‘ভালোর সাথে আলোর পথে’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে অদম্য মেধাবী ও বন্ধু সমাবেশ। আজ সোমবার সকালে রায়গঞ্জ উপজেলা সদরের ধানগড়া এলাকায় ইউনিভার্স একাডেমি প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠান হয়। সকালে প্রচণ্ড রোদ ও গরমের মধ্যে অনুষ্ঠানস্থলে জড়ো হন প্রথম আলো রায়গঞ্জ বন্ধুসভার সদস্য ও অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষার্থীরা সবাই ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্টের শিক্ষা বৃত্তিপ্রাপ্ত।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বন্ধু সমাবেশ ও প্রীতি মিলনমেলা শুরু হয়। সঞ্চালনায় ছিলেন রায়গঞ্জ বন্ধুসভার সদস্য মহুয়া সাহা। সভাপতিত্ব করেন বন্ধুসভার সভাপতি মো.

আতিকুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে ধানগড়া উচ্চবিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি এবং শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মো. মাহমুদুল হক বলেন, ‘রায়গঞ্জ ও তাড়াশের অদম্য মেধাবীদের জন্য প্রথম আলো ট্রাস্ট নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেছে। এর সহায়তায় অনেক শিক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন।’

ধানগড়া মহিলা কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘রায়গঞ্জ বন্ধুসভার এমন আয়োজনে অংশ নিয়ে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি। এই মেধাবীরা পরিবার ও এলাকার গর্ব হবে।’

রাজশাহী সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটির প্রভাষক ইশরাত জাহান বলেন, ‘প্রথম আলো আমাকে শুধু পাঠ্যপুস্তকেই নয়, জীবনের নানা বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছে। রায়গঞ্জ বন্ধুসভা আমার পাশে ছিল, অনেক কিছু শিখিয়েছে। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কুড়মালি ভাষার লেখক উজ্জ্বল কুমার মাহাতো, শিক্ষক অমিতাভ সাহা, নার্স মারুফা খাতুন, প্রভাষক হাসান ইকবাল সোহাগ, অভিভাবক অরুণ কুমার মাহাতো, প্রথম আলোর রায়গঞ্জ প্রতিনিধি সাজেদুল আলম, শিক্ষক রাকিবুল হাসান, বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আলমগীর খানসহ অনেকে।

অদম্য মেধাবীদের পক্ষে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রায়হান আজাদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অলোক কুমার মাহাতো, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলক কুমার মাহাতো, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিথি সাহা ও নাফিছা নাহার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসরাত জাহান, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদিয়া ইসলাম, রাজশাহী কলেজের সাদিয়া আলম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে রাজশাহী সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটিতে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ইশরাত জাহান, সরকারি বিএসসি নার্স হিসেবে নির্বাচিত মারুফা খাতুন, স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া অন্তিম কুমার মাহাতো, মমতা খাতুন, মহুয়া সাহাসহ বন্ধুসভার সদস্য সানজিদ রেজা ও আশুতোষ কুমার মাহাতোকে সম্মাননা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে রায়গঞ্জ বন্ধুসভার সদস্য ও অর্ধশতাধিক অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী অংশ নেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অদম য ম ধ ব প রথম আল অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

তিনি হিমালয়ে উঠেছেন সাইকেল নিয়ে

বরফের ওপর সাইকেল নিয়ে সন্তর্পণে এগোচ্ছেন। একটু হড়কে গেলেই অবধারিত মৃত্যু, গিরিখাত বেয়ে একেবারে নিচে। কখনো সাইকেল চালিয়ে, কখনো কাঁধে নিয়ে হাঁটতে হচ্ছিল। এভারেস্ট অঞ্চলের কংমা লা পাস অতিক্রম করার সময় একটু ভয় ভয় লাগছিল। কারণ, এখানটায় এসে মৃত্যুর অনেক ঘটনা আছে। ট্রেইলটা বেশ কঠিন। ১০ কেজি ওজনের সাইকেল কাঁধে, আর ছয়–সাত কেজির ব্যাগ নিয়ে ওপরে উঠতে হচ্ছিল।

‘ভয়ের সঙ্গে আবার সুন্দর মুহূর্তও আছে। পাসগুলো থেকে নামার সময় ভালো লাগত। অপূর্ব সুন্দর সব দৃশ্য,’ বলছিলেন আরিফুর রহমান উজ্জল (৪১)। কুমিল্লার মানুষ, উজ্জল নামেই পরিচিত। গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে সাইকেল নিয়ে চষে বেড়িয়েছেন এভারেস্ট অঞ্চলসহ হিমালয়ের নানা ট্রেক। এসব ট্রেকে সাধারণত পর্বতারোহীরা পায়ে হেঁটে যান। উজ্জল গেছেন দ্বিচক্রযানে চেপে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় সর্বশেষ কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি প্রায় দুই মাসের অভিযান শেষ করে কাঠমান্ডুতে এসেছেন।

চ্যালেঞ্জিং এই অভিযানে ছিল কাদামাখা পাথুরে পথ, অতি উচ্চতা, অক্সিজেন স্বল্পতা, ভূমিধস, বরফে ঢাকা পথ, গ্লেসিয়ার ও একদম খাড়া টানা একেকবার ৩–৪ কিলোমিটার রাস্তা। অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে রাতে না ঘুমিয়ে পরদিন ট্রেক করতে হয়েছে। বরফ ও রৌদের তাপ, জ্বর, হাতে ফ্রস্টবাইট, পায়ে মাসাল ক্র্যাম্প, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে, বাতাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাঁকে একেকটা পাস অতিক্রম করতে হয়েছে। অনেক পর্বতারোহীর কাছে এটি স্রেফ পাগলামি। এই অভিযানে উজ্জলকে কখনো সাইকেল চালাতে হয়েছে, কখনো কাঁধে বইতে হয়েছে, কখনোবা ঠেলে উপরে তুলতে হয়েছে।

মানাসলু সার্কিট ট্রেইল

পর্বতারোহণ এমনিতেই কষ্টসাধ্য কাজ। নিজের শরীরটা ওপরে টেনে তোলাই যেখানে বিরাট চ্যালেঞ্জ, সেখানে উজ্জল সাইকেল নিয়ে এক অভিযানেই ঘুরেছেন এভারেস্টসহ হিমালয়ের তিনটি ট্রেইলে। তিনি ঘুরেছেন নেপালের মানাসলু ও অন্নপূর্ণা সার্কিট ট্রেইল। নেপালের পশ্চিমের এই দুটি ট্রেইলে ঘোরা শেষ করে পাড়ি দিয়েছেন ৭০০ কিলোমিটার পূর্বে এভারেস্টের তিন পাসে। পাস তিনটি হচ্ছে কংমা লা পাস, চো লা পাস এবং রেঞ্জো লা পাস।

৭ সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান শুরু করেন এই সাইক্লিস্ট। তার আগে ঢাকা থেকে বিমানে করে গেছেন কাঠমান্ডু। শুরুতেই মানাসলু সার্কিট ট্রেইল। এটা গিরিপথ, রাস্তা। মানাসলু পর্বতকে ঘিরে যে রাস্তা সেটাকে সার্কিট বলে। এই মানাসলুর সর্বোচ্চ বিন্দু, যার উচ্চতা ১৭ হাজার ৩৯০ ফুট। সেখানে নিজের প্রিয় দ্বিচক্রযানটির চাকার ছাপ রেখে এসেছেন। ১৭৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সার্কিট ট্রেইলটি শেষ করতে তাঁর ১১ দিন লেগেছে।

রেঞ্জো লা পাস

সম্পর্কিত নিবন্ধ