চলমান যুদ্ধে ইরানকে দ্রুত কাবু করতে ইসরায়েল নতুন ‘দাহিয়া কৌশল’ প্রয়োগ করছে ইসরায়েল। ২০০৬ সালে লেবাননের বৈরুতে সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে কৌশলটি ব্যবহার করেছিল তারা। এর মাধ্যমে বৈরুতের দাহিয়া জেলায় হিজবুল্লাহর সদরদপ্তর সহজে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ইসরায়েল।  

যুদ্ধ পরিকল্পনাটি প্রকাশ করেছে ইসরায়েলের সম্প্রচার চ্যানেল ফোরটিন। তাতে বলা হয়েছে, কৌশলগত স্থানগুলোতে নিয়মিত বোমা হামলা করা হবে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হামলা চালিয়ে বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করা হবে। জনগণ যাতে অতিষ্ঠ হয়ে ইরান সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামে ও সরকার অস্থিতশীল হয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ইরানের বিরুদ্ধে এ পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন।  

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির উদ্দেশে লেখা এক বার্তায় ইসরায়েল কাটজ কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তেহরানকে বৈরুতের মতোই ব্যবহার করা হবে। 

ইসরায়েলি সামরিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, দখলদার সেনাবাহিনী সামরিক স্থানের কাছাকাছি বাসিন্দাদের ফার্সি ভাষায় সতর্কতা জারি করা শুরু করেছে। এর আগে গাজা ও লেবাননে বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে বাস্তুচ্যুত করায় জোর দেওয়া হয়েছিল। 

সোমবার ভোরে ইরানের প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সংলগ্ন বেসামরিক ঘরবাড়িকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ইসরায়েল। এই পদ্ধতিতে লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন ও গাজায় তারা হামলা চালিয়ে আসছে। বিশ্ব সম্প্রদায় এ  হামলাকে গণহত্যার কৌশল বলে মনে করে।   
দাহিয়া কৌশল হলো ইচ্ছাকৃত ও সম্পূর্ণ ধ্বংসের একটি আনুষ্ঠানিক সামরিক কৌশল। এ পদ্ধতির মাধ্যমে সরাসরি বেসামরিক এলাকা ধ্বংস করা হয়। মানবাধিকার গোষ্ঠী ও আইন বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে এ যুদ্ধ কৌশলটিকে ধ্বংসের কৌশল বলে আখ্যায়িত করে আসছেন। যুদ্ধে আড়ালে বেসামরিক মানুষ ও সম্পদ নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক আইনে এ কৌশল নিষিদ্ধ। আন্তর্জাতিক বিধির তোয়াক্কা না করেই ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বারবার কৌশলটি কাজে লাগিয়েছে। 

দাহিয়া কৌশলের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, বেসামরিক অবকাঠামো ও সম্পদ ধ্বংস করে শত্রু দেশের সরকারকে চাপে ফেলা। বেসামরিক শক্তির কেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা। ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল স্টাফ গাদি আইজেনকোটকে এ কৌশলের জনক বলা হয়। সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর।  


 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে গাছপালা নিধনের জন্য বন বিভাগ কম দায়ী নয়: উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা

পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে বনভূমি উজাড় ও গাছপালা কমে যাওয়ার জন্য বন বিভাগের দায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাঙামাটি শহরের জিমনেশিয়াম মাঠে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।

সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে যদি বলা হয় যে আর কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই, তাহলে খুব বেশি ভুল হবে না। ৮০ সাল পর্যন্ত এখানে বন ছিল, গাছপালা ছিল, ঝোপঝাড় ছিল। এই অঞ্চলে বা দেশে গাছপালা নিধনের জন্য বন বিভাগ কোনো অংশ কম দায়ী নয়।

সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের চেয়ে বড় আকারের বনভূমি এখন মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী কিংবা সিলেটে দেখা যায়। পার্বত্য অঞ্চলে এই অবস্থা কেন সৃষ্টি হলো সবার ভাবতে হবে।

পার্বত্য উপদেষ্টা আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে সাধারণত ভাদ্র মাসের প্রথম দিকে শীতের অনুভূতি পাওয়া যেত। এখন কার্তিক মাসেও শীতের অনুভূতি পাওয়া যায় না। যারা আদিকাল থেকে এই অঞ্চলে বসবাস করে আসছে, তারা প্রকৃতি সচেতন ছিল। তাই তাদের ওপর খুব বেশি ভূমি ধস হয়েছে শোনা যায় না। তাদের বাড়িঘরেও হয়নি। প্রকৃতিকে যারা চেনে না, তাদের ওপর ভূমিধস হয়।

বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন পরিকল্পনা কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব এ কে এম আকমল হোসেন আজাদ, রাঙামাটি সার্কেলের বন সংরক্ষক মো. আবদুল আওয়াল সরকার, জেলা পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন, সিভিল সার্জন নূয়েন খীসা, দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এসম সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ। এর আগে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করা হয়। ৮ আগস্ট পর্যন্ত এই মেলা চলবে। বৃক্ষমেলায় ২১টি স্টল অংশগ্রহণ করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ