গায়েহলুদের অনুষ্ঠানে উত্ত্যক্তের অভিযোগ, সালিসে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ
Published: 13th, June 2025 GMT
মাদারীপুর সদরে বিয়ের হলুদের অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে গান বাজানো ও নাচের সময় নারীদের উত্ত্যক্তের অভিযোগকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের সুচিয়ার ভাঙ্গা ও উত্তর খাগছাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে অন্তত ১৫টি দোকান ও বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আটজনের নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন সুচিয়া ভাঙ্গা গ্রামের আলামিন সন্ন্যামাত (১৮), জামাল ঢালী (২১), অলিল ঢালী (২৫), শাহ আলম সন্ন্যামাত (৩০); উত্তর খাগছাড়া গ্রামের রেজাউল চৌকিদার (৪৫), কাওসার তালুকদার (২৬), কামাল হোসেন (২৮) ও সাব্বির শিকদার (২০)। তাঁদের মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাতে উত্তর খাগছাড়া গ্রামের কাওসার তালুকদারের মেয়ের গায়েহলুদের অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে গান বাজানো হচ্ছিল। পার্শ্ববর্তী সুচিয়ার ভাঙ্গা ও উত্তর খাগছাড়া গ্রামের কয়েক কিশোর একসঙ্গে উচ্চ শব্দে বাজানো গানে নাচ করছিল। এ সময় হলুদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ ওঠে ওই দুই গ্রামের কিশোরদের মধ্যে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পরদিন গতকাল বিকেলে দুই পক্ষের লোকজন ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি মীমাংসার জন্য উত্তর খাগছাড়া নতুন বাজার এলাকায় বৈঠকে বসেন। বৈঠক চলাকালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে এবং এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয় অন্তত ১৫টি দোকান ও বাড়িঘরে।
সুচিয়ার ভাঙ্গা গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সাগর ব্যাপারী বলেন, ‘আমাদের গ্রামের কিশোররা শুধু নাচ করছিল। অথচ তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে সালিসে উত্তেজনা ছড়ানো হয়। পরে হাকিম কাজীর নেতৃত্বে উত্তর খাগছাড়া গ্রামের লোকজন আমাদের গ্রামে হামলা চালায়।’
অন্যদিকে উত্তর খাগছাড়া গ্রামের হাকিম কাজী বলেন, ‘বিয়ের অনুষ্ঠানে আমাদের গ্রামের মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে পাশের গ্রামের ছেলেরা। সালিসে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছিল, কিন্তু উল্টো সাগর মেম্বারের লোকজন উত্তেজিত হয়ে আমাদের গ্রামে হামলা চালায়।’
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র গ র ম স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ–লাগোয়া ধুবড়িতে ‘দুষ্কৃতকারীদের’ দেখামাত্র গুলির নির্দেশ আসামের মুখ্যমন্ত্রীর
বাংলাদেশ–লাগোয়া পশ্চিম আসামের ধুবড়ি জেলায় ‘দুষ্কৃতকারীদের’ দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি বলেছেন, ধুবড়ি জেলায় রাতে দেখামাত্র গুলি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারাই পাথর ছুড়বে, তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হবে।
ধুবড়ি জেলায় একটি হনুমান মন্দিরের কাছে গত রোববার প্রাণীর দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল। এ নিয়ে সেখানে বেশ উত্তেজনা দেখা দেয়। জনতা ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার পর্যন্ত পুলিশ ২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পরিস্থিতি দেখতে গতকাল শুক্রবার ধুবড়ি জেলায় যান মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বশর্মা।
এর আগে আসামের মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘ধুবড়িতে একটি বিশেষ গোষ্ঠী মন্দিরের ক্ষতি করতে চাইছে। সেই লক্ষ্যে তারা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।’
শুক্রবার ধুবড়ি সফর শেষে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আসামের রাজধানী গৌহাটিতে পৌঁছে দুষ্কৃতকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেবেন।
মন্দিরে মাংস রাখার ঘটনাকে ‘বিদেশি চক্রের ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করে বিশ্বশর্মা দাবি করেন, ঈদের আগের দিন, ‘নবীন বাংলা’ নামে একটি দল ধুবড়িকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে পোস্টার লাগিয়েছে। একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ধুবড়িতে অশান্তি সৃষ্টি করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
বিজেপিদলীয় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জেলায় র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স ও আধা–সামরিক বাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং যেসব অপরাধীর নামে জামিন অযোগ্য পরোয়ানা রয়েছে, তাঁদের গ্রেপ্তার করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হিন্দুত্ববাদী আসামের মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, পশ্চিমবঙ্গের চক্রও আসামে সক্রিয় হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বকরি ঈদের সময় কিছু লোক গরুর মাংস খায়। এবার পশ্চিমবঙ্গ থেকে হাজার হাজার গবাদিপশু আনা হয়েছে। ধুবড়িতে একটি “গরুর মাফিয়া চক্র” গড়ে উঠেছে। এরা উৎসবের ঠিক আগে হাজার হাজার পশু সংগ্রহ করেছে।’
কথিত এই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্বশর্মা।
এই হিন্দুত্ববাদী মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী বছর ঈদের দিন আমি ধুবড়ি আসব ও পরদিনও থাকব। আমরা সম্প্রদায়ের একটি অংশকে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অনুমতি দিতে পারি না।’
আসামের বিধানসভা নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। নির্বাচনের বাকি ৯ থেকে ১০ মাস। আসামে নির্বাচনের আগে বিষয়টিকে একটি ইস্যু হিসেবে দেখছে সব পক্ষই।
কিছু বিরোধী রাজনৈতিক নেতা অভিযোগ করেছেন, বিজেপি নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে প্রায় এক বছর আগে থেকে নির্দিষ্টভাবে ধর্মীয় মেরুকরণের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে।