Samakal:
2025-11-03@19:31:17 GMT

বাড়তি করের চাপে পোলট্রি শিল্প

Published: 16th, June 2025 GMT

বাড়তি করের চাপে পোলট্রি শিল্প

অতিমারি করোনার যে চোট পোলট্রি খাতে লেগেছিল, তা সারাতে পারেননি উদ্যোক্তারা। এরপর একের পর এক বেড়েছে পোলট্রি উপকরণের দাম। খুঁড়িয়ে চলা খাতটির এ অবস্থায় প্রস্তাবিত বাজেটে পোলট্রি শিল্পের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ খাতের প্রতিষ্ঠানের টার্নওভার কর শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করা হয়েছে। অপরদিকে করপোরেট কর ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। উদ্যোক্তারা বলছেন, এ খাতের ওপর বাড়তি করের কারণে সস্তা ও সহজলভ্য প্রোটিনের উৎস হিসেবে পরিচিত ব্রয়লার মুরগির ডিম ও মাংসের দাম বেড়ে যেতে পারে। শেষ পর্যন্ত তা  ভোক্তার ওপর চাপ তৈরি করবে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তার প্রয়োজনে তারা টার্নওভার কর কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ এবং করপোরেট কর ২০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।
ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ফিআব) সভাপতি এবং বিপিআইসিসির আহ্বায়ক শামসুল আরেফিন খালেদ সমকালকে বলেন, টার্নওভার কর  বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ বাড়বে, যা আধুনিকায়ন ও খরচ কমানোর প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করবে। যেখানে পোলট্রি উদ্যোক্তারা সর্বোচ্চ ২ থেকে ৩ শতাংশ লাভে পণ্য বিক্রি করেন, সেখানে এত বেশি হার আরোপ কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।
তিনি আরও বলেন, কোম্পানিগুলোর মোট করের পরিমাণ ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দাঁড়াবে, যা ব্যবসায় টিকে থাকা কঠিন করে তুলবে। এতে উদ্যোক্তারা ঝুঁকির মুখে পড়বেন এবং সাশ্রয়ী দামে ডিম ও মাংস বাজারে সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়বে। তারা সরকারের কাছে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানাচ্ছেন।

ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার (ওয়াপসা-বাংলাদেশ) সভাপতি মসিউর রহমান সমকালকে বলেন, ‘মাংস ও ডিমের দাম দীর্ঘমেয়াদে সহনীয় রাখতে আমরা কাজ করছি। অথচ আমরা যখন এ খাতের আধুনিকায়নের জন্য মেশিনারিজ আনছি, তখন আমাদের ব্যাপকহারে আমদানি শুল্ক দিতে হচ্ছে। এখন আমাদের করপোরেট কর প্রায় দ্বিগুণ করা হলো। আমরা দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের জন্য করমুক্ত খাত হিসেবে পোলট্রি খাতকে করমুক্ত রাখার দাবি করছি। কারণ আমরা নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টির জন্য ডিম ও মাংসের ভোগ বাড়াতে চাইছি।’ 
ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সহসভাপতি এহতেশাম বি শাহজাহান বলেন, মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ায় মুরগি এখন সবচেয়ে সাশ্রয়ী প্রোটিনের উৎস। অথচ দেশের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ লেয়ার খামার ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন উৎপাদন বাড়ানোর পথে না গিয়ে বরং চাপে রাখা হলে, ফল ভোক্তার ওপরই পড়বে। প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। অথচ ২০১৫ সাল থেকে ১৫ শতাংশ ছিল। ২০১৫ সালের আগ পর্যন্ত কর ছিল। 

ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সভাপতি মাহাবুবুর রহমান বলেন, কর আদায়ে আগে থেকেই এক ধরনের জটিলতা রয়েছে। কোম্পানির লাভ থেকে কর নেওয়ার কথা। যেখানে লোকসান হচ্ছে, সেখানে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। টার্গেট করে এ খাত থেকে রেভিনিউ বাড়ানোর চিন্তা করা হলে একটা সংকট তৈরি হবে।
উদ্যোক্তারা আরও জানিয়েছেন, ফিড উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানিতে বর্তমানে ভুট্টায় ২ শতাংশ এবং সয়াবিন মিলে ৫ শতাংশ পর্যন্ত আগাম কর নেওয়া হচ্ছে। আগাম কর ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও জটিলতার কারণে তা আটকে থাকে। আগাম কর কমিয়ে আনার জন্য তারা দাবি জানিয়ে আসছেন। 
উদ্যোক্তারা সরকারকে সতর্ক করে বলেন, পোলট্রি খাত দেশের খাদ্য নিরাপত্তার অন্যতম স্তম্ভ। এই খাত চাপে পড়লে জনগণের প্রোটিন গ্রহণের সক্ষমতা কমে যাবে এবং দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য খাতে আরও খরচ বাড়বে। তাই বাজেটে পোলট্রি খাতের জন্য করনীতি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান তারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: করপ র ট কর র জন য দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, নির্বাচনী আচরণবিধির সংশোধন চায় ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি দেন ছাত্রদলের নেতারা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আসন্ন জকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ। ন্যায্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতে আমাদের অনুরোধ, ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় প্রত্যেক ভোটারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনে অমোচনীয় কালি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং স্বচ্ছ, নাম্বারযুক্ত ব্যালট বক্স রাখা আবশ্যক।’

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যালট ছাপার সংখ্যা, ভোট প্রদানকারীর সংখ্যা এবং নষ্ট ব্যালটের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। মিডিয়া ট্রায়াল বা ভুল তথ্য প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে নির্বাচনকালীন সময়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ডাকসুর তফসিল ঘোষণার ৪১ দিন, চাকসুর ৪৪ দিন, রাকসুর ৮০ দিন এবং জাকসুর তফসিল ঘোষণার ৩১ দিন পর নির্বাচন হয়েছে। যেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এ ছাড়া বাকি চার বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিল ঘোষণার সময় ও নির্বাচনের মধ্যবর্তী পার্থক্য বিবেচনা করে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, এজন্য ছাত্রদল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ