শিক্ষক সাতজন পরীক্ষার্থী দু’জন পাস করেনি কেউ
Published: 13th, July 2025 GMT
ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়ণহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল মাত্র দু’জন শিক্ষার্থী। তাদের জন্য শিক্ষক ছিলেন ৭ জন। অথচ দু’জন শিক্ষার্থীর একজনও পাস করেনি। ফলাফল প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘এই বিদ্যালয়ে সুযোগ-সুবিধা বলতে কিছুই নেই। ২৫ বছর ধরে চেষ্টা করেও বিদ্যালয়টিকে এমপিওভুক্ত করা যায়নি। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খুবই গরিব। আর ৭ জন শিক্ষক থাকার কথাও সঠিক নয়। বিদ্যালয়ে ২-৩ জনের বেশি শিক্ষক নেই।’
ফটিকছড়ি উপজেলায় দ্বিতীয় সর্বনিম্ন শিক্ষার্থী নিয়ে অংশ নেয় রোসাংগিরি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, যেখানে ৬ জনের মধ্যে ৪ জন উত্তীর্ণ হয়েছে।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি শওকত হোসেন সিকদার বলেন, ‘এই স্কুল ২৫ বছর ধরে এমপিও ছাড়া চলছে। এবার মাত্র দুজন পরীক্ষা দিয়েছে। তাদের ফরম পূরণের টাকা পর্যন্ত আমি দিয়েছি। কেউ পাস না করাটা দুঃখজনক। তবে এখানে যারা পড়ে, তারা খুবই অসহায় পরিবার থেকে আসে।’
তিনি বলেন, ‘ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমানে বিদ্যালয়ে ১৭০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে, ৭ জন শিক্ষক আছেন। আশপাশে যারা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারে না, তারাই এখানে ভর্তি হয়।’
তবে শিক্ষক সংখ্যা নিয়ে রয়েছে ভিন্নমত। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ‘কেউ পাস না করাটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। আমি কয়েকবার বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। কয়েকজন শিক্ষার্থী দেখলেও সেখানে তেমন শিক্ষক নেই। প্রায় ৭০ বছর বয়সী একজন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন। দুজন পিয়ন ও কর্মচারী রয়েছেন। তবে সাতজন শিক্ষক রয়েছেন, এমন তথ্য সঠিক নয়। সম্ভবত এমপিও আবেদন করার জন্য কাগজে-কলমে সংখ্যা বাড়িয়ে দেখানো হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা নেই।’
স্থানীয় একজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘দুজন শিক্ষার্থীর একজনও পাস না করায় আমরাও মর্মাহত। কিন্তু এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনার ন্যূনতম কোনো সুবিধা নেই। শিক্ষকরা নিয়মিত বেতন পান না। এসব বিবেচনায় শুধু শিক্ষকদের দোষ দিয়ে লাভ নেই।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জন শ ক ষ র থ
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রীনগরে চার যুবকের অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণের ভিডিও ভাইরাল
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে চার যুবকের অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি শ্রীনগর ইউনিয়নের শ্রীনগর কলেজ এলাকার বলে ধারণা করছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, ভিডিওটি গত মে মাসের। ভিডিওতে থাকা যুবকেরা ‘রাসেল-ফয়সাল বাহিনী’ নামের একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য এবং শ্রীনগর উপজেলার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাঁদের নাম ফয়সাল, রাসেল, অর্পণ, আহির। তাঁদের সবার বয়স ২৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৮ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, জনশূন্য একটি স্থানে দাঁড়িয়ে আছেন চার যুবক। তাঁদের মধ্যে দুজনের হাতে দুটি পিস্তল। একজনকে পিস্তল দেখিয়ে বলতে শোনা যায়, ‘দামি কিন্তু এইডা, দুইডা দিয়া শট করমু।’ জবাবে অন্যজন বলেন, ‘দুইডা দিয়া শট করা যাইব না, একটা দিয়া শট করতে হইব। গুল্লি রেয়ার, পাওয়া যায় না।’ একজন বলেন, ‘লকটা খুলে টিপ দিলেই গুলি বের হইব।’ এ সময় পিস্তল হাতে নিয়ে আকাশের দিকে গুলি করার চেষ্টা করেন একজন। কীভাবে গুলি করতে হবে, পাশ থেকে বলছিলেন আরেক যুবক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভিডিওতে থাকা যুবকদের মধ্যে রাসেলের বাড়ি উপজেলার বাঘরা এলাকায়। ফয়সালের বাড়ি কামারখোলা। আর সাদা টি–শার্ট, কালো প্যান্ট ও টুপি পরা আহিরের বাড়ি শ্রীনগর ইউনিয়নের মথুরা পাড়ায় এবং অন্যজন একই এলাকার কালো পাঞ্জাবি পরা অর্পণ।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমূল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, ভিডিওটি গত মে মাসের। এটি শ্রীনগর কলেজের পেছনের পুকুরপাড় এলাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে। শ্রীনগরের পরিবেশ এখন শান্ত। পরিবেশ ঘোলাটে করতে পাঁচ মাস আগের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাড়া হয়েছে। তিনি বলেন, ভিডিওতে থাকা ব্যক্তিদের ইতিমধ্যে পুলিশ শনাক্ত করেছে। তাঁরা সবাই চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাঁদের সবার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা আছে। সবাই আত্মগোপনে আছেন। তাঁদের মধ্যে রাসেলের দুটি চোখ প্রতিপক্ষের লোকজন উপড়ে ফেলেছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।