রাষ্ট্র গঠনে দরকার ধাপে ধাপে বাস্তববাদী সংস্কার
Published: 24th, July 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে নানামুখী আয়োজন চলছে। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন—এ তিন বিষয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলো ঐকমত্যে পৌঁছায়। বিভিন্ন কমিশনের সুপারিশ ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাব নিয়ে ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে’ আলোচনার দ্বিতীয় ধাপে সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদে প্রয়োজনীয় সংযোজনের বিষয়ে মতৈক্য হয়েছে। কমিশনগুলোর অধিকাংশ সুপারিশেও রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতি। অন্যান্য বিষয়ে তারা ব্যাখ্যা বা বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে।
এ দীর্ঘ আলোচনাকে দর-কষাকষির ক্ষেত্র হিসেবে দেখলে চলবে না। এটা ‘হাউস অব কার্ডস’ বা জয়–পরাজয়ের যুদ্ধ নয়, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নিজস্ব দর্শন রয়েছে। এর ভিত্তিতে দলগুলোর ভিন্ন ভিন্ন ইতিহাস, কর্মসূচি ও কৌশল রয়েছে। এ কারণেই সব বিষয়ে মতৈক্যের আশা ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের’ নীতির সঙ্গে যায় না।
মতৈক্য হয়নি এক বিষয়; সংশয় তৈরির অপচেষ্টা রাজনৈতিক দলসহ সবার কাছেই অনাকাঙ্ক্ষিত। উসকানিমূলক ভাষার ব্যবহার গণতন্ত্র উত্তরণের গতি রোধ করে। জনতা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে প্রজ্ঞা ও পরিপক্বতা আশা করে।
আরও পড়ুনস্থানীয় সরকার সংস্কার: কমিশনের সুপারিশ কেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন১৮ জুলাই ২০২৫নাগরিকেরা আস্থা রাখছেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’ রাজনৈতিক দলগুলোর সর্বসম্মত সংস্কার এজেন্ডা বা ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়নে সচেষ্ট। ‘ম্যাক্স-মিন পদ্ধতি’ তথা সর্বাধিক দলের ন্যূনতম জরুরি সংস্কারে একমত হওয়া একটি বাস্তবসম্মত পথ তৈরি করতে পারে। এ পন্থার সুবিধা হলো, এতে বিরোধিতা কমে রাজনৈতিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য সম্মতি গড়ে ওঠে।
জনগণের কাছ থেকে রাজনৈতিক ম্যান্ডেট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নাগরিকদের মধ্যে মেনিফেস্টো নিয়ে অধীর আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে। যেসব সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধে৵ ভিন্নতা আছে মেনিফেস্টো বা নির্বাচনী ইশতেহারে তাদের নিজ নিজ লক্ষ্য, মৌলিক নীতি, উদ্দেশ্য, বিস্তারিত সংস্কার ও ব্যাখ্যা উল্লেখ করতে পারে। জনগণের সমর্থন লাভ করে তার ভিত্তিতে কোনো নির্দিষ্ট নীতি বা সংস্কার বা কর্মসূচি বাস্তবায়নের অধিকার প্রাপ্তি রাজনৈতিক বৈধতা বা লেজিটিমেসিও দেবে।
ধাপে ধাপে বাস্তবসম্মত সংস্কার চালিয়ে যাওয়াই (প্র্যাগমেটিক গ্র্যাজুয়ালিজম) সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এটিই টেকসই পরিবর্তন আনতে পারে। তবে ধাপে ধাপে অগ্রগতি পদ্ধতির সমালোচনাও আছে। অনেকে বলেন, সমস্যাগুলো একটি অপরটির সঙ্গে এমনভাবে জড়িত, ছোট ছোট পদক্ষেপ কোনো কাজে আসবে না। তাঁদের মতে, ‘বিগ পুশ’ বা জোরেশোরে ধাক্কা না দিলে অগ্রগতি বিফলে যাবে।
ধাপে ধাপে সংস্কার জরুরিবাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠানগুলো (যেমন আইন, আদালত, প্রশাসন ইত্যাদি) অনেক সময়ই অনানুষ্ঠানিক ক্ষমতাকাঠামোর প্রভাববলয়ে থেকে ক্ষমতাধর পৃষ্ঠপোষকতার নেটওয়ার্ক দ্বারা পরিচালিত হয়। এ অনানুষ্ঠানিক কাঠামোগুলোর শিকড় অতি গভীরে প্রোথিত এবং সেখানে কোনো ধরনের পরিবর্তন আনার চেষ্টা করলে সেগুলো স্থিতি জড়তায় আবার আগের অবস্থায় ফিরে যেতে চায়। সুতরাং হঠাৎ বড় সংস্কার আনার চেষ্টা করলে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে এবং গোটা সংস্কার কার্যক্রমই ব্যর্থ হতে পারে।
উদাহরণ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার কথা বলা যেতে পারে। দেশটি ১৯৬০-৮০ সালের মধ্যে প্রথমে রপ্তানিনির্ভর শিল্প গড়ে তোলে। তারপর তারা ধীরে ধীরে আর্থিক খাত উন্মুক্ত করে; কিন্তু তারা সব সময় রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধান ও নজরদারি বজায় রেখেছে। হীরাসমৃদ্ধ বতসোয়ানা ধীরে ধীরে অর্থনীতিকে বহুমুখীকরণ করেছে, পাশাপাশি তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালীও করেছে। ফলে তারা নাইজেরিয়ার মতো তেলনির্ভর দেশগুলোর ‘রিসোর্স কার্স’ বা ‘সম্পদের অভিশাপ’ এড়িয়ে যেতে পেরেছে।
অন্যদিকে রাশিয়া ১৯৯০ দশকে দ্রুত বেসরকারীকরণ ও বাজার উন্মুক্ত করে দেওয়ার ‘শক থেরাপি’–জাতীয় সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেয়। যথেষ্ট শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান ও যোগ্য নেতৃত্ব না থাকায় বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। নব্য ধনীরা সবকিছু দখল করে নেন; আর সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন।
বেশির ভাগ উন্নয়নশীল দেশে এলোমেলো টুকরা টুকরা সংস্কার (অ্যাডহক ইনক্রিমেন্টালিজম) দেখা গেছে। দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য, কৌশল ও পরিকল্পনার অনুপস্থিতিতে সংস্কার অগ্রযাত্রাকে স্থবির বা পিছিয়ে দিয়েছে।
উন্নয়নশীল দেশগুলোর সমস্যা একটি অপরটির সঙ্গে জড়িত। যেমন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা না থাকায় দুর্নীতিবিরোধী অভিযান সফল হচ্ছে না। একটি মতবাদ অনুযায়ী, সব সমস্যা একসঙ্গে সামাল দিতে হলে ‘বিগ পুশ’ বা ‘বড় ধাক্কা’র মতো সমন্বিত সংস্কার দরকার। কিন্তু এই ‘বিগ পুশ’ তত্ত্ব নিয়ে বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ হার্শম্যান বলেছিলেন, যদি উন্নয়নশীল দেশগুলোর এমন সমন্বিত সংস্কার চালানোর সামর্থ্য থাকত, তবে তারা আদৌ অনুন্নত থাকত না।
বাস্তব ও কার্যকর পথ হলো ‘প্র্যাগমাটিক গ্র্যাজুয়ালিজম’ অর্থাৎ ধাপে ধাপে দেশের ভেতরের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সংস্কার ঘটানো। এ পন্থা ধীরে হলেও টেকসই পরিবর্তনের পথ তৈরি করে।
আরও পড়ুনস্বাস্থ্য খাতের সংস্কার: সরকার যেভাবে সুপারিশ বাস্তবায়ন শুরু করতে পারে৩০ জুন ২০২৫নির্বাচিত নির্বাহীকে নেতৃত্ব দিতে দিতে হবেধাপে ধাপে বাস্তবভিত্তিক পরিবর্তন যে টেকসই উন্নয়নের জন্য জরুরি, তা বাংলাদেশের ইতিহাসেও দেখা যায়। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এমন একটি উদাহরণ দেখা যায়। অনির্বাচিত নীতিনির্ধারকেরা দুর্বল নির্বাহী বিভাগের কারণে কার্যকর শাসন শূন্যতা তৈরি করেছিল।
বাংলাদেশে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে দুটি দিক একসঙ্গে বজায় রাখা দরকার। প্রথমত, নেতৃত্বকে নেতৃত্ব দিতে হবে, নির্বাচিত নেতাদের তথা নির্বাহী বিভাগকে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখলে হিতে বিপরীত হবে। টেকনোক্রেটিক শাসনব্যবস্থা কাম্য নয়। কারণ, অভিজ্ঞতা ফলদায়ী নয়।
দ্বিতীয়ত, নির্বাচিত নেতৃত্বের ওপর নজরদারি রাখার ব্যবস্থাও থাকতে হবে। অর্থাৎ আদালত ও সংসদ যেন ঠিকভাবে কাজ করতে পারে—এটা নিশ্চিত করতে হবে। যেমন সব নিয়োগ নির্বাহী বিভাগ দেবে। আলাদা সাংবিধানিক নিয়োগ কমিটি বা সার্চ কমিটি না থাকলেও সংসদীয় ভেটিং ও তদারকি থাকতে হবে। সংসদীয় কমিটি পাবলিক হিয়ারিংও করতে পারে। এটাই প্রকৃত ‘চেক অ্যান্ড ব্যালান্স’। অর্থাৎ রাষ্ট্রের স্ব স্ব বিভাগ—নির্বাহী, সংসদ ও বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করবে; আবার তদারকি (ওভারসাইট) ব্যবস্থাও বজায় থাকবে।
আরও পড়ুননির্বাচিত সংসদে সংস্কার নয়, সংস্কারের ভিত্তিতেই নতুন সংসদ দরকার১০ জুন ২০২৫অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক ম্যান্ডেটসংস্কার বা পরিবর্তন স্বল্প সময়ের কোনো দৌড় নয়, এটি দীর্ঘমেয়াদি। একধরনের ম্যারাথন। ইতিহাস বলে, হঠাৎ বড় রকমের পরিবর্তনের (বিগ ব্যাং) চেষ্টা ব্যর্থ হতে পারে; কিংবা পিছিয়েও দিতে পারে।
বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাসঞ্জাত প্রজ্ঞা বলে, দীর্ঘ দৌড়ে ধীরে তবে বিরতিহীনভাবে চলা কচ্ছপই শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়।
এ জন্যই বাস্তববাদী, ধাপে ধাপে এগোনোর কৌশল, বাংলাদেশের জটিল সংস্কার বাস্তবতায় কার্যকর। শুধু ধাপে ধাপে এগোলেই হবে না। এর জন্য দরকার শক্তিশালী ও কার্যকর নির্বাহী নেতৃত্ব। সেই নেতৃত্বের ওপর কঠোর নজরদারি থাকা চাই। স্বাধীন বিচারব্যবস্থা, সক্রিয় সংসদ ও মুক্ত গণমাধ্যমের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।
ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সাগরে জাহাজ ঠিক পথে নিতে হলে ক্যাপ্টেনকে কম্পাস (নিয়মকানুন) দেখে চালিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক ম্যান্ডেট ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের’ নীতি অনুসরণ করে সংস্কারবিষয়ক ঐকমত্য ও গণতান্ত্রিক উত্তরণে দ্রুত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন। রাষ্ট্র ও নাগরিকের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনে নাগরিকেরা তাঁদের হারানো পছন্দ প্রয়োগের অধিকার ফিরে পেতে চান।
রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর অধ্যাপক, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
*মতামত লেখকের নিজস্ব
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস থ ক র যকর ঐকমত য সরক র দরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব
কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তবে কারা, সেটা স্পষ্ট করেননি তিনি।
আজ শনিবার বিকেলে রংপুর নগরের সেন্ট্রাল রোডে জাপা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ মন্তব্য করেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দল ইতিমধ্যে ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে বা স্বাক্ষর করে একধরনের ফাঁদে পড়ে গেছে। কিছু রাজনৈতিক দল বলছে, ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে। এখানে প্রতারক ও প্রতারণা শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো এ রকম সংস্কার চাইনি।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঐকমত্য তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, কমিশন ৫৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দলকে বাদ দিয়েছে। যে দলগুলো সেখানে গেছে, তাদের মধ্যে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে মতবিরোধ আছে। এক ভাগকে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ করেছে। অন্য আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে পরে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেছে।
বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বলে দাবি করেছেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। কারণ, নির্বাচিত সরকার সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করেছে ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। এই মুহূর্তে দেশে যে প্রশাসনিক কাঠামো আছে, তার ব্যাপারে তথ্য উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কথামতো প্রশাসন সাজিয়েছে, তার সঙ্গে এনসিপি আছে। এই তিন দলের বাইরে অন্য কোনো দল যদি ভোটে আসে, এই প্রশাসনিক কাঠামো সেই দলকে সুষ্ঠু ভোট হতে দেবে না।
গণভোটের দাবি নজিরবিহীন উল্লেখ করে শামামী হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে এই মুহূর্তে গণভোট কোনো প্রভিশনে নেই। বর্তমানে গণভোটের যে দাবি উঠেছে, সংসদে পাস হওয়ার আগে এই দাবি বাস্তবায়ন হলে ঐকমত্য কমিশনকে সংসদের মর্যাদা দেওয়া হবে। ঐকমত্য কমিশন সার্বভৌম নয়, নির্বাচিত নয় ও সংসদ নয়। সংসদকে এড়িয়ে গিয়ে কোনো আইন পাস করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।
এ সময় জাপার কো–চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, রংপুর জেলার আহ্বায়ক আজমল হোসেন, সদস্যসচিব হাজী আবদুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামানসহ জাপা ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।