ঢাবিতে ১ হাজার ৩৫ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন, গবেষণায় মাত্র ২.০৮%
Published: 17th, June 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৩৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে। এতে গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের মাত্র ২.০৮ শতাংশ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের অধ্যাপক আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে বাজেট সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বাজেটের খুঁটিনাটি তুলে ধরেন।
এর আগে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের এক সভায় ২০২৫-২৬ অর্থবছর প্রস্তাবিত বাজেট এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৯৯৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২৪-২৫ বছরে গবেষণাখাতে ২০ কোটি ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এবার সেটি শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মোট বাজেটের ২৮.
ঘোষিত বাজেটের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে ৮৮৩ কোটি ৪ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎস থেকে ৯০ কোটি টাকা আয় দেখানো হয়েছে। এতে ঘাটতি থাকবে ৬২ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
গবেষণাখাতের অপ্রতুল বরাদ্দ নিয়ে কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বাজেট প্রণয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। আমরা এর বাইরে যেতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে গবেষণাখাতে বাজেটের বিষয়ে কথা বলেছি। তিনি আমাদের প্রস্তাব আকারে এটি দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
সাধারণত সিন্ডিকেট সভায় বাজেট অনুমোদনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে চূড়ান্তভাবে বাজেট পাশ করা হয়। তবে এবার সিনেট অধিবেশন আয়োজনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এবারই প্রথম সিনেটে বাজেট উপস্থাপন না করে কোষাধ্যক্ষ সংবাদ সম্মেলন করলেন।
এর কারণ হিসেবে কোষাধ্যক্ষ বলেন, সিনেটে ২৫ জন শিক্ষক প্রতিনিধির মেয়াদ ১৫ জুন শেষ হয়েছে। ৩৫ রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধিদের মধ্যে অনেকে ফ্যাসিবাদের সহযোগী রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সিনেটে সরকার থেকে প্রতিনিধি থাকে, এখনও সরকার থেকে প্রতিনিধি মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ফলে আমাদের কারণে নয়, প্রশাসনিক জটিলতায় আমরা এ বছর নির্ধারিত সময়ে সিনেট অধিবেশন করতে পারছি না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বর দ দ
এছাড়াও পড়ুন:
ডিজিটাল খাতে বাজেটের প্রভাব কেমন
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, বাজেট গতানুগতিক। দেশের ইন্টারনেট খাতের জন্য বিশেষ কিছু নেই। মাঝারি ও ছোট আইএসপিদের জন্য বাজেটে তেমন কোনো সুখবর নেই। আগে যা ছিল, এখনও তা-ই আছে। ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী যারা আছেন, তারা শতভাগ দেশি উদ্যোক্তা। তবে করপোরেট গ্রাহকের জন্য ইন্টারনেট সেবা দেয়, তারা
কিছুটা সুবিচার পেতে পারেন।
কারণ, সব ধরনের করপোরেট প্রতিষ্ঠান অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স (এআইটি) কেটে রেখে বিল পরিশোধ করে। এআইটি ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করায় স্বল্প সংখ্যক আইএসপি কিছুটা সুবিচার পেতে পারে। সরকার ইন্টারনেটের দাম কমাতে চায়। কিন্তু ভ্যাট, ট্যাক্সে হাত দেবে না; ইকুইপমেন্টের মধ্যেও হাত দেবে না। ফলে কোনো লাভ হবে না। ভ্যাট, ট্যাক্সে হাত না দিলে ইন্টারনেটের দাম কমবে না।
শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বাজেট প্রসঙ্গে বলেন, আমি মনে করি, ভোক্তা পর্যায়ে স্মার্টফোন খাতে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। উৎপাদন পর্যায়ে মোবাইল হ্যান্ডসেট নির্মাতার লাভের পরিমাণ কিছুটা কমে যেতে পারে। তবে সেটিও খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ মোবাইল হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারক প্রায় ৩০ শতাংশ মূল্য সংযোজন করে এবং ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে এত বেশি ব্যয় হয় না। ধারণা করছি, ব্যবসায়িক পর্যায়েও এর কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ওভার দ্য টপ প্ল্যাটফর্ম (ওটিটি) পরিষেবায় আরোপ করা হয়েছে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক। এতে চরকি, নেটফ্লিক, বঙ্গ ছাড়াও কয়েকটি ওটিটিতে সিনেমা ও সিরিজ ছাড়াও ভালো মানের কনটেন্ট দেখতে দর্শকের ব্যয় বাড়বে। বর্তমানে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর দিতে হয়।
সংশ্লিষ্ট অনেকে মনে করছেন, ওটিটি পরিষেবার ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দূরদৃষ্টিহীন সিদ্ধান্ত। দেশের উদীয়মান ডিজিটাল অর্থনীতি ও উদ্ভাবনী শিল্পের বিকাশ ব্যাহত করবে। সিদ্ধান্তটি একদিকে যেমন দর্শকের ব্যয় বাড়াবে, অন্যদিকে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বড় ধরনের বাধা হবে। সরকারের উচিত, দ্রুত সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা এবং ডিজিটাল অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সহায়ক নীতিমালা গ্রহণ করা।