হল বরাদ্দ না পাওয়ায় আগামী ২৮ জুন সা‌বেক বি‌রোধী দলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কা‌দে‌রের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলন হচ্ছে না।

বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ওই সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। ত‌বে স‌ম্মেলনের হল বু‌কিং ও বরাদ্দ বা‌তিল নি‌য়ে দল‌টির নেতা‌দের ম‌ধ্যে পরস্পর বি‌রোধী বক্তব‌্য পাওয়া গেছে।

সোমবার (১৬ জুন) দ‌লের যুগ্ম মহাসচিব পদ মর্যাদায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী স্বাক্ষ‌রিত এক প্রেস বিজ্ঞ‌প্তি‌তে জানা‌নো হ‌য়ে‌ছে, জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলনের জন্য বরাদ্দ পাওয়া বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ হল বরাদ্দ বাতিল করায় ২৮ জুন ২০২৫ জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলন হচ্ছে না। ২৮ জুন প্রধান উপদেষ্টার বাজেট সংক্রান্ত সেমিনারের জন্য জাতীয় পার্টিকে বরাদ্দ দেওয়া হলের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয় এই বিজ্ঞপ্তিতে। 

হল বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলনের তারিখ ও সময় জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। তবে বিষয়টি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

এদিকে, দ‌লের পক্ষ থে‌কে পাঠা‌নো প্রেস বিজ্ঞ‌প্তি‌ বিভ্রা‌ন্তিকর উল্লেখ ক‌রে সামা‌জিক যোগা‌যোগ মাধ‌মে প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালীর কড়া সমা‌লোচনা ক‌রেছেন দলের নেতারা।

জাতীয় পা‌র্টির পক্ষ থে‌কে স‌ম্মেল‌নের জন‌্যে হল বু‌কিং ক‌রা হ‌য়ে‌ছে কিনা তা নি‌য়ে প্রশ্ন উঠেছে। নেতা‌দের কেউ কেউ ব‌লে‌ছেন হল বরা‌দ্দের আবেদন করা হ‌লেও বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়‌নি। তাই বু‌কিং ও বরাদ্দ বা‌তি‌লের বিষয়ে বলা হাস‌্যকর ও বিভ্রা‌ন্তিকর।

দ‌লের দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম এ বিষ‌য়ে এক‌ নেতার মন্ত‌ব্যের জবা‌বে ব‌লে‌ছেন,  আমা‌দের (জাপার) না‌মে হল কর্তৃপক্ষ কো‌নো বরাদ্দ দেয় নাই, তাই বরাদ্দ বা‌তি‌লের প্রশ্নই আসে না।

জাপা চেয়ারম‌্যা‌নের প্রেস সে‌ক্রেটা‌রি জালালীর এ বিষ‌য়ে প্রেস বিজ্ঞ‌প্তি পড়‌তে বলা হ‌লে মাহমুদ আলম ব‌লেন,  “সে (জালালী ) কীভা‌বে এটা লি‌খে‌ছেন সে সম্প‌র্কে আ‌মি ওয়া‌কিবহাল নই।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর দ দ ব ২৮ জ ন

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ