সবাই জীবনে কোনো না কোনো সময় মেরুদণ্ড বা কোমর ব্যথায় ভুগে থাকেন। এই ব্যথা বিভিন্ন কারণে হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ হলো পেশি ও হাড়সংশ্লিষ্ট ব্যথা, ফাইব্রোমায়ালজিয়া, অস্ট্রিওআর্থ্রাইটিস, স্পন্ডাইলোডিসকাইটিস, স্পন্ডাইলোসিস, অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডাইলাইটিস ইত্যাদি।
পিএলআইডি শব্দটাও অনেকের কাছে পরিচিত। এর মানে হলো প্রলাপসড লাম্বার ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্ক। এই রোগ হলে দুটি কশেরুকার মধ্যে থাকা কোমরের নরম অংশ (ডিস্ক) বের হয়ে বাইরের দিকে চলে আসে। ডিস্কের বাইরের দিকে অ্যানুলাস ফাইব্রোসাস নামে শক্ত আবরণ থাকে, যা আঘাতে বা ক্ষয় হয়ে ছিঁড়ে গিয়ে ভেতরের নরম জেলির মতো অংশ বের হয়। সেই বের হওয়া অংশ নার্ভের রুটকে চাপ দেয়। ফলে কোমরে প্রচণ্ড ব্যথা হয় এবং সেই ব্যথা ধীরে ধীরে পায়ে ছড়িয়ে পড়ে। একে অনেক সময় সায়াটিক পেইনও বলে। সাধারণত লাম্বার ৪ ও ৫ নম্বর কশেরুকায় এটি ঘটে থাকে।
কীভাবে বুঝবেন
ব্যথা সাধারণত কোমর, ঊরু, কাফ মাসলের পেছন দিয়ে পায়ের বুড়ো আঙুল বা ছোট আঙুল পর্যন্ত চলে আসে। কাশি-হাঁচি দিলেই প্রস্রাব-পায়খানা বের হয়ে আসতে পারে। কোনো জিনিস তুলতে গেলে ব্যথা বাড়ে। ডিস্ক প্রলাপস গুরুতর হলে প্রস্রাব, পায়খানা, সেক্সের নার্ভ ড্যামেজ হয়ে যায় বা প্যারালাইসিস হয়। এই অবস্থাকে বলে কৌডা ইকুইন সিনড্রোম। এটা হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অস্ত্রোপচার করতে হয়, নাহলে রোগের উন্নতি হয় না।
কী করবেন
কোমর ব্যথার যথাযথ চিকিৎসা রয়েছে। কিছু উপায় অবলম্বন করলে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যথা কমে যেতে পারে। কিছুদিন পরিপূর্ণ বিশ্রাম করা, কিছু ব্যায়াম, শক্ত বিছানায় ঘুমানো, নিচু হয়ে ভারী কিছু না তোলা ও ভারী কাজ না করা, পাতলা বালিশে ঘুমানো, বিছানা থেকে ওঠার সময় কাত হয়ে ওঠা, অতিরিক্ত ভ্রমণ পরিহার, মোটরসাইকেল না চালানোর মতো কিছু বিষয় অনুসরণ করা উচিত। পাশাপাশি ওজন কমাতে হবে। এ ছাড়া পিএলআইডি-সংক্রান্ত কোমর ব্যথায় ১০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করতে হয়। আধুনিক পদ্ধতিতে এখন মাইক্রোসার্জারি করানো যায়। আমাদের দেশেই এর উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থা রয়েছে।
অধ্যাপক ডা.
হারাধন দেবনাথ, নিউরোসার্জারি বিভাগ, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, নির্বাচনী আচরণবিধির সংশোধন চায় ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি দেন ছাত্রদলের নেতারা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আসন্ন জকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ। ন্যায্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতে আমাদের অনুরোধ, ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় প্রত্যেক ভোটারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনে অমোচনীয় কালি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং স্বচ্ছ, নাম্বারযুক্ত ব্যালট বক্স রাখা আবশ্যক।’
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যালট ছাপার সংখ্যা, ভোট প্রদানকারীর সংখ্যা এবং নষ্ট ব্যালটের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। মিডিয়া ট্রায়াল বা ভুল তথ্য প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে নির্বাচনকালীন সময়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ডাকসুর তফসিল ঘোষণার ৪১ দিন, চাকসুর ৪৪ দিন, রাকসুর ৮০ দিন এবং জাকসুর তফসিল ঘোষণার ৩১ দিন পর নির্বাচন হয়েছে। যেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এ ছাড়া বাকি চার বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিল ঘোষণার সময় ও নির্বাচনের মধ্যবর্তী পার্থক্য বিবেচনা করে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, এজন্য ছাত্রদল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে।’