ঢাবিতে জুলাই স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা
Published: 28th, July 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) জুলাই স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে এ আলোচনা সভা শুরু হয় । এতে অংশ নেন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা।
আলোচনা সভার মূল উদ্দেশ্য, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থান ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনাবলিকে স্মরণ এবং তা থেকে অনুপ্রেরণা ও শিক্ষা নেওয়া।
আরো পড়ুন:
বাকৃবিতে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে পশুপালন অনুষদে বিক্ষোভ
সাজিদের মৃত্যু নিয়ে ইবি প্রশাসনের প্রহসনের অভিযোগ
বিভাগের চেয়ারম্যান ড.
শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আবু সালেহ। এরপর জুলাই আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
স্মৃতিচারণমূলক অংশে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বিভাগের চার শিক্ষার্থী তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। জুলাইয়ের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তারা তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং প্রগতিশীল চিন্তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানের মূখ্য আলোচক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম সরকার বলেন, “এই আন্দোলন শুধুই জুলাইয়ের নয়—এটি ১৭ বছর ধরে চলে আসা দীর্ঘস্থায়ী ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের অংশ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যেভাবে দলীয়করণ ও অপরাজনীতিকীকরণ করা হয়েছিল, জুলাই আন্দোলনের বিপ্লবী স্পৃহাকে যেন সেভাবে কুক্ষিগত না করা হয়, সে ব্যপারে সবার সতর্ক থাকা উচিত।”
কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, “আমাদের দেশের শত বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এখানে সবসময়ই আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও সংগ্রাম হয়েছে। তাই ঐতিহাসিকভাবেই জাতিগতভাবে আমরা ন্যায়ের লড়াইয়ের সৈনিক।”
তিনি ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে দেশের ভবিষ্যত নির্মাণে ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
শেষে বিভাগীয় শিক্ষক ও ছাত্র উপদেষ্টা ড. আহসানুল হাদি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া পরিচালনা করেন।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ