বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমতির সহ-সভাপতি মাওলানা হাবীব আহমেদ শিহাব বলেছেন, “সমাজের সবচেয়ে ভালো মানুষ হচ্ছেন ইমাম। মানুষকে অপরাধ নয়, কল্যাণের পথে ডাকেন তারা। সেই ইমামকে পিটিয়ে হত্যা করা জঘন্যতম অপরাধ। এই অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।” 

তিনি বলেন, “আসামি গ্রেপ্তার করা না হলে, সারা দেশের প্রায় ৯ লাখ ইমাম-মুয়াজ্জিনদের নিয়ে পুলিশ প্রধানের কাছে যাব। প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্র ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে গিয়ে বিচার চাইব। ন্যায়বিচারের জন্য চাপ প্রয়োগ করব। তবে, এই মুহূর্তে নয়। আগে দেখব, স্থানীয় প্রশাসন কি ধরণের ব্যবস্থা নিচ্ছে।”

আরো পড়ুন: জামায়াত নেতা কাউছার হত্যা মামলাটি রাজনৈতিক নয়: রেজাউল

গত বৃহস্পতিবার (৫ জুন) হামলায় মাওলানা কাউছার আহমেদ মিলন নিহত হন। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন ওলামা বিভাগের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন। তার বাড়ি একই ইউনিয়নের পূর্ব রাজিবপুর গ্রামে। তিনি সেখানকার একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন।

বুধবার (১১ জুন) দুপুরে পূর্ব রাজিবপুর গ্রামে নিহত মাওলানা কাউছার আহমেদ মিলনের বাড়িতে যান বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমতির নেতারা। সেখানে তারা নিহতের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে সমতির সহ-সভাপতি মাওলানা হাবীব আহমেদ শিহাব সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

আরো পড়ুন: স্বাভাবিক মৃত্যুকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা করবেন না

মাওলানা হাবীব বলেন, “অপরাধীদের কোনো দলীয় পরিচয় নেই। তাদের পরিচয়, তারা অপরাধী। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাব, কোনো সন্ত্রাসী বা অপরাধীকে যেন আশ্রয় না দেয়, তাদের জন্য যেন তদবির না করে ও প্রশাসনকে প্রভাবিত না করে। ইমাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারে তারা সহযোগিতা করবে। এমনটি প্রত্যাশা জাতীয় ইমাম সমিতির।”

তিনি আরো বলেন, “সামাজিক একটি ঘটনা নিয়ে একদল সন্ত্রাসীর হামলার শিকার হন হত্যাকাণ্ডের শিকার ইমামের ছোট ভাই। তখন তাকে রক্ষা করতে কাউছার আহমেদের ছেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলার শিকার হয়। খবরটি পেয়ে সন্তানকে বাঁচাতে ইমাম সাহেব সেখানে গিয়েছেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাকেও মারধর করে। সে ঘটনার কিছু সময় পর তিনি মারা যান। হামলাকারীরা একটি রাজনৈতিক দলের  কর্মী ও নেতা ছিলেন। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।”

আরো পড়ুন: বিএনপির ১২ নেতাকর্মীর নামে মামলা, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি 

জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মহি উদ্দিন বলেন, “মাওলানা কাউছার হামলার শিকার হয়ে মারা গেছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে হবে। প্রশাসনকে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। না হয় সারা দেশের ইমাম-মুয়াজ্জিনরা বসে থাকবে না। তারা প্রতিবাদ জানাবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। ইমাম-মুয়াজ্জিনদের আপনারা দুর্বল ভাববেন না। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে, জাতীয় ইমাম সমিতি মনে করে, এই হত্যাকাণ্ডের যথাযথ বিচার দেশের প্রশাসন করবে।” 

পরে জাতীয় ইমাম সমিতির সহ-সভাপতি মাওলানা হাবীব আহমেদ শিহাব, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মহি উদ্দিন, এহসান উদ্দিন ও জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা গিয়াস উদ্দিনসহ একটি টিম অতিরক্ত জেলা পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল হকের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। এ সময় সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ সভায় তারা হত্যার ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। পরে তারা লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন।

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ক ণ ড র জন ত ক আহম দ অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ