিত দেন তিনি।
বিএনপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে, জামায়াতের তালিকা কবে ঘোষণা করা হবে জানতে চাইলে দলের আমির বলেন, “তারাও (বিএনপি) চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেনি। আমি দেখেছি ২৩৭ টা আসনে তারা তালিকা প্রকাশ করেছেন, আবার এটিও চূড়ান্ত নয়। এরমধ্যেও পরিবর্তন আসতে পারে।”
“আমরা কিন্তু এক বছর আগেই এই তালিকা আঞ্চলিকভাবে জানিয়ে দিয়েছি। চূড়ান্ত তালিকাটা সময়মতো আমরা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ঘোষণা করব। তবে যেহেতু আমরা একা ইলেকশন করব না, আরো অনেককে আমরা ধারণ করব, দেশ এবং জাতির স্বার্থে সব দিক বিবেচনা করেই চূড়ান্তভাবে যথাসময়ে আমরা ইনশাআল্লাহ প্রার্থী ঘোষণা করব।”
আসন্ন নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠানের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে জামায়াতের আমির বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, আমরা আপনারা দেশবাসী সবাই দেখতে চাই।”
মতানৈক্য গণতন্ত্রের সৌন্দর্য: রাজনীতিতে মতানৈক্য কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির বলেন, “আমি বুঝতে পেরেছি, আমাদের মধ্যে মতানৈক্য থাকবে, তবে দোয়া করেন মতবিরোধ যেন না হয়। মতের ভিন্নতা থাকবে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। সব দল তো এক দল নয়। সবগুলো দল ভিন্ন ভিন্ন। তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতেও মতপার্থক্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক।”
“আমরা সকলের মতকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখি। তবে আমরা নিজেরা যে মতটা প্রকাশ করি আমরা চেষ্টা করি চিন্তাভাবনা করে জাতির স্বার্থেই সে মতগুলা প্রকাশ করা হয়। অতএব, মতানৈক্য এটা ডেমোক্রেসির সৌন্দর্য। এটার জন্য এখানে বিরোধ লেগে গেছে অথবা দেশ একেবারে অস্থির হয়ে গেছে আমরা এইটুকু চিন্তা করতে রাজি নই” বলেন তিনি।
খোলামেলা আলোচনার আহ্বান:
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারি ও গণভোটের বিষয়ে শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি অলরেডি দিয়ে দিয়েছি।”
সরকার রাজনৈতিক দলসমূহকে সময় বেঁধে দিয়েছেন, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “না, উনারা সময় বেঁধে দেই নাই; আমি শুনেছি ভাল করে। উনারা অনুরোধ করেছেন যে, এক সপ্তাহ সময়ের ভেতরে রাজনৈতিক দলগুলা বসে যদি একটা কনসেনসাসে পৌঁছাতে পারে, তাহলে তারা সিদ্ধান্ত দিয়ে দেবে। সরকার ভালো কথাই বলেছে।”
তিনি বলেন, “আমরাই সবার আগে আহ্বান জানিয়েছি যে, আসুন, আমরা খোলামেলা আলোচনা করে জাতির স্বার্থে একটা সমাধানে পৌঁছি। আমরা আশা করি, অন্যরা আমাদের এই আহ্বানে সাড়া দেবেন।”
এর আগে গতকাল সোমবার জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
আমি ‘আমির’ নির্বাচিত হইনি:
আবারো দলের আমির নির্বাচত হওয়া প্রসঙ্গে শফিকুর রহমান বলেন, “আমি ‘আমির’ নির্বাচিত হইনি। আমার সহকর্মীরা আমার ওপর একটা দায়িত্বের ভার অর্পণ করেছেন, এই দায়িত্বটা বড় ভারী। আপনারা দোয়া করবেন, দেশ এবং দ্বীনের জন্য এই দায়িত্ব পালনে আল্লাহ যেন আমাকে সাহায্য করেন। আর পাশাপাশি আমি আপনাদেরও সহযোগিতা চাই।”
সাংবাদিকদের উদ্দেশে জামায়াতের আমির বলেন, “আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাবার আগে আরেকবার আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করব। আসলে আপনারা ব্যক্তিগতভাবে জাতির বিবেক আর আপনাদের হাউসগুলো দর্পণ। আমরা সমাজের এই দর্পণ এবং জাতির বিবেকের কাছে দেশ গড়ার অভিযাত্রায় জামায়াতে ইসলামী যেসব কর্মসূচি ঘোষণা করছে যা দেশ এবং জাতির কল্যাণে আমরা এই সবগুলোতে আপনাদেরও কাছে চাই। কারণ আপনারা এই সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন নন। আপনারা শুধু সাংবাদিক নন, আপনারা এই দেশের নাগরিকও বটে। অতএব, আমরা যারা নাগরিক অধিকারটা নিশ্চিত করে একটা মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চাই, এই ক্ষেত্রে আপনাদের ভূমিকা হবে অগ্রগণ্য, আমরা সেটা প্রত্যাশা রাখি। কারণ সাংবাদিকরা যখন জাতির কল্যাণে সিদ্ধান্ত নেন, জাতি তখন কল্যাণের পথ খুঁজে পায়।”
বিদেশ সফরের কথা তুলে ধরে শফিকুর রহমান বলেন, “আপনারা হয়ত জানেন গত মাসের ১৯ তারিখ আমি ওমরা করার উদ্দেশ্যে দেশ থেকে বের হয়েছিলাম। তিন দিনে ওমরা সম্পন্ন করার পর ২২ তারিখ সকাল ৯টায় আমেরিকার জেএফকে এয়ারপোর্টে আমি আল্লাহর মেহেরবাণীতে সেখানে পৌঁছাই এবং সেখানে ৮ দিনব্যাপী বিভিন্ন স্তরে সরকারি বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা এবং ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হই। খুব অল্প সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৪টি শহরে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেখা করার সুযোগ হয়েছে।”
“সেখান গুরুত্বপূর্ণ দুটি কথা দুটি মেসেজ তাদেরকে দিয়েছি। একটা হচ্ছে বাংলাদেশ আমাদের সকলের। দীর্ঘদিনের বঞ্চনা এবং নিষ্পেশন ও ফ্যাসিবাদী শাসনের পর বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে। মুক্তির এই সংগ্রামে দেশবাসীর সাথে প্রবাসে যারা ছিলেন, তারাও সমানতালে লড়াই করেছেন। তাদের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সেই অবদানের জন্য তাদের ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি। আর আমরা বলেছি, প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় অধিকার ভোটাধিকার এত দিন ছিল না। এ দাবি সবার আগে আমরা তুলেছিলাম। আমরা এ দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ সকল জায়গায় প্রবাসীদের হয়ে কথা বলেছি। আমরা সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই; এই প্রথমবারের মত ব্যাপক ভিত্তিক আমাদের প্রবাসীদেরকে ভোটার করার উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু সেখানে কিছু সমস্যা রয়ে গিয়েছে।”
ভোটার হওয়ার জন্য অক্টোবরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “এ জন্য যে সফটওয়ার ইনস্টল করা হয়েছে তা প্রোপারলি ফাংশন করে নাই, যার কারণে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও অনেকেই ভোটার হতে পারেননি। আমাদের দাবি থাকবে নির্বাচন কমিশনের কাছে কমপক্ষে আরও ১৫ দিন এই সময় বর্ধিত করা হোক এবং যে জটিলতাগুলো রয়েছে- এগুলো সহজ করে তাদেরকে ভোটার হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হোক। আরও কিছু সমস্যা আছে; কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা বলব একজন নাগরিকের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য তার ন্যাশনাল আইডি কার্ড যথেষ্ট। পাশাপাশি তার যদি একটা ভ্যালিড পাসপোর্ট থাকে-তাহলে আর কিছুরই প্রয়োজন হয় না। এর বাইরে যে সব শর্ত তা যেন শিথিল করে দেয়।”
তুরস্ক সফর সফল হয়েছে জানিয়ে দলটির আমির বলেন, “তুরস্কে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের আমার গুরুত্বপূর্ণ মিটিং হয়েছে। আর বাংলাদেশি যারা আছেন তাদের সঙ্গে আমার বসা হয়েছে, তাদের কথাও শোনার সুযোগ হয়েছে। আমি আসলে নিজের কোনো প্রয়োজনে দেশ থেকে বের হইনি। আমি বের হয়েছিলাম দেশ এবং জনগণের প্রয়োজনে। যেখানেই গিয়েছে জনগণের স্বার্থকে দেশের স্বার্থকে সামনে রেখেই কথা বলার চেষ্টা করেছি।”
তিনি বলেন, “দুনিয়ার সকলের সাথেই আমরা সম্মানজনক সম্পর্ক চাই। এই সম্পর্কটা হবে মিউচুয়াল রেসপেক্ট এবং ইকিউয়িটির ভিত্তিতে।”
সৌদি আরবে পবিত্র ওমরা পালন এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও তুরস্ক সফর শেষে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান মঙ্গলবার ভোরে ঢাকায় ফেরেন।
এ সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে দলের সিনিয়র নেতারা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
দলের নায়েবে আমির সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সাবেক সংসদ সংসদ সদস্য মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম ও এড. মোয়াযযম হোসাইন হেলালসহ কেন্দ্রীয় আরো অনেক নেতাকর্মী বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা