জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আবেদন করা হয়েছে। আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-২–এর কাছে এই আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

আজ শুনানিতে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর। তিনি বলেন, তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তাতে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা যায়।

এরপর এই মামলার আসামিপক্ষের বক্তব্য শোনার জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল-২। বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ এই দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো.

মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

এই মামলায় মোট ৩০ জন আসামি। এর মধ্যে ছয়জন গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেল রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সাবেক চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী মো. আনোয়ার পারভেজ, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ। তাঁদের আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

বাকি ২৪ জন আসামি পলাতক। তাঁরা হলেন: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদ, গণিত বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মণ্ডল, চিকিৎসক মো. সরোয়ার হোসেন চন্দন, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার মো. হাফিজুর রহমান, সাবেক সেকশন অফিসার মো. মনিরুজ্জামান পলাশ; রংপুর মহানগর পুলিশের (আরপিএমপি) সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, সাবেক উপকমিশনার মো. আবু মারুফ হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. শাহ নূর আলম পাটোয়ারী, সাবেক সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামান, সাবেক পরিদর্শক (নিরস্ত্র) রবিউল ইসলাম, সাবেক এসআই (নিরস্ত্র) বিভূতিভূষণ রায়; বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহাফুজুর রহমান, সহসভাপতি ফজলে রাব্বি ও আখতার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সেজান আহম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হাসান; বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এমএলএসএস মোহাম্মদ নুরুন্নবী মণ্ডল ও আমির হোসেন, নিরাপত্তা প্রহরী নুর আলম মিয়া ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. মাহাবুবার রহমান।

পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত চারজন আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তাঁরা হলেন আইনজীবী সুজাত মিয়া, ইসরাত জাহান, শহীদুল ইসলাম ও মামুন উর রশীদ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব ক সহক র ব গম র ক য় স ব ক উপ র রহম ন ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরোর দিন ফুরিয়ে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর বিবিসির। 

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করতে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিবিএস নিউজের ৬০ মিনিটসকে বলেন, “আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করছে।”

আরো পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয়।

ট্রাম্প এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান মাদক বন্ধ করার লক্ষ্যে নয়, বরং ট্রাম্প বিরোধী মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ‘অনেক কিছু’ সম্পর্কে।

বিবিসির মার্কিন নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে।

সম্প্রতি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলায় আপনি যেসব নৌযানে বিস্ফোরণ হতে দেখেন, তার প্রতিটিতে অন্তত ২৫ হাজার মাদকদ্রব্য ধ্বংস হয়। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহের জন্য দায়ী।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থলপথে ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প তা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “আমি এটা বলতে চাই না যে আমি এটা করব...আমি ভেনেজুয়েলার সাথে কী করব, আমি তা করব কিনা, তা আমি বলব না।”

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর অভিযোগ, নৌযানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘আধিপত্য বিস্তার’ করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প জানান, তার সরকার ‘সারা বিশ্ব থেকে’ সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘আসতে’ দেবে না।

তিনি বলেন, “তারা কঙ্গো থেকে আসে, তারা সারা বিশ্ব থেকে আসে, তারা আসছে, কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নয়। তবে বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা- খারাপ। তাদের গ্যাং আছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়ার’ নাম উল্লেখ করেন। তিনি এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গ্যাং’ হিসেবে অভিহিত করেন।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাদক পাচারকারী সংগঠন ও অপরাধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া এবং কার্টেল অব দ্য সানস, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা পরিচালনা করে। তবে কারাকাস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ