ছয় বছর ধরে এক ব্যক্তি নিজেকে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট পরিচয় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত পাঁচটি এয়ারলাইনসে ১২০টির বেশি ফ্রি ফ্লাইটে চড়েছেন। ৩৫ বছর বয়সী ফ্লোরিডার বাসিন্দা টিরন আলেকজান্ডার ২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

আদালতের নথি অনুযায়ী, টিরন আমেরিকান এয়ারলাইনস, স্পিরিট, ইউনাইটেড, ডেলটা ও সাউথওয়েস্টের মতো বড় বড় সংস্থায় নিজেকে কর্মী পরিচয় দিয়ে বিনা খরচে যাতায়াত করেছেন।

ক্রুদের জন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইটে ঢুকে নিজেকে কর্মী পরিচয় দিয়ে বিনা ভাড়ায় ফ্লাইট বুক করতেন টিরন। এই সুবিধা মূলত বৈধ ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ও পাইলটদের জন্য বরাদ্দ। আলেক্সান্ডার ২০১৫ সালে একটি ছোট এয়ারলাইনে গ্রাউন্ড স্টাফ (বিমানের বাইরে কাজ করা কর্মী) হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু তিনি কখনো কোনো বিমানে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট বা পাইলট হিসেবে কাজ করেননি। কিন্তু তিনি অন্তত ৩০টি ভুয়া ব্যাজ নম্বর ও ভুয়া নিয়োগ তারিখ ব্যবহার করে নিজেকে প্রকৃত কর্মী হিসেবে দেখাতে সক্ষম হন।

আদালতের শুনানিতে জানা যায়, টিরন কেবল একটি এয়ারলাইনসের মাধ্যমে ৩৪টি ফ্লাইটে চড়েছেন। প্রতিবারই তিনি নিজেকে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় দেখিয়ে নতুন করে বিনা মূল্যের টিকিট জোগাড় করেছেন। তদন্তে উঠে আসে, একেক ফ্লাইট বুক করার সময় তিনি আলাদা করে নতুন ব্যাজ নম্বর ব্যবহার করতেন এবং এমনভাবে তারিখ নির্ধারণ করতেন, যাতে কর্তৃপক্ষের সন্দেহ না হয়।

প্রতিবারই টিরন পরিবহন নিরাপত্তা প্রশাসনের (টিএসএ) আইডি যাচাই ও দেহ তল্লাশির সব নিয়ম মেনেই উড়োজাহাজে উঠতেন। ফলে নিরাপত্তাঝুঁকি না থাকলেও বিষয়টি ছিল সুস্পষ্ট প্রতারণা। তবে টিএসএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আলেক্সান্ডার কখনোই নিরাপত্তা হুমকি ছিলেন না। কারণ, তিনি প্রতিবারই নিয়ম মেনে তল্লাশি পার হয়েছিলেন।

ফেডারেল জুরি টিরনকে ওয়্যার ফ্রড (ইলেকট্রনিক যোগাযোগ ব্যবহার করে কাউকে ঠকানো) ও মিথ্যা পরিচয়ে বিমানবন্দরের সুরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। এই অভিযোগে তাঁর সর্বোচ্চ ৩০ বছর কারাদণ্ড ও আড়াই লাখ ডলার জরিমানা হতে পারে। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে তিন বছরের পর্যবেক্ষণমূলক মুক্তির আদেশও দেওয়া হতে পারে।

এ ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থায় একটুখানি ফাঁক থাকলেই বড় ধরনের প্রতারণা সম্ভব। শুধু প্রযুক্তির ওপর ভরসা করলেই হবে না—কর্মী যাচাই ও অনুমতির ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী ও মানবিক তদারকি এখন সময়ের দাবি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ল ইট

এছাড়াও পড়ুন:

মনোনয়ন দৌড়ে এবারও হেরে গেলেন মনির খান

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মনির খান— যার কণ্ঠে প্রেম, ব্যথা আর প্রার্থনার সুরে ভেসেছে একটি প্রজন্ম। তিনবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই শিল্পী শুধু গানে নয়, রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মনির খান। ঝিনাইদহ-৩ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন এই কণ্ঠশিল্পী। কিন্তু শেষপর্যন্ত প্রার্থী তালিকায় জায়গা হয়নি তার। সেই আসনে দল মনোনয়ন দিয়েছে মেহেদী হাসান রনিকে।

আরো পড়ুন:

নির্বাচন: বিএনপির যে প্রার্থীদের সঙ্গে লড়বেন এনসিপির শীর্ষ নেতারা

বিএনপির প্রার্থী তালিকায় নেই তারকারা

মনোনয়ন না পেলেও মনির খান প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ইতিবাচকভাবে। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লেখেন, “অভিনন্দন মেহেদী হাসান রনি, ঝিনাইদহ-৩-এ বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী। শুভকামনা রইল।”

শিল্পীর এই পোস্টে প্রশংসা করেছেন ভক্তরা। রাজনীতিতেও তার সংযম ও সৌজন্যতা তুলে ধরেছেন অনেকেই।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারকাদের মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে গুঞ্জন থাকলেও শেষপর্যন্ত বিএনপির ঘোষিত ২৩৭ আসনের প্রার্থী তালিকায় কোনো শিল্পী বা অভিনেতার নাম নেই। মনির খানের পাশাপাশি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে বেশি আলোচিত ছিলেন নায়ক উজ্জ্বল ও হেলাল খান, কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা ও বেবী নাজনীন।

ঢাকা/রাহাত/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ