আমি রাজনীতি বুঝিও না, করিও না: অপু বিশ্বাস
Published: 13th, July 2025 GMT
“আমি একজন অভিনয়শিল্পী, অভিনয় আমার মূল কাজ। অভিনয়ের জন্য আমি অনেক কিছু করেছি। আমি রাজনীতি বুঝি না, করিও না। আমার আইনজীবীরা আইনের বিষয়ে আরো যত্নশীল। তারা এ বিষয়ে কথা বলবেন।”—আদালত থেকে বেরিয়ে এভাবেই কথাগুলো বলেন অপু বিশ্বাস।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় এনামুল হক নামে এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রাজধানীর ভাটারা থানার মামলায় আত্মসমর্পণ করে ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে আজ জামিন নেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস।
রবিবার (১৩ জুলাই) আদালতে সাংবাদিকদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন। এসময় তার পরনে লাল বোরকা, মাথায় সাদা হিজাব এবং মুখে কালো মাস্ক দেখা যায়।
আরো পড়ুন:
আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন অপু বিশ্বাস
গোপনে বিয়ে করলেন অভিনেত্রী রূপালি
রবিবার বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাসে উপস্থিত হন অপু বিশ্বাস। এরপর আদালতে এজলাসের পেছনের সারির বেঞ্চে বসেন। শুনানিকালে এজলাসের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন আপু বিশ্বাস। পরে ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান তার জামিন মঞ্জুর করেন।
গত ১০ জুলাই অপু বিশ্বাস সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে জামিননামা দাখিল করেন। এ তথ্য উল্লেখ করে অপু বিশ্বাসের আইনজীবী আবুল বাশার কামরুল বলেন, “গত ২ জুন উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন পান অপু বিশ্বাস। সেই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় অপু বিশ্বাস স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। শুনানি শেষে আদালত তার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।”
রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়ের করা একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন পেলেন অপু বিশ্বাস। মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় একজন ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে। এই মামলায় অপু বিশ্বাস ছাড়াও আরো ১৬ জন শিল্পীর নাম রয়েছে এজাহারে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা সরকারি দলের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।
একই মামলায় গত ১৮ মে গ্রেপ্তার করা হয় চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে। দুইদিনের মাথায় জামিন পান এই অভিনেত্রী।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়। এসময় এনামুল হকের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা তিনশ’-চারশ’ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করেন এনামুল হক। এই মামলায় ২০৮ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি অপু বিশ্বাস।
মামলায় অপু বিশ্বাস, আশনা হাবিব ভাবনা, নুসরাত ফারিয়া, অভিনেতা জায়েদ খানসহ ১৭ জন অভিনেতা-অভিনেত্রীকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র অপ ব শ ব স
এছাড়াও পড়ুন:
সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে দেশ টিভির আরিফ ও নাসার নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময়ের দুটি মামলায় নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদার ও দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরিফ হাসানকে সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
রাজধানীর গুলশান থানা এলাকায় কামাল হোসেন প্রকাশ সবুজ হত্যা মামলায় নাসা গ্রুপের কর্ণধার ও এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত।
আর গণ–অভ্যুত্থান চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট কোতোয়ালি থানার সিএমএম কোর্ট এলাকায় রোফায়েদ হাসানসহ ২৫–৩০ জন আন্দোলনকারীর ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় হত্যাচেষ্টা মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরিফ হাসানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানার আদালত আজ সোমবার এই আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জানান, গত ২৮ ও ৩০ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা আরিফ ও কামালকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। ওই দিন আদালত আসামির উপস্থিতিতে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। আজ শুনানির জন্য তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত গ্রেপ্তার আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হাতকড়া ও হেলমেট পরিয়ে তাঁদের আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। আরিফ ও নজরুল আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেন।
আজ সকাল ১০টা ৫২ মিনিটের দিকে বিচারক আসেন। আরিফ হাসানকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক অনুপ ঘোষ। তাঁর আইনজীবী জামিন শুনানির জন্য পাওয়ার চান এবং আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার অনুমতি চান। আদালত সেটি মঞ্জুর করেন।
নাসার নজরুলের মামলার শুনানি শুরু হলে তাঁরা দুজন কাঠগড়ার সামনের অংশের দিকে যান। এরপর নাসার নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী আরিফুর রহমান বলেন, ‘জিডির মাধ্যমে এ মামলা হয়েছে। ফরোয়ার্ডিংয়ের সঙ্গে সাপোর্টিভ কোনো ডকুমেন্টস নেই। এ মামলায় কোনো ১৬৪ ও ১৬১ ধারার জবানবন্দি নেই। ঘটনাস্থলে থাকার কোনো ভিডিও ফুটেজ নেই। কেউ বলেনি, উনি আওয়ামী লীগকে টাকা দিয়েছেন। তাহলে এ মামলার সন্দিগ্ধ আসামি কীভাবে হন? এটা গ্রেপ্তার দেখানো আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
ডিএমপি পরিদর্শক আসাদ আদালতকে বলেন, ‘মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়েছেন। আন্দোলনকে দমন করার জন্য তিনি অর্থসহায়তা দিয়েছেন। সে জন্যই গ্রেপ্তারের আবেদন করেছেন।’
পরে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘কোনো ডকুমেন্টস আছে? তথ্য দেন। এমনিতে বললে তো হবে না।’ এরপর বিচারক নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। তাঁদের দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত বছরের ২ অক্টোবর নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে বিভিন্ন মামলায় তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি কাশিমপুর কারাগারে আছেন।
গত বছরের ১৭ নভেম্বর দেশ টিভির এমডি আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা রয়েছে।