ইরানকে কাবু করতে যে কৌশল নিচ্ছে ইসরায়েল
Published: 18th, June 2025 GMT
চলমান যুদ্ধে ইরানকে দ্রুত কাবু করতে ইসরায়েল নতুন ‘দাহিয়া কৌশল’ প্রয়োগ করছে ইসরায়েল। ২০০৬ সালে লেবাননের বৈরুতে সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে কৌশলটি ব্যবহার করেছিল তারা। এর মাধ্যমে বৈরুতের দাহিয়া জেলায় হিজবুল্লাহর সদরদপ্তর সহজে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ইসরায়েল।
যুদ্ধ পরিকল্পনাটি প্রকাশ করেছে ইসরায়েলের সম্প্রচার চ্যানেল ফোরটিন। তাতে বলা হয়েছে, কৌশলগত স্থানগুলোতে নিয়মিত বোমা হামলা করা হবে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হামলা চালিয়ে বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করা হবে। জনগণ যাতে অতিষ্ঠ হয়ে ইরান সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামে ও সরকার অস্থিতশীল হয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ইরানের বিরুদ্ধে এ পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির উদ্দেশে লেখা এক বার্তায় ইসরায়েল কাটজ কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তেহরানকে বৈরুতের মতোই ব্যবহার করা হবে।
ইসরায়েলি সামরিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, দখলদার সেনাবাহিনী সামরিক স্থানের কাছাকাছি বাসিন্দাদের ফার্সি ভাষায় সতর্কতা জারি করা শুরু করেছে। এর আগে গাজা ও লেবাননে বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে বাস্তুচ্যুত করায় জোর দেওয়া হয়েছিল।
সোমবার ভোরে ইরানের প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সংলগ্ন বেসামরিক ঘরবাড়িকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ইসরায়েল। এই পদ্ধতিতে লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন ও গাজায় তারা হামলা চালিয়ে আসছে। বিশ্ব সম্প্রদায় এ হামলাকে গণহত্যার কৌশল বলে মনে করে।
দাহিয়া কৌশল হলো ইচ্ছাকৃত ও সম্পূর্ণ ধ্বংসের একটি আনুষ্ঠানিক সামরিক কৌশল। এ পদ্ধতির মাধ্যমে সরাসরি বেসামরিক এলাকা ধ্বংস করা হয়। মানবাধিকার গোষ্ঠী ও আইন বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে এ যুদ্ধ কৌশলটিকে ধ্বংসের কৌশল বলে আখ্যায়িত করে আসছেন। যুদ্ধে আড়ালে বেসামরিক মানুষ ও সম্পদ নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক আইনে এ কৌশল নিষিদ্ধ। আন্তর্জাতিক বিধির তোয়াক্কা না করেই ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বারবার কৌশলটি কাজে লাগিয়েছে।
দাহিয়া কৌশলের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, বেসামরিক অবকাঠামো ও সম্পদ ধ্বংস করে শত্রু দেশের সরকারকে চাপে ফেলা। বেসামরিক শক্তির কেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা। ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল স্টাফ গাদি আইজেনকোটকে এ কৌশলের জনক বলা হয়। সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে ধর্ষণ, সৎ বাবার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ
চার বছর আগে ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জে মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে তারই সৎ বাবাকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার সকালে এ রায় ঘোষণা করেন ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন ঢাকার কেরানীগঞ্জের মো. মোতাহার (৪১)। রায় ঘোষণার সময় আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে উপস্থিত করা হয়। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম তার মা ও সৎ বাবার সঙ্গে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বাস করতো। পৃথক ঘরের ব্যবস্থা না থাকায় তারা একত্রে বসবাস করতেন। মোতাহার ভিকটিমকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতো। ২০২১ সালের ২০ জুন রাতে আসামি ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। ঘটনার বিষয়ে কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দেয়। এজন্য সে কাউকে কিছু জানায়নি। ২২ সেপ্টেম্বর রাতে আবারও তাকে ধর্ষণ করে। ভিকটিম পরদিন বিষয়টি তার মাকে জানায়। ঘটনা শুনে তার মা ও সৎ বাবা তাকে বাসা থেকে বের করে দেয়। ভিকটিম তার বাবার কাছে চলে যায়। ২৪ সেপ্টেম্বর ভিকটিম বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেন। সংশ্লিষ্ট থানার উপ-পরিদর্শক আবুল হাসান মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ২৭ মে মোতাহারকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
মামলার বিচার চলাকালে আদালত ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। আসামির আত্মপক্ষ শুনানি, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত আজ এ রায় দিলেন।