অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা এমন মিথানল শ্বাসপরীক্ষক (ব্রেথালাইজার) উদ্ভাবন করেছেন, যা প্রতিবছর হাজারো বিষক্রিয়া প্রতিরোধ করতে পারে। তাঁদের তৈরি এ পরীক্ষামূলক ব্রেথালাইজার অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় বা কারও শ্বাসে ক্ষুদ্র মাত্রার বিষাক্ত মিথানল শনাক্ত করতে সক্ষম। বর্তমানে মিথানল শনাক্তের যেসব পদ্ধতি রয়েছে, সেগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই অঞ্চলে সহজলভ্য নয়, যেখানে মিথানল বিষক্রিয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে।

আন্তর্জাতিক চিকিৎসা-মানবিক সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের তথ্য অনুযায়ী, মিথানল বিষক্রিয়া একটি বড় সমস্যা, যা প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষকে প্রভাবিত করে এবং মৃত্যুর হার ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছায়।

মিথানল একটি শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত অ্যালকোহল, যা দেখতে এবং গন্ধে সাধারণ বিয়ার, ওয়াইন ও স্পিরিটসের মতো। কিন্তু অবৈধ মদ তৈরির সময় মিথানল যদি অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ে পাওয়া যায় তাহলে তা প্রাণঘাতী হতে পারে।

অ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা একটি তারহীন মিথানল সেন্সর তৈরি করেছেন, যা প্রায় এক বর্গসেন্টিমিটার আকারের। এটি অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ের বাষ্পে বা কারও শ্বাস থেকে খুব সহজেই বিষক্রিয়ার মাত্রার নিচে মিথানল শনাক্ত করতে সক্ষম।

গবেষণা–সংক্রান্ত নিবন্ধ আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি জার্নাল ‘সেন্সরস’–এ প্রকাশিত হয়েছে। এ সেন্সর তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং পরিবাহী পদার্থ গ্রাফিন।

অ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দুসান লোসিক বলেন, ‘আমাদের সেন্সর দেখাবে যে খুবই কম মাত্রায় মিথানল সহজেই শনাক্ত করা যায়।’ তিনি আরও বলেন, তাঁদের উদ্ভাবিত যন্ত্রটি বর্তমানে পরীক্ষামূলক বা একটি প্রোটোটাইপ আকারে রয়েছে। এটি এখনো বাণিজ্যিকভাবে উন্মুক্ত নয়। তবে এতে ব্যবহৃত উপকরণগুলো কম দামে পাওয়া যায় এবং তা সহজে অনেক তৈরি করা সম্ভব।

গবেষণা নিবন্ধে গবেষকেরা লিখেছেন, ‘শ্বাসনমুনা ও অ্যালকোহলজাত পণ্যে মিথানলের উপস্থিতি দ্রুত শনাক্ত করতে সক্ষম, সাশ্রয়ী ও বহনযোগ্য ডিভাইসের তীব্র চাহিদা রয়েছে, যা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী কিংবা সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য উপযোগী।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অ য লক ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, নির্বাচনী আচরণবিধির সংশোধন চায় ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি দেন ছাত্রদলের নেতারা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আসন্ন জকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ। ন্যায্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতে আমাদের অনুরোধ, ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় প্রত্যেক ভোটারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনে অমোচনীয় কালি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং স্বচ্ছ, নাম্বারযুক্ত ব্যালট বক্স রাখা আবশ্যক।’

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যালট ছাপার সংখ্যা, ভোট প্রদানকারীর সংখ্যা এবং নষ্ট ব্যালটের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। মিডিয়া ট্রায়াল বা ভুল তথ্য প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে নির্বাচনকালীন সময়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ডাকসুর তফসিল ঘোষণার ৪১ দিন, চাকসুর ৪৪ দিন, রাকসুর ৮০ দিন এবং জাকসুর তফসিল ঘোষণার ৩১ দিন পর নির্বাচন হয়েছে। যেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এ ছাড়া বাকি চার বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিল ঘোষণার সময় ও নির্বাচনের মধ্যবর্তী পার্থক্য বিবেচনা করে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, এজন্য ছাত্রদল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ