সঠিক পদক্ষেপ নিতে না পারায় পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে গে
Published: 22nd, July 2025 GMT
‘সরকার দায়িত্বশীল আচরণ না করায় এবং সঠিক সময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে না পারায় পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে’ মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “গতকালের ঘটনায় (উত্তরায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত) পুরো জাতি ট্রমাটাইজড। আমরা সেই শোক প্রকাশ করছি গভীরভাবে। কিন্তু, গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত পরিস্থিতি ডেভোলপ হচ্ছে। সরকার আরো দায়িত্বশীল ও মানবিক আরচণ করতে পারত।”
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। রাজধানীর উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ এবং সচিবালয়ের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন,“আমাদের কাছে মনে হয়েছে, সরকার দায়িত্বশীল আচরণ না করায় এবং সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে না পারায় পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণেরও বাইরে চলে গেছে। আজকে সারা দিন অনেক ঘটনা ঘটেছে।”
আরো পড়ুন:
‘আমাদের বলতে বাধা দিলে, লড়াই বাধবে’
চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে: নাহিদ ইসলাম
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, “আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের যে ছয় দফা দাবি, সেই দাবির সঙ্গে আমরা সংহতি প্রকাশ করছি। তারা যৌক্তিক কিছু দাবি উপস্থাপন করেছে। সেগুলো সরকারের উচিত দ্রুত বাস্তবায়ন করা। কিছু কিছু উপদেষ্টার খুব দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ দেখেছি, বিশেষত শিক্ষা উপদেষ্টা। রাত তিনটা-চারটার সময় আমাদের জানতে হচ্ছে, এইসএসসি পরীক্ষা স্থগিত করতে হবে। অন্য উপদেষ্টারা তাকে ফোন দিয়ে পাচ্ছে না। সরকারের যদি এ ধরনের অবস্থা হয়, উপদেষ্টাদের মধ্যে সম্বন্বয় নেই-দেশের এমন একটি ইমারজেন্সি সময়ে যখন সারা দেশের শিক্ষার্থীরা ট্রমাটাইজড।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করতে হবে। পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। ভবিষ্যতে যেন এরকম ঘটনা না ঘটে, সেজন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “সোমবার (২১ জুলাই) রাত থেকে মরদেহ গুম করা নিয়ে এক ধরনের প্রচারণা দেখছি। সেক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সঠিক বক্তব্য রাখা উচিত ছিল। দুর্ঘটনার সময় কতজন শিক্ষার্থী ছিল, সেগুলো প্রকাশ করা উচিত। এ ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি মুহূর্তে আপডেট দেওয়া উচিত ছিল।”
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হ দ ইসল ম জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প পদক ষ প ন পর স থ ত সরক র র উপদ ষ ট ঘটন য় এনস প র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’