টানা বৃষ্টি ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে মোংলা বন্দরে অবস্থান করা চারটি জাহাজ থেকে চাল ও সার খালাসের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জাহাজগুলোর মধ্যে এমভি হোয়াং-০৯ ও এমভি ট্রাংক-০৮ থেকে চাল এবং এমভি টিবিএস প্রিন্সেস ও এমভি ডিপ ব্লু থেকে সার খালাস বন্ধ রয়েছে। তবে বন্দরে অবস্থানরত অন্য নয়টি জাহাজে কয়লা, ক্লিংকার ও মেশিনারি পণ্যের আংশিক খালাস কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বন্দরের হারবার কন্ট্রোল রুম জানায়, বুধবার মোংলা বন্দরে ১১টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের অবস্থান রয়েছে। এর মধ্যে সার ও চালবাহী চারটি জাহাজের পণ্য খালাস কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে মাল খালাস করতে না পারায় সময় মত বন্দর ত্যাগ করতে পারেনি সারবাহী জাহাজ এমভি টিবিএস প্রিন্সেস।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।

মোংলার উপকূলজুড়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। টানা বৃষ্টিতে এখানকার স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত ও জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিপাত বুধবারও অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মোংলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫৬ মিলিমিটার।

মোংলা আবহাওয়া অফিস ইনচার্জ হারুন অর রশিদ বলেন, এমন আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাত আরও কয়েকদিন থাকবে। এছাড়া উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টির পাশাপাশি ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পণ য খ ল স

এছাড়াও পড়ুন:

‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’

লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।

রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।

জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’

জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।

সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।

মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ