তারহীন মিথানল সেন্সর উদ্ভাবন, বাঁচাবে প্রাণ
Published: 12th, June 2025 GMT
অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা এমন মিথানল শ্বাসপরীক্ষক (ব্রেথালাইজার) উদ্ভাবন করেছেন, যা প্রতিবছর হাজারো বিষক্রিয়া প্রতিরোধ করতে পারে। তাঁদের তৈরি এ পরীক্ষামূলক ব্রেথালাইজার অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় বা কারও শ্বাসে ক্ষুদ্র মাত্রার বিষাক্ত মিথানল শনাক্ত করতে সক্ষম। বর্তমানে মিথানল শনাক্তের যেসব পদ্ধতি রয়েছে, সেগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই অঞ্চলে সহজলভ্য নয়, যেখানে মিথানল বিষক্রিয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে।
আন্তর্জাতিক চিকিৎসা-মানবিক সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের তথ্য অনুযায়ী, মিথানল বিষক্রিয়া একটি বড় সমস্যা, যা প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষকে প্রভাবিত করে এবং মৃত্যুর হার ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছায়।
মিথানল একটি শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত অ্যালকোহল, যা দেখতে এবং গন্ধে সাধারণ বিয়ার, ওয়াইন ও স্পিরিটসের মতো। কিন্তু অবৈধ মদ তৈরির সময় মিথানল যদি অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ে পাওয়া যায় তাহলে তা প্রাণঘাতী হতে পারে।
অ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা একটি তারহীন মিথানল সেন্সর তৈরি করেছেন, যা প্রায় এক বর্গসেন্টিমিটার আকারের। এটি অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ের বাষ্পে বা কারও শ্বাস থেকে খুব সহজেই বিষক্রিয়ার মাত্রার নিচে মিথানল শনাক্ত করতে সক্ষম।
গবেষণা–সংক্রান্ত নিবন্ধ আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি জার্নাল ‘সেন্সরস’–এ প্রকাশিত হয়েছে। এ সেন্সর তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং পরিবাহী পদার্থ গ্রাফিন।
অ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দুসান লোসিক বলেন, ‘আমাদের সেন্সর দেখাবে যে খুবই কম মাত্রায় মিথানল সহজেই শনাক্ত করা যায়।’ তিনি আরও বলেন, তাঁদের উদ্ভাবিত যন্ত্রটি বর্তমানে পরীক্ষামূলক বা একটি প্রোটোটাইপ আকারে রয়েছে। এটি এখনো বাণিজ্যিকভাবে উন্মুক্ত নয়। তবে এতে ব্যবহৃত উপকরণগুলো কম দামে পাওয়া যায় এবং তা সহজে অনেক তৈরি করা সম্ভব।
গবেষণা নিবন্ধে গবেষকেরা লিখেছেন, ‘শ্বাসনমুনা ও অ্যালকোহলজাত পণ্যে মিথানলের উপস্থিতি দ্রুত শনাক্ত করতে সক্ষম, সাশ্রয়ী ও বহনযোগ্য ডিভাইসের তীব্র চাহিদা রয়েছে, যা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী কিংবা সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য উপযোগী।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে
১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।
নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।
এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।