ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে যোগ দেয়নি জামায়াত
Published: 17th, June 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপে দ্বিতীয় দিনের আলোচনা শুরু হয়েছে আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন)। এ আলোচনায় যোগ দেয়নি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বেলা পৌনে ১২টায় আলোচনা শুরু হয়। ১১টায় বৈঠক শুরুর কথা থাকলেও জামায়াতের প্রতিনিধিদের অপেক্ষায় সভা শুরু করতে বিলম্ব হয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, আজকের বৈঠকে জামায়াত থাকবে না, এ বিষয়টি দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে হওয়া বৈঠকের যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে তাদের (জামায়াত) উপেক্ষা করা হয়েছে। এর প্রতিবাদ স্বরূপ তারা আজকের বৈঠকে যোগ দেবেন না।
কমিশনের পক্ষ থেকে দুই ঘণ্টা পরে হলেও তাদের যোগ দিতে অনুরোধ করা হয় বলে জানা গেছে।
বিএনপি, এনসিপি, সিপিবি, বাসদ, ইসলামী আন্দোলনসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
সূচনা বক্তব্যে কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা পেলে জুলাই মাসেই জাতীয় সনদ তৈরি করা সম্ভব।
কমিশনের সব প্রস্তাবে একমত না হলেও জাতির স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড় দিতে আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান আলী রীয়াজ।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে বিরোধী দল থেকে নিয়োগ, নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ও সংসদের উচ্চ কক্ষ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা আজকের বৈঠকে।
ঢাকা/হাসান/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যেখানে ঐকমত্য যতটুকু হবে, ততটুকুই সংস্কার হবে: আমীর খসরু
বিএনপির নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সংস্কারের বিষয়টি ঐকমত্যের ওপর নির্ভরশীল। যেখানে ঐকমত্য যতটুকু হবে, ততটুকুই সংস্কার হবে। বাকি অংশটা নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির কাছে নিয়ে যেতে হবে।
আজ সোমবার দুপুরে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে ঢাকার হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির এই নেতা। সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
১৩ জুন যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত বৈঠক হয়। সেই বৈঠক ছিলেন আমীর খসরুও।
বৈঠকে সংস্কারের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ‘সংস্কারের ব্যাপারটা তো আমি আগেই বলেছি। ড. ইউনূস সাহেবও বলেছেন, জনাব তারেক রহমান সাহেবও বলেছেন, আমাদের সব নেতা একই কথা বলেছেন, যেখানে ঐকমত্য যতটুকু হবে ততটুকু সংস্কার হবে। বাকি অংশটা নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির কাছে নিয়ে যেতে হবে।’
সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, এটা নির্বাচনের পরেও অব্যাহত থাকবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের সময় নির্ধারণের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল দ্রুততম সময়ে, বিশেষ করে রোজার আগে নির্বাচনের যে প্রত্যাশা ছিল, (লন্ডন বৈঠকে) সেটা পূরণ হয়েছে। এ ছাড়া বিশেষ বিশেষ সন্ধিক্ষণে আমাদের যে ঐকমত্য হয়, সেটা হয়েছে। এখন আমরা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে এগিয়ে যাব।’
এখন সরকারের নির্বাচনমুখী কর্মকাণ্ডের দিকে এগিয়ে যাওয়া দরকার কি না, জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচন ছাড়া জনগণের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আর তো কোনো পথ নেই। এখানে ঐকমত্য পোষণ করেছে সারা জাতি। বাংলাদেশের মানুষ গত ২০ বছর ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। নতুন প্রজন্ম ভোট দিতে পারেনি। তারা সবাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের উত্তরণ চায়।
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, বিচার বিভাগ বিচার করবে এবং বিচারের আওতায় আনারও বিষয় আছে। যারা বিচারের আওতায় আসবে, তার জন্য আরও প্রায় ছয় মাস সময় আছে। আর যারা এর মধ্যে আসবে না, তাদের জন্য তো আগামী সরকার আছে। আগামী সরকারকেও অনেককে বিচারের আওতায় আনতে হতে পারে। বিচার তো চলমান প্রক্রিয়া এবং বিচার করবে বিচার বিভাগ।