‘যাদের জন্য শিল্পীজীবন বেছে নেওয়া, তাদের প্রত্যাশা পূরণের দায়ও নিজের ওপর বর্তায়’
Published: 14th, June 2025 GMT
আবারও মঞ্চে পা রাখতে যাচ্ছেন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। চাইছেন গানের ভুবনে স্বরূপে ফিরতে। উদ্দেশ্য একটাই, যারা দিনের পর দিন প্রহর গুনে যাচ্ছেন তার অনিন্দ্য কণ্ঠে গাওয়া বিভিন্ন দশকের সাড়া জাগানো গান শোনার, সেসব ভক্ত-অনুরাগীদের গানে গানে তৃষ্ণা মেটানো।
আগামী ২২ জুন কানাডার ড্যানফোর্ড অ্যাভিনিউর ডাকরিজ পার্কে পারফর্ম করবেন তিনি। ‘কুমার বিশ্বজিৎ লাইভ ইন কনসার্ট’ শিরোনামে এ আয়োজন করছে কানাডার জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টো।
অসংখ্য সাড়া জাগানো গানের শিল্পী ও স্রষ্টা কুমার বিশ্বজিৎ জানান, কানাডায় শো করার পরই তিনি ছুটে যাবেন ওশেনিয়া অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দেশ অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে ‘লিজেন্ড আনলিস্ট’ শিরোনামে আয়োজিত ধারাবাহিক কনসার্টে অংশ নেবেন তিনি। ২৩ আগস্ট তিনি পারফর্ম করবেন অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের মেলবোর্ন শহরে। এরপর ধারাবাহিকভাবে নিউ সাউথ ওয়েলসের জমকালো শহর সিডনিতে কনসার্ট করবেন ৩০ আগস্ট। পরদিনই শো করবেন কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের ব্রিসবেন। সিডনি ও ব্রিসবেনের শো দুটিতে আভাস ব্যান্ডের তারকাশিল্পী তানযীর তুহীনের পারফর্ম করার কথা রয়েছে। উপস্থাপক হিসেবে থাকবেন দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা মাজনুন মিজান। সবশেষে ৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পার্থে কনসার্ট করার মধ্য দিয়ে ইতি টানবেন বলেও জানিয়েছেন এই শিল্পী।
এদিকে ধারাবাহিক কনসার্টের মধ্য দিয়ে কুমার বিশ্বজিতের গানে ফেরা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে চলেছেন ভক্ত-অনুরাগীরা। গত কয়েক দশক ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম যার অনিন্দ্য কণ্ঠ আর অনবদ্য গায়কীতে বুঁদ হয়ে আছেন, তাঁকে নীরব হয়ে যাওয়া মেনে নিতে পারেননি অনেকেই। বিশ্বজিৎ সে কথা বুঝতে পেরেছেন বলেই হয়তো ফিরে আসছেন শ্রোতাদের কাছে। যদিও ভয়াবহ ও বিষাদী অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়ার কারণেই গান থেকে নিজেকে দূরে সরেছিলেন ভার্সেটাইল এই শিল্পী। প্রায় আড়াই বছর বুকে পাথর চেপে একেকটি মুহূর্ত পার করছেন কুমার বিশ্বজিৎ।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে কানাডায় ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন কুমার নিবিড়। সেই থেকে এখনও সেখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের আত্মজ। যাকে নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় কাটছে শিল্পীর একেকটি দিন। একমাত্র সন্তানের সুস্থতা কামনায় প্রহর গুনে চলেছেন তিনি। 
 আশার কথা হলো, কুমার নিবিড় এখন কিছুটা শঙ্কামুক্ত। সে কারণেই এবার শ্রোতাদের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক জুড়ে নিতে চাইছেন। তাদের গানের পিপাসা মেটাতে মঞ্চ থেকে মঞ্চে ছুটে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। 
বিশ্বজিতের কথায়, ‘যাদের জন্য শিল্পীজীবন বেছে নেওয়া, তাদের প্রত্যাশা পূরণের দায়ও নিজের ওপর বর্তায়। তাই জীবনকে ঘিরে ঘটনাবহুল অধ্যায় রচিত হওয়ার পরও তাদের আহ্বানে সাড়া না দিতেই হয়। দর্শক-শ্রোতার শিল্পীজীবনের চালিকাশক্তি; তাদের ভালো লাগা, মন্দ লাগা আর প্রত্যাশা পূরণের মধ্য দিয়ে এতটা পথ পাড়ি দেওয়া। তাই মনে করি, মৃত্যুর পরও আমার গান যদি শ্রোতাদের মাঝে বেঁচে থাকে, সেটিই হবে বড় প্রাপ্তি। হয়তো আমিও এমন করেই বেঁচে থাকব আমার গান দিয়ে, পৃথিবীতে ভ্রমণের সার্থকতা আমার হয়তো সেখানেই।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হস্তক্ষেপ নয়, পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতায় বিশ্বাসী টিম ডিরেক্টর রাজ্জা
সংবাদ সম্মেলন তখন শেষ। আব্দুর রাজ্জাককে মনে করিয়ে দেওয়া হলো, ‘‘বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর কিন্তু টসেও ইনপুট দিতেন। আপনি কি…?’’ রাজ্জাক মুখে হাসি আটকে রাখেন। এই পদে আসন্ন আয়ারল্যান্ড সিরিজে দায়িত্ব পাওয়া রাজ্জাক স্রেফ এতোটুকুই বলতে পারেন, ‘‘আমাদের থেকে এমন কিছু কখনোই দেখতে পারবেন না। আমরা নতুন কিছু নিয়ে ভাববো।’’
জাতীয় দলকে নিয়ে সেই ভাবনা থেকেই আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বোর্ড একজনকে টিম ডিরেক্টর নিয়োগ দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ের জাতীয় পুরুষ দলের ব্যর্থতার কারণে আলোচনা হচ্ছিল, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ওপরে একটি ছায়া বিভাগ থাকবে যারা সরাসরি জাতীয় দল পর্যবেক্ষণ করবে।
সেই ছায়া বিভাগে সাবেক ক্রিকেটাররাই থাকবেন। প্রথম টিম ডিরেক্টর হিসেবে রাজ্জাক পেলেন দায়িত্ব। কেন টিম ডিরেক্টর নিয়োগ দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব হলো সেই প্রশ্ন করা হয় তাকে। নাজমুল হাসান বোর্ড সভাপতির দায়িত্বে থাকার সময় টিম ডিরেক্টর পদটি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। সাবেক অধিনায়ক ও বোর্ড পরিচালক খালেদ মাহমুদ এই দায়িত্ব পালন করেছেন বিশ্বকাপসহ বেশ কয়েকটি সিরিজে। দলের সঙ্গে গভীরভাবে মিশে যেতেন তিনি। টস থেকে শুরু করে টিম মিটিংয়ে দিতেন ইনপুট। যা নিয়ে পরবর্তীতে অভিযোগ করেছিলেন কোচ ও অধিনায়ক।
তবে রাজ্জাক নিজের কাজ, পরিধি এবং দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন বলেই নিশ্চিত করলেন,"অন্যান্য যে কোনো টিম ডিরেক্টরের মতোই হবে আমার কাজ। আমি সব কিছু পর্যবেক্ষণ করব, সব কিছুতে নজর রাখব। আর কখনও যদি টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করে আমার কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন, তাহলে সেটিও দেওয়ার চেষ্টা করব। তাদের সাহায্য প্রয়োজন হলে আমি করব।"
"ক্রিকেট বোর্ডের মনে হয়েছে, দলের সঙ্গে একজন টিম ডিরেক্টর থাকলে ভালো হবে। এই পদটি কিন্তু আগেও ছিল। অনেক দিন ধরেই ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে বোর্ড পরিচালকের সংখ্যা কম থাকায় হয়তো দলের সঙ্গে কেউ যায়নি। তবে এর আগে প্রায় সিরিজেই দলের সঙ্গে টিম ডিরেক্টর থাকত।" - যোগ করেন তিনি।
ঢাকা/ইয়াসিন