যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক আগামী সপ্তাহে লন্ডনে সফররত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।রবিবার (৮ জুন) ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানায়, এ বিষয়ে ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন টিউলিপ।

টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সুবিধা ভোগ করেছেন। তার খালা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সম্প্রতি মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য তার অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু হয়েছে। দুদক দাবি করেছে, টিউলিপ বা তার মা ‘ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাব খাটিয়ে’ অবৈধভাবে ৭ হাজার ২০০ বর্গফুটের একটি প্লট পেয়েছেন।

চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিক লিখেছেন, বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অভিযোগ এবং তা ঘিরে তৈরি হওয়া ‘ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করতেই তিনি এ বৈঠক চান।

আরো পড়ুন:

জানুয়ারির মধ্যে সরকার নির্বাচন দিতে পারত: সালাহউদ্দিন

প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণার পর যা বলল ইইউ

চিঠিতে টিউলিপ বলেন, 'লন্ডনে আপনার সফরকালে যদি সাক্ষাৎ হয়, তাহলে আমার খালার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নের বিষয়ে আমার বক্তব্য পরিষ্কার করার সুযোগ পাবো।'

তিনি আরো লিখেছেন, 'আমি লন্ডনে জন্মগ্রহণ করা একজন ব্রিটিশ নাগরিক। গত এক দশক ধরে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট থেকে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। বাংলাদেশের প্রতি আবেগ থাকলেও আমি সেখানে জন্মাইনি, বাস করি না, এমনকি কোনও ব্যবসায়িক স্বার্থও নেই।'

টিউলিপ অভিযোগ করেছেন, তার আইনজীবীরা লন্ডন থেকে দুদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো জবাব মেলেনি। বরং দুদক ঢাকা শহরের একটি ‘অজানা ঠিকানায়’ নথিপত্র পাঠাচ্ছে। তিনি বলেন, “এই তথাকথিত তদন্তের প্রতিটি ধাপ সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করা হচ্ছে, অথচ আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করা হয়নি।”

চিঠিতে টিউলিপ আরো উল্লেখ করেছেন, “আপনি নিশ্চয়ই অনুধাবন করতে পারবেন, এসব অভিযোগ কীভাবে আমার সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালনে এবং দেশের প্রতি আমার অঙ্গীকারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।”

উল্লেখযোগ্য, গত বছর যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী পর্যায়ের মানদণ্ড বিষয়ক উপদেষ্টা লরি ম্যাগনেস টিউলিপকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিলেও তিনি নিজে থেকেই পদত্যাগ করেন। তিনি বলেন, এই বিতর্ক লেবার পার্টি নেতা কেয়ার স্টারমারের সরকারের জন্য বিব্রতকর হয়ে উঠতে পারে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ড.

ইউনূস ৯ জুন লন্ডন সফরে যাচ্ছেন। সফরে তিনি রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ গ্রহণ করবেন। এছাড়া থিংক ট্যাংক চ্যাথাম হাউজে অংশগ্রহণ এবং প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকেরও কথা রয়েছে তার।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ ট উল প স দ দ ক কর ছ ন সরক র ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

স্ত্রীর জানাজায় অঝোরে কাঁদলেন কাদের সিদ্দিকী

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকীর প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার (৮ জুন) বাদ জোহর টাঙ্গাইল শহরের পিটিআই মাঠে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

নাসরিন সিদ্দিকী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। জানাজার আগ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কথা বলেন কাদের সিদ্দিকী। এসময় তিনি স্ত্রীর কথা স্মরণ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন কাদের সিদ্দিকীর ভাই ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খোকা বীর প্রতীক, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল, টাঙ্গাইল জেলা জামায়াত ইসলামীর আমির আহসান হাবীব মাসুদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এর আগে, সকালে নাসরিন সিদ্দিকীর মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি টাঙ্গাইলে কাদের সিদ্দিকীর ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকীর বাসায় পৌঁছায়। এসময় কাদের সিদ্দিকীর রাজনৈতিক সহকর্মী, সমর্থক, অনুসারী ও পরিবারের সদস্যরা নাসরিন সিদ্দিকীর মরদেহ এক নজর দেখতে বাসায় ভিড় করেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ছাতিহাটি গ্রামে বাদ আছর দ্বিতীয় জানাজার নামাজ শেষে নাসরিন সিদ্দিকীকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

গত ২২ মে নাসরিন সিদ্দিকীর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। প্রথমে তাকে ঢাকার নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে গত ২৩ মে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়।

শনিবার (৭ জুন) দিবাগত রাত ১১টায় নাসরিন সিদ্দিকী মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।

ঢাকা/কাওসার/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ