কোটালীপাড়া ১০০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অতর্কিত হামলায় আহত হয়েছেন এক চিকিৎসক। ঘটনার পরপরই হামলাকারী যুবককে আটক করা হয়। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন হাসপাতালের কর্মীরা। 

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জরুরি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগী ডা. অনুপম বাড়ৈ লিটুর ভাষ্য, ‘জরুরি বিভাগে আমার রুমে বসে রোগী দেখছিলাম। হঠাৎ একজন অপরিচিত লোক রুমের দরজা বন্ধ করে আমাকে মারধর করতে থাকে। আমার চিৎকারের শব্দ পেয়ে স্টাফরা দরজা ভেঙে আমাকে উদ্ধার করেন। শুনেছি, সোহেল হাওলাদার কয়েকদিন আগে তার গর্ভবতী স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন। আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে দেখা গেছে, হাসপাতালে আনার চারদিন আগেই ওই বাচ্চা মারা গেছে।’

হামলাকারী সোহেল হাওলাদার উপজেলার ফেরধরা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রী সাদিয়া খানমের ভাষ্য, ‘আমি অসুস্থ অবস্থায় ২৯ মে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। তখন সঠিক চিকিৎসার অভাবে আমার বাচ্চা মারা গেছে। এই কারণে আমার স্বামী সোহেল হাওলাদার ডাক্তারকে মারধর করতে পারেন।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.

কুমার মৃদুল দাস বলেন, কয়েক দিন আগে সোহেল হাওলাদার নাকি তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। তখন তিনি কাঙ্ক্ষিত সেবা পাননি– এই অভিযোগে জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. অনুপম বাড়ৈ লিটুকে রুমের দরজা বন্ধ করে পিটিয়েছেন। ডা. অনুপম বাড়ৈকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। সোহেল হাওলাদারের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডা. অনুপম বাড়ৈ লিটুকে মারধরের ঘটনায় সোহেল হাওলাদারকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

চিকিৎসককে মারধর করলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা

দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মশিউর রহমানকে মারধর ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. মামুনের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত অবস্থায় মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমানের উপর হামলা চালান মামুনসহ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল। 

মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমান বলেন, ‘‘হাসপাতালে ফারুক ও তার স্ত্রী ১২ থেকে ১৩ দিন ধরে ভর্তি আছেন। তাদের সব ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এখন তারা সুস্থ। তাদের আজকে রিলিজ দিতে চেয়েছি কিন্তু তারা রিলিজ নিতে চান না। এ বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার বাগবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে মামুনসহ ১০ থেকে ১২ জন এসে আমার উপর আক্রমণ করেন। মামুন আমার মুখে কিল-ঘুষি মারেন এবং সবাই আমার গলা চেপে ধরে বাহিরে নিয়ে যান। আমার মোবাইল ফোনও তারা কেড়ে নেন।’’ 

আরো পড়ুন:

অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা

সাভারে গ্যাস লিকেজ থেকে আগুন, দগ্ধ দম্পতি হাসপাতালে

হাকিমপুর পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মামুন বলেন, ‘‘ডা. মশিউর রহমান আমাকে ধাক্কা দেন। তখন এ ঘটনা ঘটে। তবে আমি তাকে মারিনি। আমার সঙ্গের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।’’ মশিউর রহমানের মোবাইল ফোন তখনি ফেরত দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।  

হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘‘হাসপাতালের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক। আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। অভিযুক্ত মামুনকে চিকিৎসকদের সামনে মারধর করেছি। বিষয়টি মিমাংসা করা হয়েছে।’’  

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেছি। তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।’’  

হাকিমপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘‘হাসপাতালের ঘটনা অবগত হয়েছি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’

দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডা. আসিফ ফেরদৌস বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে উপজেলা বিএনপির নেতারা হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় যাবো।’’
 

ঢাকা/মোসলেম/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চিকিৎসককে মারধর করলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা