বিয়ে নিয়ে সংঘর্ষ মামলা: আতঙ্কে পুরুষশূন্য গ্রাম
Published: 18th, June 2025 GMT
একটি বিয়ে নিয়ে দুই গ্রামবাসীর বিবাদে ঘটে সংঘর্ষের ঘটনা। হয় দুটি মামলা। এর পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার হবিবপুর গ্রাম। গ্রামের দুটি বাজারে দোকানপাট বন্ধ রেখে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন গ্রামবাসী। আতঙ্কে দিন কাটছে গ্রামের নারী ও শিশুদের।
জানা গেছে, পূর্বধলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের হবিবপুর গ্রামের বশির মিয়ার ছেলে আরিফের সঙ্গে পাইলাটী গ্রামের জুয়েল মিয়ার মেয়ের বিয়ে না দেওয়াকে কেন্দ্র করে কিছুদিন ধরে বিরোধ চলছিল। প্রায় তিন মাস আগে জুয়েলের মেয়েকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেয় বশিরের ছেলে আরিফ। মেয়েকে বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান জুয়েল। এ নিয়ে এলাকায় কয়েক দফা সালিশ বৈঠকও হয়। পরে গত ৯ জুন মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেন জুয়েল। এতে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ আরও বেড়ে যায়। এরই জেরে গত ১২ জুন রাতে জুয়েলের বাড়ির পাশে রাস্তায় দুই পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে জুয়েলের লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হবিবপুরের দিকে যেতে থাকে।
অপরদিকে, হবিবপুর গ্রামবাসী জড়ো হয়ে তাদের প্রতিহত কারার প্রস্তুতি নেয়। খবর পেয়ে শ্যামগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের কয়েকজন পুলিশ রাত ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এরই মধ্যে জুয়েলের গোয়াল ঘরে আগুন দেয় দুর্বত্তরা। সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য আনসার আলী, হুমায়ুন কবীর, উত্তম কুমার ভাট, হুমায়ুন কবিরসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে পূর্বধলা থানা পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরই মধ্যে জুয়েলের বাড়ি, নারান্দিয়া ইউপি সদস্য মশিউর রহমান সেলিম, বশিরের বাড়িসহ হবিবপুর গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ঘরের দরাজা-জানালা, ফ্রিজ, অলমিরা, থালা-বাসনসহ আসবাব ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় শ্যামগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই উত্তম কুমার ভাট বাদী হয়ে ইউপি সদস্য মশিউর রহমান সেলিম, হবিবপুর গ্রামের আরিফ, ইসলাম উদ্দিন, হাসিম উদ্দিন, নওশাদ, আশিক, রুবেল, সুমনসহ ৩৮ জনের নামে মামলা করেন। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয় ৮০-৯০ জনকে। গত ১৩ জুন পূর্বধলা থানায় মামলাটি করা হয়।
একই দিন জুয়েল মিয়া বাদী হয়ে আরিফ, ইসলাম উদ্দিন, বশির মিয়া, ইউপি সদস্য মশিউর রহমান সেলিমসহ ১৭ জনের নামে একটি মামলা করেন। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয় ১০-১২ জনকে। পুলিশ মামলার আসামি রহিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। এর পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রামের পুরুষ লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। মামলার পর থেকে হবিবপুর গ্রামের দুটি বাজারে বিভিন্ন পণ্যের অর্ধশত দোকান বন্ধ রয়েছে। এতে দোকানের মালপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
গ্রামের একাধিক নারী জানান, মারামারি হয়েছে ঠিকই। এতে পুলিশসহ দুই পক্ষের লোকই আহত হয়েছে। তাই বলে সবাইতো মারামারি করেনি। এখন পুলিশ ও জুয়েল মিয়ার লোকজন রাতের বেলা বাড়িঘরে হানা দেয়। শান্তিতে ঘুমাতে পারে না গ্রামবাসী। তাদের দাবি, যারা দোষ করেছে তাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করুক। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে নিরীহ লোকজনকে হয়রানি বন্ধ হোক।
গতকাল মঙ্গলবার হবিবপুর গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে– বশির মিয়া, ইউপি সদস্য মশিউর রহমান সেলিমসহ বেশ কয়েকটি বাড়ির বসতঘরের আসবাব ভাঙচুর করা হয়েছে। ঘরের মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিছানাপত্র। গ্রামের বেশকিছু দোকান বন্ধ। গ্রামের নারী-শিশুসহ সবার মুখে আতঙ্কের ছাপ।
হবিবপুর গ্রামের আশরাফুল ইসলাম, আবদুল হেলিম, নাজিম উদ্দিন, সুফিয়া বেগম, রাশিদা আক্তার খাতুনসহ অনেকেই জানান, মারামারি হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন রাতে পুলিশ ও জুয়েল মিয়ার লোকজন এসে নারীদের ঘুম থেকে ডেকে তোলে। ভয়ে গ্রামে কোনো পুরুষ মানুষ নেই। তারা খুব কষ্টের মধ্যে আছেন।
রাশিদা আক্তার বলেন, ‘আমাদের বাড়ির পুরুষ লোকজন পালিয়ে বেড়াইতাছে। বাজার করার মতো কেউ নাই। ঘরের রান্না খাওয়াও ঠিকমতো করতে পারছি না। রাতের বেলায় হঠাৎ পুলিশ আইসা ডাকাডাকি করে, ভয় দেখায়।’
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় পাইকপাড়া গ্রামের জুয়েল মিয়ার সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, তাঁর মেয়েকে বিয়ে করার জন্য আরিফ ও তাঁর লোকজন অনেক চেষ্টা করেছে। বিয়ে না দেওয়ায় তারা হামলা ও মারধর করেছে। পুশিকেও মারধর করেছে। এমনকি তাঁর বৃদ্ধ বাবার ওপরও হামলা করেছে। বাড়িতে গোয়াল ঘরে আগুন দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এসব কারণে মামলা করে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। এটা কি আমরা অপরাধ হয়েছে? যারা অপরাধ করেছে, তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক– এটাই আমার চাওয়া। আমরা তাদের ওপর হামলা করিনি।’
পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ নূরুল আলম জানান, দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ থামাতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে কয়েকজন পুলিশ আহত হয়। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হয়। অহেতুক নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হবে না। জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
  
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র মব স প র বধল র ল কজন স ঘর ষ আতঙ ক
এছাড়াও পড়ুন:
জাতির স্বার্থে খোলামেলা আলোচনায় বসার আহ্বান জামায়াতের
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ও জাতির স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে খোলামেলা আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, সরকারসহ সব পক্ষ আন্তরিক হলে আলোচনার মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক সংকটের সমাধান সম্ভব।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ভোরে বিদেশ সফর শেষে দেশে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন শফিকুর রহমান।
জাতীয় নির্বাচনে দলের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা সময়মতো ঘোষণা করা হবে বলে বলেও জানান তিনি। এছাড়া, জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইঙ্গিত দেন তিনি।
বিএনপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে, জামায়াতের তালিকা কবে ঘোষণা করা হবে জানতে চাইলে দলের আমির বলেন, “তারাও (বিএনপি) চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেনি। আমি দেখেছি ২৩৭ টা আসনে তারা তালিকা প্রকাশ করেছেন, আবার এটিও চূড়ান্ত নয়। এরমধ্যেও পরিবর্তন আসতে পারে।”
“আমরা কিন্তু এক বছর আগেই এই তালিকা আঞ্চলিকভাবে জানিয়ে দিয়েছি। চূড়ান্ত তালিকাটা সময়মতো আমরা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ঘোষণা করব। তবে যেহেতু আমরা একা ইলেকশন করব না, আরো অনেককে আমরা ধারণ করব, দেশ এবং জাতির স্বার্থে সব দিক বিবেচনা করেই চূড়ান্তভাবে যথাসময়ে আমরা ইনশাআল্লাহ প্রার্থী ঘোষণা করব।”
আসন্ন নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠানের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে জামায়াতের আমির বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, আমরা আপনারা দেশবাসী সবাই দেখতে চাই।”
মতানৈক্য গণতন্ত্রের সৌন্দর্য: রাজনীতিতে মতানৈক্য কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির বলেন, “আমি বুঝতে পেরেছি, আমাদের মধ্যে মতানৈক্য থাকবে, তবে দোয়া করেন মতবিরোধ যেন না হয়। মতের ভিন্নতা থাকবে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। সব দল তো এক দল নয়। সবগুলো দল ভিন্ন ভিন্ন। তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতেও মতপার্থক্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক।”
“আমরা সকলের মতকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখি। তবে আমরা নিজেরা যে মতটা প্রকাশ করি আমরা চেষ্টা করি চিন্তাভাবনা করে জাতির স্বার্থেই সে মতগুলা প্রকাশ করা হয়। অতএব, মতানৈক্য এটা ডেমোক্রেসির সৌন্দর্য। এটার জন্য এখানে বিরোধ লেগে গেছে অথবা দেশ একেবারে অস্থির হয়ে গেছে আমরা এইটুকু চিন্তা করতে রাজি নই” বলেন তিনি।
খোলামেলা আলোচনার আহ্বান:
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারি ও গণভোটের বিষয়ে শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি অলরেডি দিয়ে দিয়েছি।”
সরকার রাজনৈতিক দলসমূহকে সময় বেঁধে দিয়েছেন, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “না, উনারা সময় বেঁধে দেই নাই; আমি শুনেছি ভাল করে। উনারা অনুরোধ করেছেন যে, এক সপ্তাহ সময়ের ভেতরে রাজনৈতিক দলগুলা বসে যদি একটা কনসেনসাসে পৌঁছাতে পারে, তাহলে তারা সিদ্ধান্ত দিয়ে দেবে। সরকার ভালো কথাই বলেছে।”
তিনি বলেন, “আমরাই সবার আগে আহ্বান জানিয়েছি যে, আসুন, আমরা খোলামেলা আলোচনা করে জাতির স্বার্থে একটা সমাধানে পৌঁছি। আমরা আশা করি, অন্যরা আমাদের এই আহ্বানে সাড়া দেবেন।”
এর আগে গতকাল সোমবার জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
আমি ‘আমির’ নির্বাচিত হইনি:
আবারো দলের আমির নির্বাচত হওয়া প্রসঙ্গে শফিকুর রহমান বলেন, “আমি ‘আমির’ নির্বাচিত হইনি। আমার সহকর্মীরা আমার ওপর একটা দায়িত্বের ভার অর্পণ করেছেন, এই দায়িত্বটা বড় ভারী। আপনারা দোয়া করবেন, দেশ এবং দ্বীনের জন্য এই দায়িত্ব পালনে আল্লাহ যেন আমাকে সাহায্য করেন। আর পাশাপাশি আমি আপনাদেরও সহযোগিতা চাই।”
সাংবাদিকদের উদ্দেশে জামায়াতের আমির বলেন, “আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাবার আগে আরেকবার আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করব। আসলে আপনারা ব্যক্তিগতভাবে জাতির বিবেক আর আপনাদের হাউসগুলো দর্পণ। আমরা সমাজের এই দর্পণ এবং জাতির বিবেকের কাছে দেশ গড়ার অভিযাত্রায় জামায়াতে ইসলামী যেসব কর্মসূচি ঘোষণা করছে যা দেশ এবং জাতির কল্যাণে আমরা এই সবগুলোতে আপনাদেরও কাছে চাই। কারণ আপনারা এই সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন নন। আপনারা শুধু সাংবাদিক নন, আপনারা এই দেশের নাগরিকও বটে। অতএব, আমরা যারা নাগরিক অধিকারটা নিশ্চিত করে একটা মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চাই, এই ক্ষেত্রে আপনাদের ভূমিকা হবে অগ্রগণ্য, আমরা সেটা প্রত্যাশা রাখি। কারণ সাংবাদিকরা যখন জাতির কল্যাণে সিদ্ধান্ত নেন, জাতি তখন কল্যাণের পথ খুঁজে পায়।”
বিদেশ সফরের কথা তুলে ধরে শফিকুর রহমান বলেন, “আপনারা হয়ত জানেন গত মাসের ১৯ তারিখ আমি ওমরা করার উদ্দেশ্যে দেশ থেকে বের হয়েছিলাম। তিন দিনে ওমরা সম্পন্ন করার পর ২২ তারিখ সকাল ৯টায় আমেরিকার জেএফকে এয়ারপোর্টে আমি আল্লাহর মেহেরবাণীতে সেখানে পৌঁছাই এবং সেখানে ৮ দিনব্যাপী বিভিন্ন স্তরে সরকারি বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা এবং ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হই। খুব অল্প সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৪টি শহরে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেখা করার সুযোগ হয়েছে।”
“সেখান গুরুত্বপূর্ণ দুটি কথা দুটি মেসেজ তাদেরকে দিয়েছি। একটা হচ্ছে বাংলাদেশ আমাদের সকলের। দীর্ঘদিনের বঞ্চনা এবং নিষ্পেশন ও ফ্যাসিবাদী শাসনের পর বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে। মুক্তির এই সংগ্রামে দেশবাসীর সাথে প্রবাসে যারা ছিলেন, তারাও সমানতালে লড়াই করেছেন। তাদের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সেই অবদানের জন্য তাদের ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি। আর আমরা বলেছি, প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় অধিকার ভোটাধিকার এত দিন ছিল না। এ দাবি সবার আগে আমরা তুলেছিলাম। আমরা এ দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ সকল জায়গায় প্রবাসীদের হয়ে কথা বলেছি। আমরা সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই; এই প্রথমবারের মত ব্যাপক ভিত্তিক আমাদের প্রবাসীদেরকে ভোটার করার উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু সেখানে কিছু সমস্যা রয়ে গিয়েছে।”
ভোটার হওয়ার জন্য অক্টোবরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “এ জন্য যে সফটওয়ার ইনস্টল করা হয়েছে তা প্রোপারলি ফাংশন করে নাই, যার কারণে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও অনেকেই ভোটার হতে পারেননি। আমাদের দাবি থাকবে নির্বাচন কমিশনের কাছে কমপক্ষে আরও ১৫ দিন এই সময় বর্ধিত করা হোক এবং যে জটিলতাগুলো রয়েছে- এগুলো সহজ করে তাদেরকে ভোটার হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হোক। আরও কিছু সমস্যা আছে; কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা বলব একজন নাগরিকের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য তার ন্যাশনাল আইডি কার্ড যথেষ্ট। পাশাপাশি তার যদি একটা ভ্যালিড পাসপোর্ট থাকে-তাহলে আর কিছুরই প্রয়োজন হয় না। এর বাইরে যে সব শর্ত তা যেন শিথিল করে দেয়।”
তুরস্ক সফর সফল হয়েছে জানিয়ে দলটির আমির বলেন, “তুরস্কে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের আমার গুরুত্বপূর্ণ মিটিং হয়েছে। আর বাংলাদেশি যারা আছেন তাদের সঙ্গে আমার বসা হয়েছে, তাদের কথাও শোনার সুযোগ হয়েছে। আমি আসলে নিজের কোনো প্রয়োজনে দেশ থেকে বের হইনি। আমি বের হয়েছিলাম দেশ এবং জনগণের প্রয়োজনে। যেখানেই গিয়েছে জনগণের স্বার্থকে দেশের স্বার্থকে সামনে রেখেই কথা বলার চেষ্টা করেছি।”
তিনি বলেন, “দুনিয়ার সকলের সাথেই আমরা সম্মানজনক সম্পর্ক চাই। এই সম্পর্কটা হবে মিউচুয়াল রেসপেক্ট এবং ইকিউয়িটির ভিত্তিতে।”
সৌদি আরবে পবিত্র ওমরা পালন এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও তুরস্ক সফর শেষে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান মঙ্গলবার ভোরে ঢাকায় ফেরেন।
এ সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে দলের সিনিয়র নেতারা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
দলের নায়েবে আমির সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সাবেক সংসদ সংসদ সদস্য মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম ও এড. মোয়াযযম হোসাইন হেলালসহ কেন্দ্রীয় আরো অনেক নেতাকর্মী বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা