আবারও মঞ্চে পা রাখতে যাচ্ছেন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। চাইছেন গানের ভুবনে স্বরূপে ফিরতে। উদ্দেশ্য একটাই, যারা দিনের পর দিন প্রহর গুনে যাচ্ছেন তার অনিন্দ্য কণ্ঠে গাওয়া বিভিন্ন দশকের সাড়া জাগানো গান শোনার, সেসব ভক্ত-অনুরাগীদের গানে গানে তৃষ্ণা মেটানো।

আগামী ২২ জুন কানাডার ড্যানফোর্ড অ্যাভিনিউর ডাকরিজ পার্কে পারফর্ম করবেন তিনি। ‘কুমার বিশ্বজিৎ লাইভ ইন কনসার্ট’ শিরোনামে এ আয়োজন করছে কানাডার জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টো।

অসংখ্য সাড়া জাগানো গানের শিল্পী ও স্রষ্টা কুমার বিশ্বজিৎ জানান, কানাডায় শো করার পরই তিনি ছুটে যাবেন ওশেনিয়া অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দেশ অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে ‘লিজেন্ড আনলিস্ট’ শিরোনামে আয়োজিত ধারাবাহিক কনসার্টে অংশ নেবেন তিনি। ২৩ আগস্ট তিনি পারফর্ম করবেন অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের মেলবোর্ন শহরে। এরপর ধারাবাহিকভাবে নিউ সাউথ ওয়েলসের জমকালো শহর সিডনিতে কনসার্ট করবেন ৩০ আগস্ট। পরদিনই শো করবেন কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের ব্রিসবেন। সিডনি ও ব্রিসবেনের শো দুটিতে আভাস ব্যান্ডের তারকাশিল্পী তানযীর তুহীনের পারফর্ম করার কথা রয়েছে। উপস্থাপক হিসেবে থাকবেন দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা মাজনুন মিজান। সবশেষে ৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পার্থে কনসার্ট করার মধ্য দিয়ে ইতি টানবেন বলেও জানিয়েছেন এই শিল্পী।

এদিকে ধারাবাহিক কনসার্টের মধ্য দিয়ে কুমার বিশ্বজিতের গানে ফেরা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে চলেছেন ভক্ত-অনুরাগীরা। গত কয়েক দশক ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম যার অনিন্দ্য কণ্ঠ আর অনবদ্য গায়কীতে বুঁদ হয়ে আছেন, তাঁকে নীরব হয়ে যাওয়া মেনে নিতে পারেননি অনেকেই। বিশ্বজিৎ সে কথা বুঝতে পেরেছেন বলেই হয়তো ফিরে আসছেন শ্রোতাদের কাছে। যদিও ভয়াবহ ও বিষাদী অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়ার কারণেই গান থেকে নিজেকে দূরে সরেছিলেন ভার্সেটাইল এই শিল্পী। প্রায় আড়াই বছর বুকে পাথর চেপে একেকটি মুহূর্ত পার করছেন কুমার বিশ্বজিৎ।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে কানাডায় ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন কুমার নিবিড়। সেই থেকে এখনও সেখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের আত্মজ। যাকে নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় কাটছে শিল্পীর একেকটি দিন। একমাত্র সন্তানের সুস্থতা কামনায় প্রহর গুনে চলেছেন তিনি। 
আশার কথা হলো, কুমার নিবিড় এখন কিছুটা শঙ্কামুক্ত। সে কারণেই এবার শ্রোতাদের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক জুড়ে নিতে চাইছেন। তাদের গানের পিপাসা মেটাতে মঞ্চ থেকে মঞ্চে ছুটে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। 

বিশ্বজিতের কথায়, ‘যাদের জন্য শিল্পীজীবন বেছে নেওয়া, তাদের প্রত্যাশা পূরণের দায়ও নিজের ওপর বর্তায়। তাই জীবনকে ঘিরে ঘটনাবহুল অধ্যায় রচিত হওয়ার পরও তাদের আহ্বানে সাড়া না দিতেই হয়। দর্শক-শ্রোতার শিল্পীজীবনের চালিকাশক্তি; তাদের ভালো লাগা, মন্দ লাগা আর প্রত্যাশা পূরণের মধ্য দিয়ে এতটা পথ পাড়ি দেওয়া। তাই মনে করি, মৃত্যুর পরও আমার গান যদি শ্রোতাদের মাঝে বেঁচে থাকে, সেটিই হবে বড় প্রাপ্তি। হয়তো আমিও এমন করেই বেঁচে থাকব আমার গান দিয়ে, পৃথিবীতে ভ্রমণের সার্থকতা আমার হয়তো সেখানেই।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কনস র ট করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া প্রশ্নে রুল

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রুল দেন। একই সঙ্গে যেকোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব (নিযুক্ত) দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

আরও পড়ুননতুন ব্যবস্থাপনায় নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা শুরু০৭ জুলাই ২০২৫

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন রিটটি করেন। রিটে নৌসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।

‘নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামে গত ২৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এনসিটি পরিচালনায় ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

আগের ধারাবাহিকতায় ৯ জুলাই রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত ২৩ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন। ধার্য তারিখে আদালত আদেশের জন্য ৩০ জুলাই দিন রাখেন। এ অনুসারে আজ বিষয়টি আদেশের জন্য আদালতের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

আজ মধ্যাহ্নবিরতির পর আদালত আদেশ দেন। আদালত বলেন, শুধু রুল দেওয়া হলো।

আদেশের সময় রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আহসানুল করিম এবং আইনজীবী কায়সার কামাল ও আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম।

পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার নতুন দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে এ দায়িত্ব নেয় জাহাজ মেরামতের এ প্রতিষ্ঠান। প্রথমবারের মতো বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হলো চিটাগং ড্রাইডক।

চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহৎ এই টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সিংহভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ