আকাশ পথে বিশ্বের এক দেশ থেকে অন্য দেশে, এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছানোর দ্রুততম মাধ্যম হচ্ছে উড়োজাহাজ। এই যানবাহনে চলাচলকেও সবচেয়ে নিরাপদও মনে করা হয়। তারপরেও উড়োজাহাজও মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। আগুন লেগে দুর্ঘটনা, খারাপ আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা, জঙ্গির ছুড়ে দেওয়া গুলিতে বিদ্ধস্ত হওয়ার মতো ঘটনাগুলো ঘটে। উড়োহাজার দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে আরোহীদের বেশিরভাগের মৃত্যু হয়। বিশ্বের আলোচিত ১০টি ভয়ংকর উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরা হলো। 

১.

টেনেরিফ দুর্ঘটনা: ১৯৭৭ সালের ২৭ মার্চ তারিখে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ওই দুর্ঘটনা স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের টেনেরিফ বিমানবন্দরে ঘটে। নির্দেশনা নিয়ে বিভ্রান্তি এবং রেডিও যোগাযোগে বিঘ্ন হওয়ায় এই দুর্ঘটনা  ঘটেছিল বলে জানা যায়।ওই দিন বেশ কুয়াশা ছিল। এ কারণে রানওয়েতে ডেনমার্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন দুটি বোয়িং উড়োজাহাজের সংঘর্ষ হয়। এর ফলে ৫৮৩ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। তবে প্রাণে বেঁচে যান ৬১ জন।

২. জাপান: ১৯৮৫ সালের ১২ আগস্ট বিশ্বের ইতিহাসে আরেকটি ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনা ঘটে জাপানের ইউয়েনো এলাকায়। যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে গিরিখাতে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। এতে এতে মারা যান ৫২০ জন। মাত্র চারজন জীবিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

মিনিটে ৪০০ ফুট গতিতে নীচে নামছিল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান

ভারতে বিমান দুর্ঘটনায় তারেক রহমানের সমবেদনা

৩. দিল্লি: ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর তারিখে ভারতের দিল্লির কাছে ঘটে আরেকটি উড়োহাজ দুর্ঘটনা। ওই দুর্ঘটনা ঘটেছিল হরিয়ানা রাজ্যের চরকি দাদড়ি এলাকায় মাঝ–আকাশে। সেদিন সৌদি এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজের সঙ্গে কাজাখস্তান এয়ারলাইনসের আরেকটি উড়োজাহাজের মধ্য আকাশে সংঘর্ষ হয়। মারা যান ৩৪৯ জন। এ ঘটনা ঘটে নির্দেশনা লঙ্ঘন করার কারণে।

৪. প্যারিস: ১৯৭৪ সালের ৩ মার্চ তারিখে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের বাইরের একটি এলাকায় আরেকটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায়  টার্কিশ ডিসি–১০ উড়োজাহাজের পেছনের কার্গো এলাকার দরজা ভেঙে পড়ে। এর ফলে ৩৪৬ আরোহীর সবাই মারা যান। ওই দুর্ঘটনার পরে উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান তাদের কার্গোর নকশায় পরিবর্তন আনে।

৫. এয়ার ইন্ডিয়া:  আটলান্টিক মহাসাগরের আয়ারল্যান্ড উপকূলে ১৯৮৫ সালের ২৩ জুন তারিখে এয়ার ইন্ডিয়া বিদ্ধস্ত হয়।  শিখ জঙ্গিদের বোমায় উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। ওই দুর্ঘটনায় মারা যান উড়োজাহাজের ৩২৯ আরোহীর সবাই। তাদের মধ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক ছিলেন ২৬৮।

৬. সৌদিয়া ফ্লাইট ১৬৩:  ১৯৮০ সালের ১৯ আগস্টে পাকিস্তানের করাচি বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের রিয়াদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে জেদ্দায় যাচ্ছিল উড়োজাহাজটি। পথিমধ্যে রিয়াদে উড্ডয়নের পরই উড়োজাহাজটিতে আগুন লাগে। ওই দুর্ঘটনায় মারা যান ৩০১ আরোহীর সবাই।

৭. ইরান এয়ার: দিনটি ১৯৮৮ সালের ৩ জুলাই, পারস্য উপসাগরের আকাশে ইরান এয়ারের একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ গুলি করে ভূপাতিত করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই দুর্ঘটনায় মারা যান ২৯০ আরোহীর সবাই। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছিল, ভুল করে ওই গুলি করা হয়।

৮. ইরানের ইলিউশিন বিমান: ২০০৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারিতে ইরানের কেরমান এলাকায় খারাপ আবহাওয়ার কারণে বিধ্বস্ত হয় প্রভাবশালী বিপ্লবী গার্ড সদস্যদের বহনকারী উড়োজাহাজটি। এতে মৃত্যু হয় ২৭৫ আরোহীর।

৯. আমেরিকান এয়ারলাইনস: ১৯৭৯ সালের ২৫ মে তারিখে শিকাগো অঞ্চলে আমেরিকান এয়ারলাইনস-এর বাম পাখা থেকে একটি ইঞ্জিন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিধ্বস্ত হয় উড়োজাহাজটি। এতে মারা যান ২৭৩ আরোহীর সবাই।

১০. কোরিয়ান এয়ারলাইনস: ১৯৮৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর তারিখে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের মনোরন দ্বীপ অঞ্চলে দুর্ঘটনাটি ঘটে। সোভিয়েত বাহিনী গুলি করে ভূপাতিত করে কোরিয়ান এয়ারলাইনসটি। যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটিতে থাকা ২৬৯ আরোহীই মৃত্যুবরণ করেন।

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ম ন ব ধ বস ত দ র ঘটন য় দ র ঘটন র হ র সব ই এল ক য় জ হ জট

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত নেতার অনুসারীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীরা। আজ সোমবার রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর রেলগেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

সেখানে বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভের পাশাপাশি প্রতিবাদ মিছিলও করেন। এ ছাড়া সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষীপুর এলাকাতেও সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।

বিক্ষোভকারী নেতা-কর্মীদের দাবি, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সোহরাব উদ্দিনকে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।

এর আগে সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার।

এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।

জানতে চাইলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হাসেন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণ করেছি।’

কুষ্টিয়ার অন্য তিনটি সংসদীয় আসনে বিএনপির প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ