আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দা লিয়াম বেভিলের জীবনের গল্পটা যেন একদম হলিউড চলচ্চিত্রের মতো। ১৮ বছর বয়সে চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। তবে তাতে হার মানেননি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে একসময় বেভিল হয়ে ওঠেন জাতীয় ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়ন! শুধু তা-ই নয়, গড়েছেন বিশ্ব রেকর্ডও।

গল্পের শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। ১৯৮৩ সালের ৩ জুন আয়ারল্যান্ডের লিমেরিকে ফুটপাত ধরে হাঁটছিলেন ১৮ বছরের বেভিল। ঠিক তখনই এক চুরি হওয়া গাড়ি এসে ধাক্কা দেয় তাঁকে। দুর্ঘটনার আগে তিনি প্রযুক্তি খাতে কাজ করতেন। পরে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে অবসর নিতে হয়। কিন্তু জীবন থেমে যায়নি।

দুই সন্তানের বাবা বেভিল বলেন, ‘আমি এক বছর কাটিয়েছি প্লাস্টার কাস্টে, ছয় মাস হুইলচেয়ারে। কয়েকবার অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। হাঁটা শিখতে হয়েছে নতুন করে। ক্রাচে ভর দিয়ে জিমে ঢোকার পরই আমার পুনর্বাসন শুরু হয়েছিল। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে আমি নিজের শরীর আর মন দুটিকেই নতুন করে গড়েছি। আর সেই পথ পেরিয়ে একসময় আমি হয়ে উঠি ভারোত্তোলনে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন।’

দুর্ঘটনার মাত্র তিন বছরের মাথায় বেভিল লিমেরিক পাওয়ারলিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপে জয়ী হন। ১৯৮৮ সালে তিনি তাঁর প্রথম জাতীয় ডেডলিফট রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েন। আর ২০২২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ৫৭ বছর বয়সে গড়েন বিশ্ব রেকর্ড। সবচেয়ে ভারী ডেডলিফট (পুরুষ) (এমপিফোর) বিভাগের আগের রেকর্ডটি ভেঙে দেন তিনি। লিয়াম বেভিল এদিন লিমেরিকে আয়োজিত আইরিশপিও ন্যাশনাল সিঙ্গেল লিফট চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেন এবং ২৮৫ কেজি ভারোত্তোলন করেন। এই ওজন একটি প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ কুমির কিংবা একটি ভেন্ডিং মেশিনের চেয়েও বেশি।

এমপিফোর মানে হলো একধরনের শারীরিক অক্ষমতা, যার ফলে হাত-পা পুরো শক্তি দিয়ে নড়াচড়া করতে পারে না।

বিশ্ব রেকর্ড গড়ার জন্য বেভিল একাই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তিনি নিয়মিত বক্স স্কোয়াট করেছেন, ব্যায়াম করেছেন এবং ধাপে ধাপে ভারোত্তোলনের সক্ষমতা বাড়িয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব শ ব র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

একসময় ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ভবিষ্যৎ তারকা, এখন ক্লাব খুঁজে বেড়াচ্ছেন

একসময় তাঁকে মনে করা হতো রিয়াল মাদ্রিদের ভবিষ্যৎ তারকা। কলম্বিয়ার ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় মনে করা হয় তাঁকে। কিন্তু সেই হামেস রদ্রিগেজ এখন পরের মৌসুমে খেলার জন্য ক্লাব খুঁজে বেড়াচ্ছেন।

বয়স ৩৪ চলছে। ফুটবলারদের জন্য ত্রিশের ওপরের বয়স মানে ক্যারিয়ারের সায়াহ্ন চলে আসা। কিন্তু হামেস যেন আড়ালে চলে গেছেন একটু আগেই। ফলে ২০১৪ বিশ্বকাপের পর যাঁকে মনে করা হয়েছিল বিশ্ব ফুটবলের ভবিষ্যৎ তারকা, সেই প্রতিশ্রুতির খুব কমই প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর ক্যারিয়ারে।

এখন খেলছেন মেক্সিকান ক্লাব লিওঁতে। তবে আর্থিক দুর্দশার কারণে ক্লাব তাঁকে ছেড়ে দিচ্ছে মৌসুম শেষে। রদ্রিগেজকে তাই আবার নতুন ঠিকানা খুঁজতে হচ্ছে। গুঞ্জন আছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের কোনো ক্লাবে পাড়ি জমাবেন। আর সে ক্ষেত্রে সেটা হবে তাঁর ক্যারিয়ারের ১৩তম ক্লাব।

মেক্সিকোতে মাত্র এক বছর কাটানোর পরই লিওঁর সঙ্গে হামেস রদ্রিগেজের পথচলা শেষ হতে যাচ্ছে। ইএসপিএনের খবর, লিগা এমএক্স-এর এই দলটি ২০২৫ অ্যাপারচুরা টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পর কলম্বিয়ান মিডফিল্ডারকে আর চুক্তির আওতায় রাখছে না।

এই সিদ্ধান্তের পেছনে বড় কারণ, লিওঁর আর্থিক টানাপোড়েন এবং দলের বাজে ফর্ম। কোচ ইগনাসিও আমব্রিজের অধীনে তারা কোনো ছন্দই খুঁজে পায়নি। বর্তমানে দলটি লিগ টেবিলের ১৭তম স্থানে। এ বছর জানুয়ারিতে রদ্রিগেজ লিওঁতে যোগ দেন, তখন তাঁর ইচ্ছা ছিল ক্লাব বিশ্বকাপে খেলার। কিন্তু ক্লাবটি মালিকানার নিয়ম ভাঙার কারণে টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়লে রদ্রিগেজের সেই স্বপ্নও ভেঙে যায়।

রদ্রিগেজের হাসিমুখ এখন অনেকটাই মলিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একসময় ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ভবিষ্যৎ তারকা, এখন ক্লাব খুঁজে বেড়াচ্ছেন