Prothomalo:
2025-07-29@19:45:02 GMT

আমাদের কি কিছুই করার নেই

Published: 27th, July 2025 GMT

একটি শহর থেকে পাখিই যখন হুমকির মুখে পড়ে, তখন সেই শহরের বাসযোগ্যতা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। কারণ, একটি শহরে বসবাসযোগ্যতার জন্য প্রাণ–প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষা ও নিরাপদ আশ্রয়ের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। দুঃখজনকভাবে রাজধানী ঢাকাকে ঘিরে যাবতীয় পরিকল্পনার মধ্যে সে বিষয়টিই গুরুত্বহীন থেকে যাচ্ছে।

নগরের পাখিবিশেষজ্ঞ, সাধারণ নাগরিক ও প্রকৃতিপ্রেমীদের একই অভিমত, গত চার দশকে ঢাকার অধিকাংশ জলাভূমি ভরাট হয়ে গেছে। নদী ও বায়ুদূষণ লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে। আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে নগরের সবুজ অঞ্চল। নগর–পরিকল্পনাবিদদের ২০২৪ সালের গবেষণা বলছে, ১৯৯৫ সালে ঢাকা শহরের মোট আয়তনের ২০ শতাংশের বেশি ছিল জলাভূমি, যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২ দশমিক ৯ শতাংশে। গত তিন দশকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট জলাভূমির প্রায় ৮৬ শতাংশ ভরাট হয়ে গেছে।

একসময় শুধু কাক, চিল, কবুতর নয়; তখন বাতাই, সারস, মানিকজোড়, ইগল, বাজ, শাহিন, প্যাঁচা, বক ও বগাদেরও আধিক্য ছিল। ঢাকার আশপাশের বিশাল বিলগুলো জলচর পাখির জন্য বিখ্যাত ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাসস্থান ও খাদ্যসংকট, অপরিকল্পিত নগরায়ণসহ নানা কারণে ঢাকার পাখির প্রাকৃতিক চক্র বা বাস্তুসংস্থান আজ গুরুতর হুমকির মুখে।

একটা সময় রাজধানীর অনেক এলাকায় নিয়মিত পাখির ডাক শোনা যেত। দুই দশকের মধ্যে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে ছেয়ে গেছে এসব এলাকা। এ শহরে সাতটির মতো বড় পার্ক আছে, বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম ও বাণিজ্যিকীকরণের কারণে সেগুলোর পরিসরও সংকুচিত হয়ে গেছে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য পান্থকুঞ্জ পার্কের দুই-তৃতীয়াংশ ধ্বংস করা হয়েছে, কাটা পড়েছে অধিকাংশ গাছ। আনোয়ারা উদ্যানও এখন গাছপালাশূন্য, কংক্রিটের দখলে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেরও অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।

একটি আদর্শ শহরে ২৫ শতাংশ সবুজ এলাকা থাকা প্রয়োজন। দেখা যাচ্ছে, ১৯৯৫ সালে ঢাকা শহরে সবুজ এলাকা ও ফাঁকা জায়গা ছিল ৫২ বর্গকিলোমিটারের বেশি, যা এখন প্রায় ৪৩ শতাংশ কমে ৩০ বর্গকিলোমিটারের কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পাখিরা তো হারিয়ে যাবেই।

এই শহর টিকিয়ে রাখতে পরিবেশ–প্রকৃতিকে গুরুত্ব দিতে হবে। দূষণের মাত্রা কমানোর দিকে মনোযোগী হতে হবে। ঢাকার বাসযোগ্যতা ধরে রাখতে পাখির আবাসস্থলগুলোও টিকিয়ে রাখতে হবে। পাখিদের আবাসস্থলগুলো ফিরিয়ে আনতে পার্ক এবং উদ্যানগুলোর প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আমাদের কি কিছুই করার নেই

একটি শহর থেকে পাখিই যখন হুমকির মুখে পড়ে, তখন সেই শহরের বাসযোগ্যতা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। কারণ, একটি শহরে বসবাসযোগ্যতার জন্য প্রাণ–প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষা ও নিরাপদ আশ্রয়ের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। দুঃখজনকভাবে রাজধানী ঢাকাকে ঘিরে যাবতীয় পরিকল্পনার মধ্যে সে বিষয়টিই গুরুত্বহীন থেকে যাচ্ছে।

নগরের পাখিবিশেষজ্ঞ, সাধারণ নাগরিক ও প্রকৃতিপ্রেমীদের একই অভিমত, গত চার দশকে ঢাকার অধিকাংশ জলাভূমি ভরাট হয়ে গেছে। নদী ও বায়ুদূষণ লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে। আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে নগরের সবুজ অঞ্চল। নগর–পরিকল্পনাবিদদের ২০২৪ সালের গবেষণা বলছে, ১৯৯৫ সালে ঢাকা শহরের মোট আয়তনের ২০ শতাংশের বেশি ছিল জলাভূমি, যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২ দশমিক ৯ শতাংশে। গত তিন দশকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট জলাভূমির প্রায় ৮৬ শতাংশ ভরাট হয়ে গেছে।

একসময় শুধু কাক, চিল, কবুতর নয়; তখন বাতাই, সারস, মানিকজোড়, ইগল, বাজ, শাহিন, প্যাঁচা, বক ও বগাদেরও আধিক্য ছিল। ঢাকার আশপাশের বিশাল বিলগুলো জলচর পাখির জন্য বিখ্যাত ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাসস্থান ও খাদ্যসংকট, অপরিকল্পিত নগরায়ণসহ নানা কারণে ঢাকার পাখির প্রাকৃতিক চক্র বা বাস্তুসংস্থান আজ গুরুতর হুমকির মুখে।

একটা সময় রাজধানীর অনেক এলাকায় নিয়মিত পাখির ডাক শোনা যেত। দুই দশকের মধ্যে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে ছেয়ে গেছে এসব এলাকা। এ শহরে সাতটির মতো বড় পার্ক আছে, বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম ও বাণিজ্যিকীকরণের কারণে সেগুলোর পরিসরও সংকুচিত হয়ে গেছে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য পান্থকুঞ্জ পার্কের দুই-তৃতীয়াংশ ধ্বংস করা হয়েছে, কাটা পড়েছে অধিকাংশ গাছ। আনোয়ারা উদ্যানও এখন গাছপালাশূন্য, কংক্রিটের দখলে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেরও অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।

একটি আদর্শ শহরে ২৫ শতাংশ সবুজ এলাকা থাকা প্রয়োজন। দেখা যাচ্ছে, ১৯৯৫ সালে ঢাকা শহরে সবুজ এলাকা ও ফাঁকা জায়গা ছিল ৫২ বর্গকিলোমিটারের বেশি, যা এখন প্রায় ৪৩ শতাংশ কমে ৩০ বর্গকিলোমিটারের কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পাখিরা তো হারিয়ে যাবেই।

এই শহর টিকিয়ে রাখতে পরিবেশ–প্রকৃতিকে গুরুত্ব দিতে হবে। দূষণের মাত্রা কমানোর দিকে মনোযোগী হতে হবে। ঢাকার বাসযোগ্যতা ধরে রাখতে পাখির আবাসস্থলগুলোও টিকিয়ে রাখতে হবে। পাখিদের আবাসস্থলগুলো ফিরিয়ে আনতে পার্ক এবং উদ্যানগুলোর প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ