আহত বিএনপি কর্মীর সাড়ে ৩ মাস পর মৃত্যু, বিক্ষোভ
Published: 26th, July 2025 GMT
রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত শফিকুল ইসলাম নামে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ মাস ২০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার (২৫ জুলাই) তিনি মারা যান।
শফিকুল হত্যার বিচার দাবিতে তার মরদেহ নিয়ে শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে রংপুর শহীদ মিনারে বিক্ষোভ করেছেন স্বজন ও সহকর্মীরা। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
নিহত শফিকুল উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের কাঁচাবাড়ি সাহপাড় এলাকার মৃত আফসার আলীর ছেলে।
আরো পড়ুন:
লোহাগড়ায় সাপের কামড়ে মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যু
ডেঙ্গু: ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৩, হাসপাতালে ভর্তি ৩৩১
আরো পড়ুন: রংপুরে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষে আহত ব্যক্তির মৃত্যু
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, গত ৫ এপ্রিল বদরগঞ্জ পৌর শহরে দোকান ভাড়াকে কেন্দ্র করে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ হয় বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ও বদরগঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যান মানিক মিয়া এবং বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর গ্রুপের মধ্যে। সংঘর্ষ চলাকালে মানিক মিয়ার অনুসারীদের আঘাতে ওই দিন মারা যান বিএনপি কর্মী লাভলু মিয়া। আহত হন ১০-১৫ জন।
আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ৩ মাস ২০ দিন থাকার পর গতকাল শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুরে শফিকুলের মৃত্যু হয়।
শনিবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ নিয়ে শহীদ মিনারে যান শফিকুলের স্বজনরা। তারা দাবি করেন, শফিকুল সহজ-সরল ও নিবেদিত প্রাণ বিএনপি কর্মী ছিলেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই ইউপি চেয়ারম্যান মানিক মিয়ার গ্রুপ সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তাকে আঘাত করে হত্যা করেছে।
তারা অভিযোগ করেন, থানায় মামলা করা হলেও পুলিশ এখনো কোনো অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেনি।
আরো পড়ুন: রংপুরে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৫
শফিকুলের সন্তান মুরাদ বাবু ও মেয়ে ইতি বানু জানান, দোকান ভাড়াকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া আধিপত্যের লড়াইয়ে তাদের বাবাকে টার্গেট করে আঘাত করা হয়। সেই আঘাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শুক্রবার তাদের বাবা মারা যান। তারা দ্রুত পিতা হত্যার বিচার চান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মানিক মিয়ার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শহীদ মিনারে শফিকুলের স্বজনদের সঙ্গে বিক্ষোভে বক্তব্য দেন সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, “মানিক মিয়া বিএনপির সঙ্গে জড়িত নন। ২০ বছর আগে পদ হারানোর পরও দলের নাম ব্যবহার করে তিনি ক্ষমতা বিস্তারে মরিয়া হয়ে ওঠেন।”
তিনি জানান, গত ৫ এপ্রিল আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় মহড়া দেয় মানিক মিয়ার বাহিনী। পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে তার কিছু কর্মী হামলার শিকার হন। সংঘর্ষে নিহত হন বিএনপি কর্মী লাভলু মিয়া, গুরুতর আহত হন শফিকুল। তিনি মারা যান গতকাল শুক্রবার। তিনি শফিকুল হত্যার বিচার দাবি করেন
বদরগঞ্জ থানার ওসি জানান, ৫ এপ্রিলের সংঘর্ষে আহত শফিকুল ইসলাম রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। এর আগে শফিকুল ইসলামকে হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে।
তিনি জানান, মারা যাওয়া শফিকুলের পরিবার ও স্বজনরা আজ শহীদ মিনারে বিক্ষোভ করেছেন। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাসহ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ অভ য গ বদরগঞ জ শ ক রব র ব এনপ র স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
সিজারের সময় নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সিজারিয়ান অপারেশনের সময় এক নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ক্লিনিকের চেয়ারম্যান ও আবাসিক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নবজাতকসহ তাদেরকে ক্লিনিক থেকে বের করে দেওয়া হয়। ওই রাতেই শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম হাসপাতালে) নেওয়া হয়।
অভিযুক্ত চিকিৎসক পার্থ সমদ্দার কলাপাড়া পৌর শহরের জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আবাসিক চিকিৎসক এবং চেয়ারম্যান।শিশুটির
স্বজনদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রসব বেদনা নিয়ে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন লালুয়ার ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে ও রফিকুলের স্ত্রী মিম বেগম। ওই রাতেই মিমের সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডা. পার্থ সমদ্দার। সিজারের কিছুক্ষণ পরই টিকার কথা বলে নবজাতকের পায়ে একটি ইনজেকশন পুশ করা হয়। পরের দিন থেকেই নবজাতকের বাম পা ফুলতে শুরু করে এবং কান্না বাড়তে থাকে। বিষয়টি চিকিৎসক ও নার্সদেরকে অবহিত করলে তারা তাতে কর্ণপাত করেননি। উল্টো ওই ক্লিনিকের কর্মী ও নার্সরা নবজাতকের স্বজনদের সঙ্গে অসদাচরণের পাশাপাশি তাদের ক্লিনিক থেকে বের করে দেন। পরে অন্যত্র এক্সরে করে জানা যায়, সিজারের সময় নবাজতকের পা ভেঙে ফেলেছেন চিকিৎসক।
নবজাতকের মা মিম আক্তার বলেছেন, বাচ্চা অনবরত কান্না করলে প্রথমে নার্স ও পরে চিকিৎককে অবহিত করা হয়। বাচ্চার বাম ফুলে গেলে তা জানানো হয়। কিন্তু, তারা এর কোনো প্রতিকার না করে আমাদের ধমকাতে থাকেন। ক্লিনিক ছেড়ে চলে যেতে চাপ প্রয়োগ করেন।
নবজাতকের নানা সিদ্দিক বলেন, টিকার কথা বলে আমার নাতিকে শরীর অবশ করার ইনজেকশন দিয়েছিল নার্সরা। ইনজেকশনের কার্যকারিতা শেষ হওয়ার পরপরই আমার নাতি অনেক কান্না করে। আমার স্ত্রী নার্সদের বললে তারা তাকে মারধরের চেষ্টা করে। আমাদের সঙ্গে ক্লিনিকের সবাই অনেক খারাপ আচরণ করেছে। এভাবে রোগীদের সঙ্গে প্রাইভেট ক্লিনিকের কর্মকর্তারাও যদি অসদাচরণ করে, তাহলে আমরা কোথায় যাব?
সিজারের সময় নবজাকের পা ভাঙেনি, দাবি করে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান ডা. পার্থ সমদ্দার বলেছেন, আমি শিশু বিশেষজ্ঞ নই। নবজাতককে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেছেন, যদি সিজারিয়ান অপারেশনের প্রশিক্ষণ থাকে, তাহলে এনেস্থেসিস্টও সিজার করতে পারেন। তবে, এনেস্থেসিস্ট একাই সিজারিয়ান অপারেশন করতে পারেন না।
ঢাকা/ইমরান/রফিক