সরাসরি: ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ
Published: 21st, June 2025 GMT
ইরান ও ইসরায়েলের সংঘাত দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে, হামলা-পাল্টা হামলায় উভয় দেশে ক্রমেই ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি বাড়ছে। অবশ্য বিশ্ব অর্থনীতিতে তার ঝাঁকুনি বড় পরিসরে লাগেনি। তবে এভাবে চলতে থাকলে এই সংঘাতে বিশ্বে অর্থনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে, যাতে ভুগবে কোটি কোটি মানুষ; এমনই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।  
বিষয়টি নিয়ে আলজাজিরা কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস রাজ্যের ব্র্যান্ডেইস বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাদের হাবিবির সঙ্গে। তিনি বলেছেন, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার উত্তেজনা এখনো বৈশ্বিক অর্থনীতিতে গুরুতর প্রভাব ফেলেনি; এটা বোঝা যায় বিশ্ব তেলের বাজার এবং আর্থিক মূলধন বাজারের প্রতিক্রিয়া থেকেই। তবে পরিস্থিতি পরিবর্তন হতে পারে।
তিনি বলেন, “গত সাত-আট দিনে একটি ভয় তৈরি হয়েছে যে, যদি এই সংঘাত পারস্য উপসাগর ও হরমুজ প্রণালি পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার মাধ্যমে তেলবাজারে আরো গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে।”
আরো পড়ুন:
ইরান-ইসরায়েল ছেড়ে পালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা
জাতিসংঘে গ্রোসির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করল ইরান
বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ তেলের সরবরাহ হরমুজ প্রণালি হয়ে যাতায়াত করে, যা ওমান উপসাগর এবং পারস্য উপসাগরকে সংযুক্ত করে।
হাবিবি আরো বলেন, “এখন পর্যন্ত ইরান এই অঞ্চলের কোনো স্থাপনা বা অর্থনৈতিক সম্পদকে লক্ষ্যবস্তু করার দিকেই যায়নি এবং দেখা যাচ্ছে ইসরায়েলও ইরানের অপরিশোধিত তেল রপ্তানির সক্ষমতাকে আঘাত হানতে অনিচ্ছুক।”
দুই দশে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে নামলে এবং তাতে যদি যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি হয়তো নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। তখন তার গভীর ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করতে হবে বিশ্ব অর্থনীতিকে।
১৩ জুন ভোরে ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তারপর পাল্টা হামলায় নামে ইরান। উভয় দেশ হামলা ও পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছে পৌঁছে গেছে বলে অভিযোগ তুলে দেশটিতে নজিরবিহীন হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল; যেখানে আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা বলছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কাছাকাছি পৌঁছানোর কোনো প্রমাণ তাদের কাছে নেই।
ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডার আছে বলে অভিযোগে ২০০৩ সালে হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। যদিও তেমন কোনো অস্ত্রই ছিল না ইরাকে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল ইরাক মডেলে ইরানে হামলা চালাচ্ছে, যার কোনো ভিত্তিই নেই।
ইরানি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ লিখেছে, জায়নবাদী শাসন ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে একটি উস্কানিমূলক আগ্রাসী যুদ্ধ শুরু করে। তারা ইরানের পারমাণবিক, সামরিক ও আবাসিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়, যার ফলে অনেক শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক নিহত হন।
ইরানি সামরিক বাহিনী তাত্ক্ষণিকভাবে পাল্টা হামলা শুরু করে। ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর মহাকাশ বিভাগ ২১ জুন পর্যন্ত ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ (সত্য প্রতিশ্রুতি-৩) অভিযানের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দফায় দফায় পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
ঢাকা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ইসর য় ল য ক তর ষ ট র ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে অমোচনীয় কালি সরবরাহ না করলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতারা। এ ছাড়া এমফিল কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রদলকে ভোট প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর আচরণবিধিবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় ছাত্রদলের নেতারা এমন মন্তব্য করেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা একচুল ছাড় দেব না। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয়— কোনো ছাড় হবে না। নির্বাচনের সময় অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে হবে। যদি নির্বাচন কমিশন অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে।’
ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ‘ম্যানুয়ালি’ ভোট গণনার দাবি জানিয়ে শামসুল আরেফিন বলেন, ‘কত ব্যালট ছাপানো হলো, কত ভোট গণনা হলো, কত ব্যালট নষ্ট হলো—এসব তথ্য স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করতে হবে। কারণ, আমরা ডাকসুতে ব্যালট কেলেঙ্কারির অভিযোগ সম্পর্কে জানি।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বিধিমালায় এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ছাত্রদলকে ‘মাইনাস’ করার একটি মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জকসু গঠন ও পরিচালনা বিধিমালায় বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর নিয়মিত শিক্ষার্থী ভোটার কিংবা প্রার্থী ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। অন্যদিকে এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থীর যোগ্যতা না দিয়ে আমাদের মাইনাস করা ছিল মাস্টারপ্ল্যান—আর সেই মাস্টারপ্ল্যান সফল হয়েছে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, প্রক্টর, সিন্ডিকেটের সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর নির্বাচন কমিশনার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।