সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি আরও ১৭ সেন্টিমিটার কমেছে, বন্যার আশঙ্কা কেটেছে
Published: 8th, June 2025 GMT
সুনামগঞ্জে গত দুদিন বৃষ্টি হয়নি, নামেনি উজানের পাহাড়ি ঢল। তাই জেলার প্রধান নদী সুরমাসহ সব নদ-নদীর পানি কমছে। এতে আপাতত বন্যার আশঙ্কা কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা।
এদিকে, দুদিন ধরে কড়া রোদ থাকায় মানুষের মনে স্বস্তি ফিরেছে। তবে নদীতে পানি কমলেও হাওরে পানি স্থিতিশীল আছে।
পাউবোর তথ্যমতে, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর এলাকায় (যে স্থানে নদীর পানির উচ্চতা মাপা হয়) আজ রোববার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ৮৯ মিটার। একই স্থানে গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা ছিল ৭ দশমিক শূন্য ৬ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় পানি কমেছে আরও ১৭ সেন্টিমিটার। বর্ষা মৌসুমে এখানে সুরমা নদীর পানির বিপৎসীমা ৮ দশমিক ৮০ মিটার।
সুনামগঞ্জে গতকাল সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত কোনো বৃষ্টি হয়নি। এর আগের ২৪ ঘণ্টাও ছিল বৃষ্টিহীন। উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও গত দুদিন বৃষ্টি কম হয়েছে। এর ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
বৃষ্টি না হওয়ায় এবার ঈদুল আজহার নামাজ আদায়, কোরবানিসহ আনুষঙ্গিক কাজও স্বস্তিতে করতে পেরেছেন মানুষজন। গত বছরে ঈদুল আজহার সময় বন্যা ছিল। এর সঙ্গে ছিল বৃষ্টির ভোগান্তি। এবার সেই আশঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ঈদের বৃষ্টি না হওয়ায় সবাই খুশি।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা মফিজুর রহমান বলেন, সুরমা নদীর উত্তরপাড়ে সবজির আবাদ হয় বেশি। টানা বৃষ্টিতে তাঁদের অনেক সবজিখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছিল ভোগান্তি। এখন রোদে সবার মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
আরও পড়ুনসুনামগঞ্জে ঝকঝকে রোদে ঈদের সকাল শুরু, পানি কমেছে সুরমার০৭ জুন ২০২৫‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন’ সংগঠনের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক বলেন, হাওরে পানি আছে। তবে বৃষ্টি না হওয়ায় নদীতে পানি কমছে। মাঝখানে তো সবাই আতঙ্কে ছিলেন। এখন সেটা কেটেছে। মানুষ কোনো ভোগান্তি ছাড়া ঈদের আনুষ্ঠানিকতা সারতে পেরে খুশি।
সুনামগঞ্জে গত ২০ মে থেকে টানা বৃষ্টি হয়। শুরুতে হালকা ও মাঝারি হলেও পরে শুরু হয় ভারী বৃষ্টি। একই সঙ্গে সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও বৃষ্টি হয়। যে কারণে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামে। পানি বাড়তে থাকে নদী ও হাওরে। এতে মানুষের মনে আতঙ্ক দেখা দেয়। তাহিরপুরে পাহাড়ি ঢলে কিছু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেছেন, আপাতত বন্যার আশঙ্কা নেই। যেহেতু বৃষ্টি হচ্ছে না, তাই পানি আরও কমবে। মূলত ভারী বৃষ্টির সঙ্গে উজানের ঢল নামলেই পানি বাড়ে।
আরও পড়ুনসুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি ১১ সেন্টিমিটার কমেছে০৬ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ নদ র প ন আশঙ ক
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের ছুটিতে রাজশাহীতে কমল আমের দাম
ঈদের লম্বা ছুটিতে আম নামানো কমেছে চাষিদের। যারা নামিয়েছেন তারাও প্রত্যাশানুযায়ী দাম না পেয়ে হতাশ। রোববার প্রতি মণ আমে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা দরপতন হয়েছে।
এদিন বিকেলে বানেশ্বর আম হাটে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন চাষি ও ব্যবসায়ী আম বিক্রি করতে এসেছেন। তারা জানান, আম পেকে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা আম নামিয়ে বাজারে এনেছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, পরিবারের জরুরি টাকার প্রয়োজনে কিছু আম এনেছেন বিক্রি করতে। তবে ঈদের ছুটিতে পাইকারি ক্রেতা না থাকায় দরপতন হয়েছে।
চাষি আব্দুর রহিম দেড় মণ হিমসাগর আম এনেছেন বিক্রি করতে। তিনি বলেন, জরুরি টাকার প্রয়োজনে দেড় মণ হিমসাগর আম এনেছি। ঈদের আগে এই আম ১৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকা মণ ছিল। ঈদের পরদিন বিকেলে এই আমের দাম কমে ১২শ’ টাকা মণ। তাই বিক্রি না করে ভালো দামের অপেক্ষায় আছি।
হৃদয় নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, লক্ষণভোগ আম আগে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হতো। আজ ৪৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি। ক্রেতা না থাকায় এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সব আমই মণে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কমেছে।
আম ব্যবসায়ী সুমন বলেন, ঈদেরদিন ও আগের দিন হাটে কোনো আম উঠেনি। পরদিন অল্প কিছু আম উঠেছিল। এর দাম ভালো যায়নি। আসলে আম তো আর ঈদের ছুটি মানে না। গাছে আম পাকলে রাখা যায় না, পাখি নষ্ট করে। আবার পচে যায়। তাই কিছু আম চাষিরা এনেছেন।
হাটে পলক নামের একজন পাইকার ক্রেতা এসেছেন ময়মনসিংহ থেকে। তিনি বলেন, পাইকার নেই। আম খুবই কম উঠেছে। দামও কম। এই দামে আম কিনে বেশ লাভ হবে।
আমের আড়তদার নজরুল ইসলাম বলেন, এটা দীর্ঘমেয়াদি কোনো দরপতন নয়। ঈদের ছুটিতে সবাই নিজবাড়িতে ঈদ করছেন। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাড়ি ফিরে গেছেন। যারা আম খাবেন সেই ভোক্তারাও শহর ছেড়ে গ্রামে। কুরিয়ার বন্ধ। তাই সাময়িক দাম কমেছে। আশা করছি, দু’দিনের মধ্যেই দাম ঠিক হয়ে যাবে।
এদিকে ঈদের ছুটির কারণে ৫ থেকে ৮ জুন কুরিয়ার সার্ভিস বন্ধ। এ কারণে অনলাইন ব্যবসায়ীরাও আম কিনছেন না।