মহাকাশে শক্তিশালী বিস্ফোরণের খোঁজ
Published: 11th, June 2025 GMT
বিগ ব্যাংয়ের পর থেকে মহাকাশে এখন পর্যন্ত খোঁজ পাওয়া সবচেয়ে শক্তিশালী বিস্ফোরণের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের দাবি, মহাকাশে চরম মাত্রার পারমাণবিক ক্ষণস্থায়ী মুহূর্ত (ইএনটি) আবিষ্কার করা হয়েছে। এই মহাজাগতিক বিস্ফোরণের মাধ্যমে ১০০টি সূর্যের সমতুল্য শক্তি নির্গত হতে পারে। সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে এই বিস্ফোরণের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মহাজাগতিক বিস্ফোরণের এই নতুন শ্রেণি চিহ্নিত করেছেন। একে চরম মাত্রার পারমাণবিক ক্ষণস্থায়ী মুহূর্ত বলা হচ্ছে। বিগ ব্যাংয়ের পর থেকে দেখা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘটনা হচ্ছে এই বিস্ফোরণ। এসব ঘটনা ঘটে যখন বিশাল নক্ষত্র দূরবর্তী ছায়াপথের কেন্দ্রে সুপার ম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বরের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসব নক্ষত্র আমাদের সূর্যের ভরের কমপক্ষে তিন গুণ বেশি থাকে।
এসব বিস্ফোরণ থেকে ১০০টি সূর্য তাদের সমগ্র জীবদ্দশায় যত শক্তি নির্গত করে, তার সমতুল্য শক্তি নির্গত হয়। বিশাল মহাজাগতিক দূরত্ব ধরে এই বিস্ফোরণের প্রমাণ দৃশ্যমান হয়। নতুন এই আবিষ্কার মহাবিশ্বে নক্ষত্র ও কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে গতিশীল মিথস্ক্রিয়া সম্পর্কে নতুন ধারণা প্রদান করবে।
বিজ্ঞানী হিংকল ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে নির্গত দীর্ঘস্থায়ী অগ্নিতরঙ্গ নিয়ে কাজের সময় ইএনটির প্রথম খোঁজ পান। এ বিষয়ে হিংকল বলেন, ‘আমরা এক দশকের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন নক্ষত্রকে ছিন্নভিন্ন হতে দেখেছি। অন্যদিকে ইএনটি বেশ ভিন্ন। এসব বিস্ফোরণ আমরা সাধারণত যা দেখি, তার চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি উজ্জ্বলতায় ঘটে। বছরের পর বছর ধরে এসব বিস্ফোরণের আলোকিত প্রমাণ থাকে। সবচেয়ে উজ্জ্বল পরিচিত সুপারনোভা বিস্ফোরণের চেয়ে বেশি শক্তি উৎপাদন করে।
গাইয়া১৮সিডিজে নামের ইএনটির তথ্য বিশ্লেষণের পর এসব তথ্য জানা গেছে। এটি পরিচিত সবচেয়ে বড় সুপারনোভার চেয়ে আশ্চর্যজনকভাবে ২৫ গুণ বেশি শক্তি নির্গমণ করেছে। সাধারণত বিভিন্ন সুপারনোভা মাত্র এক বছরে সূর্যের ১০ বিলিয়ন বছরের সমান শক্তি নির্গমণ করে। অন্যদিকে ইএনটি ১ বছরে ১০০টি সূর্যের সমান শক্তি বিকিরণ করে।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’