ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথামতো ইরান কারও কাছে আত্মসমর্পণ করবে না। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলকে সাহায্য করে, তাহলে তারা ‘অপূরণীয় ক্ষতির মুখে’ পড়বে।

আজ বুধবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে খামেনি এ কথা বলেন। ইসরায়েল গত শুক্রবার ভোররাতে ইরানে হামলার পর দ্বিতীয়বার বক্তব্য দিলেন খামেনি।

গত শুক্রবার ভোররাতে ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। জবাবে ইরানও পাল্টা হামলা চালায়। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে গত মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের প্রতি ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’-এর আহ্বান জানান। এর আগে তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র জানে খামেনি কোথায় আছে। তবে তাঁকে এখনই হত্যা করা হবে না।

আজ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে খামেনি বলেন, এই জাতি (ইরান) কখনোই আত্মসমর্পণ করবে না। এ সময় তিনি ট্রাম্পের হুমকিকে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেন।

খামেনি আরও বলেন, ‘আমেরিকানদের জানা উচিত, যেকোনো সামরিক হস্তক্ষেপ নিঃসন্দেহে অপূরণীয় ক্ষতি বয়ে আনবে।’

ট্রাম্পের বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে খামেনি বলেন, যাঁরা জ্ঞানী এবং ইরানের ইতিহাস ভালো করে জানেন, তাঁদের জানা আছে—ইরানিরা কোনো হুমকিকে পরোয়া করে না।

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হিসেবে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি প্রায় চার দশক ধরে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে শিয়া-অধ্যুষিত ইরানকে এক আঞ্চলিক শক্তিতে পরিণত করেছেন। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রতি আপসহীন বৈরিতাও বজায় রেখেছেন। এ সময় দেশে একাধিকবার গণবিক্ষোভ হলেও তা কঠোর হাতে দমন করেছেন তিনি।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ‘আপসহীন প্রতিপক্ষ’ খামেনি কীভাবে প্রভাবশালী নেতা হয়ে উঠলেন১ ঘণ্টা আগে

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরানের দুটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। আজ এক এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে আইএইএ জানায়, ইরানি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র টিইএসএ কারাজ ও তেহরান রিসার্চ সেন্টারে হামলা হয়েছে। দুটি কেন্দ্রই একসময় আইএইএর নজরদারির আওতায় ছিল।

এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করে, তারা ৫০টির বেশি যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরানে হামলা চালিয়েছে। হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল ইরানের সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্রসহ একাধিক অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র।

দুটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে ইরানের দিক থেকে এখনো কিছু জানানো হয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

গভীর রাতে থানায় গিয়ে স্বামীর আত্মসমর্পণ, পরে ভাড়া বাসা থেকে স্ত্রীর লাশ উদ্ধার

পটুয়াখালীর বাউফলে সালমা আক্তার (৩২) নামের এক মাদ্রাসাশিক্ষককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামী সরোয়ার হোসেনের (৩৮) বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে দুইটার দিকে থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন সরোয়ার। এ সময় তাঁর সঙ্গে চার বছরের শিশুসন্তান ছিল।

সালমা আক্তার বাউফল উপজেলার নেছারিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। তাঁর বাবার বাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া গ্রামে। সরোয়ার একই উপজেলার নদমূলা গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় ১২ বছর আগে তাঁদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছিল।

পুলিশ, স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও মাদ্রাসার সূত্রে জানা গেছে, চাকরির সুবাদে চার বছর আগে বাউফলে আসেন সালমা ও তাঁর স্বামী সরোয়ার। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে তাঁরা উপজেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

সরোয়ারের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, দাম্পত্য কলহের জেরে গতকাল বিকেলে সালমা ও সরোয়ারের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে বিকেল সোয়া চারটার দিকে সরোয়ার ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়ে সালমার ঘাড়ে কোপ দেন। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে লাশটি ঘরের ভেতর রেখে দরজা-জানালা বন্ধ করে শিশুসন্তানটিকে নিয়ে পালিয়ে যান সরোয়ার। একপর্যায়ে গতকাল গভীর রাতে সন্তানসহ বাউফল থানায় হাজির হয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন। এ সময় তিনি দাবি করেন, বিবেকের তাড়নায় তিনি আত্মসমর্পণ করতে হাজির হয়েছেন।

বাউফল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, সরোয়ার থানায় এসে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সালমার মরদেহ উদ্ধার করেছে। শিশুটিকেও পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে আজ শুক্রবার সকালে জানান বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান সরকার। তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাউফলে স্ত্রীকে হত্যার পর গভীর রাতে থানায় গিয়ে স্বামীর আত্মসমর্পণ
  • স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মসমর্পণ
  • গভীর রাতে থানায় গিয়ে স্বামীর আত্মসমর্পণ, পরে ভাড়া বাসা থেকে স্ত্রীর লাশ উদ্ধার