অরক্ষিত রেলক্রসিং পার হচ্ছিল যাত্রীবাহী বাসটি। রেললাইনের ওপরই হঠাৎ বাসের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যেই একটি ট্রেন এগিয়ে আসে। বাসের যাত্রীদের মধ্যে চিৎকার–চেঁচামেচি শুরু হয়। বাসের জানালা দিয়ে ৮ বছরের শিশু সোহানুরকে ফেলে দেন দাদা আবদুল হামিদ। সোহানুর বেঁচে যায়; ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় দাদার। সোহানুর রহমান এখন ২৮ বছরের যুবক। সেই দিনের দুর্ঘটনার বিভীষিকাময় স্মৃতি এখনো তাঁকে তাড়া করে।

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় ২০০৬ সালের ১১ জুলাই ট্রেনের ধাক্কায় আবদুল হামিদসহ বাসের ৪০ জন নিহত হন। এতে আহত হয়েছিলেন আরও ৩৮ জন। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার আমুট্ট রেলক্রসিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। সেই দুর্ঘটনার ১৯ বছর পূর্তি হচ্ছে আজ। ওই দুর্ঘটনার পর এটি বৈধ রেলক্রসিং করা হয়। তখন দিনটিকে স্থানীয়ভাবে শোক দিবস পালন ও দুর্ঘটনাস্থলে নিহতের স্মরণে স্মৃতিফলক নির্মাণের করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তৎকালীন পৌরসভার চেয়ারম্যান। তবে তা বাস্তবায়ন হয়নি। প্রতিবছর নীরবেই কেটে যায় দিনটি।

ওই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া সোহানুর রহমানের বাড়ি আক্কেলপুর পৌর শহরের পশ্চিম আমুট্ট মহল্লায়। ওই দিনের স্মৃতি মনে করে সোহানুর বলেন, ‘আমি তখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ি। দাদা (আবদুল হামিদ) জয়পুরহাট শহরে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। আমিও তাঁর সঙ্গে যাওয়ার বায়না ধরি। আমরা দুজন বাড়ি থেকে বের হয়ে আক্কেলপুর রেলগেটে যাই। আমাদের সামনে দিয়ে জয়পুরহাটগামী দুটি বাস চলে যায়। এসব বাস অনেকটা ফাঁকা থাকলেও দাদা উঠলেন না। পরে আমাকে নিয়ে খেয়া পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসে যাত্রীবোঝাই। আমরা বাসের একদম পেছনের লম্বা সিটে জানালার পাশে গিয়ে বসি। সোয়া ১০টার দিকে বাসটি রওনা হয়। ১০ মিনিট পর বাসটি আমুট্ট রেলগেটে পৌঁছায়। হঠাৎ চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে আমার ঘুম ঘুম ভাব কেটে যায়। হঠাৎ দাদা আমাকে জানালা দিয়ে রেললাইনের পাশের জঙ্গলে ছুড়ে ফেলেন। পরে হাসপাতালে আমার জ্ঞান আসে। ওই দিনের কথা মনে হলো, এখনো ভয় লাগে। দাদার জন্য কষ্ট পাই।’

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের আমুট্ট রেলক্রসিংয়ে ২০০৬ সালের ১১ জুলাই ট্রেন-বাসের সংঘর্ষে ৪০ জন বাসযাত্রী নিহত ও ৩৮ জন আহত হন। এতে লন্ডভন্ড হয় খেয়া পরিবহনের বাসটি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন আম ট ট

এছাড়াও পড়ুন:

বাসের জানালা দিয়ে ফেলে দেওয়ায় রক্ষা পেয়েছিল শিশু সোহানুর

অরক্ষিত রেলক্রসিং পার হচ্ছিল যাত্রীবাহী বাসটি। রেললাইনের ওপরই হঠাৎ বাসের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যেই একটি ট্রেন এগিয়ে আসে। বাসের যাত্রীদের মধ্যে চিৎকার–চেঁচামেচি শুরু হয়। বাসের জানালা দিয়ে ৮ বছরের শিশু সোহানুরকে ফেলে দেন দাদা আবদুল হামিদ। সোহানুর বেঁচে যায়; ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় দাদার। সোহানুর রহমান এখন ২৮ বছরের যুবক। সেই দিনের দুর্ঘটনার বিভীষিকাময় স্মৃতি এখনো তাঁকে তাড়া করে।

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় ২০০৬ সালের ১১ জুলাই ট্রেনের ধাক্কায় আবদুল হামিদসহ বাসের ৪০ জন নিহত হন। এতে আহত হয়েছিলেন আরও ৩৮ জন। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার আমুট্ট রেলক্রসিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। সেই দুর্ঘটনার ১৯ বছর পূর্তি হচ্ছে আজ। ওই দুর্ঘটনার পর এটি বৈধ রেলক্রসিং করা হয়। তখন দিনটিকে স্থানীয়ভাবে শোক দিবস পালন ও দুর্ঘটনাস্থলে নিহতের স্মরণে স্মৃতিফলক নির্মাণের করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তৎকালীন পৌরসভার চেয়ারম্যান। তবে তা বাস্তবায়ন হয়নি। প্রতিবছর নীরবেই কেটে যায় দিনটি।

ওই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া সোহানুর রহমানের বাড়ি আক্কেলপুর পৌর শহরের পশ্চিম আমুট্ট মহল্লায়। ওই দিনের স্মৃতি মনে করে সোহানুর বলেন, ‘আমি তখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ি। দাদা (আবদুল হামিদ) জয়পুরহাট শহরে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। আমিও তাঁর সঙ্গে যাওয়ার বায়না ধরি। আমরা দুজন বাড়ি থেকে বের হয়ে আক্কেলপুর রেলগেটে যাই। আমাদের সামনে দিয়ে জয়পুরহাটগামী দুটি বাস চলে যায়। এসব বাস অনেকটা ফাঁকা থাকলেও দাদা উঠলেন না। পরে আমাকে নিয়ে খেয়া পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসে যাত্রীবোঝাই। আমরা বাসের একদম পেছনের লম্বা সিটে জানালার পাশে গিয়ে বসি। সোয়া ১০টার দিকে বাসটি রওনা হয়। ১০ মিনিট পর বাসটি আমুট্ট রেলগেটে পৌঁছায়। হঠাৎ চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে আমার ঘুম ঘুম ভাব কেটে যায়। হঠাৎ দাদা আমাকে জানালা দিয়ে রেললাইনের পাশের জঙ্গলে ছুড়ে ফেলেন। পরে হাসপাতালে আমার জ্ঞান আসে। ওই দিনের কথা মনে হলো, এখনো ভয় লাগে। দাদার জন্য কষ্ট পাই।’

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের আমুট্ট রেলক্রসিংয়ে ২০০৬ সালের ১১ জুলাই ট্রেন-বাসের সংঘর্ষে ৪০ জন বাসযাত্রী নিহত ও ৩৮ জন আহত হন। এতে লন্ডভন্ড হয় খেয়া পরিবহনের বাসটি

সম্পর্কিত নিবন্ধ