বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে নিয়ে গত জুনে কুনমিংয়ে ত্রিদেশীয় এক ‘অনানুষ্ঠানিক আলোচনা’র আয়োজন করেছিল চীন। যদিও ঢাকা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এটি কোনো জোট গঠন নয়, কেবলই কর্মকর্তা পর্যায়ের আলোচনা। তবু থেমে নেই বেইজিংয়ের তৎপরতা। ত্রিদেশীয় উদ্যোগে বাংলাদেশকে সক্রিয় করতে কূটনৈতিক চাপ ও কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে চীন।

চীনের ইউনান প্রদেশের রাজধানী কুনমিংয়ে গত ১৯ জুন চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবেরা বৈঠক করেছিলেন। এরপর গত এক মাসে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলের আলোচনায় ওই ত্রিদেশীয় উদ্যোগের প্রসঙ্গ এসেছে।

২১ জুলাই ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.

তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ওই আলোচনায় চীনের রাষ্ট্রদূত পুনরায় ত্রিদেশীয় উদ্যোগের প্রসঙ্গটি তোলেন। ইয়াও ওয়েন জানান, সেপ্টেম্বর মাসে চীন ত্রিদেশীয় উদ্যোগের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠক পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে করতে আগ্রহী। চীন আশা করে, বাংলাদেশ ওই বৈঠকে যোগ দেবে। যদিও বাংলাদেশ এখনই ত্রিদেশীয় উদ্যোগের কোনো বৈঠকে যোগ দিতে আগ্রহী নয়।

এর আগে ১১ জুলাই মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের (এআরএফ) মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের একফাঁকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ওই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় এবং আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ের পাশাপাশি ওয়াং ই কুনমিংয়ের বৈঠকের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। তিনি বলেন, এটি একটি উন্মুক্ত গ্রুপ। অন্যরাও এসে এতে যুক্ত হতে পারে। এ উদ্যোগে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা রাখা উচিত।

কুয়ালালামপুরের কূটনৈতিক সূত্রগুলো এই প্রতিবেদককে জানিয়েছে, কুনমিংয়ের উদ্যোগের বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলোচনায় তুললেও কোনো মতামত দেননি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি মনোযোগ দিয়ে হাসিমুখে কথা শুনেছেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনায় ত্রিদেশীয় উদ্যোগের প্রসঙ্গটি যে এসেছে, তা এই প্রতিবেদককে বলেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ এখনই এমন কোনো ত্রিদেশীয় উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হবে না।

ইউনান প্রদেশের রাজধানী কুনমিংয়ে ১৯ জুন বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের আলোচনা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট ন র পরর ষ ট র পরর ষ ট র র প রসঙ গ

এছাড়াও পড়ুন:

হামাস সদস্যদের খুঁজে খুঁজে বের করা হবে: ট্রাম্প

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি চাইছে না বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর ধারণা, সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পর ইসরায়েল কী করবে তা নিয়ে আতঙ্কে আছে হামাস।

ট্রাম্প গতকাল শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এদিন তিনি ইঙ্গিত দেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এখনই যুদ্ধ পুরোপুরি থামাতে চাইছে না। তারা শুধু অল্প সময়ের জন্য যুদ্ধ বন্ধ করতে চাইছে; যেন ইসরায়েলি জিম্মিদের গাজা থেকে মুক্ত করা যায়।

ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চূড়ান্ত ধাপে জিম্মি মুক্তির অপেক্ষায় আছি। আর তারা (হামাস) জানে, সবশেষ বন্দীদের ছাড়া হলে এরপর কী হতে পারে। মূলত সে কারণেই তারা আসলে চুক্তি করতে চায়নি।’

যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার জন্য হামাসকেই দায়ী করেছেন ট্রাম্প। বলেছেন, ‘হামাসকে এখন খুঁজে খুঁজে বের করা হবে।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘হামাস সত্যিকার অর্থে কোনো চুক্তি করতে চায়নি। আমি মনে করি, তারা মরতে চায়। আর এটা খুব, খুব খারাপ।’

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ বৃহস্পতিবার বলেন, আলোচনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা কমিয়ে ফেলেছে ওয়াশিংটন। তাদের অভিযোগ, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে হামাস খুব একটা আগ্রহী নয়।

গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, আলোচনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা কমিয়ে ফেলেছে ওয়াশিংটন। তাদের অভিযোগ, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে হামাস খুব একটা আগ্রহী নয়।

ইসরায়েলও বলেছে, তারাও কাতার থেকে তাদের আলোচক দল ফিরিয়ে নিয়েছে।

কাতারে এ যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের বিষয়ে হামাস বিস্ময় প্রকাশ করেছে। সংগঠনটি বলেছে, তারা সত্যিই চাইছিল যেন মধ্যস্থতাকারীদের চেষ্টায় চুক্তি হয়।

হামাস আরও বলেছে, মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসর তাদের ‘গঠনমূলক ও ইতিবাচক’ অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, যুদ্ধবিরতির সময় তাঁরা হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের একটি আটকশিবিরে সরিয়ে নেবেন; যেন পরে পুরো গাজা থেকে তাঁদের সরিয়ে ফেলা যায়।

গাজায় ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধ বন্ধ রাখতে গত কয়েক মাস ধরেই আলোচনা চলছে। এ যুদ্ধবিরতির আওতায় ১০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলা বন্ধ রাখার কথা বলা হয়। তবে হামাসের দাবি, তারা একটা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চায়।

আরও পড়ুনগাজায় ‘এখনই যুদ্ধ থামাতে’ যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সসহ ২৮ দেশের আহ্বান২২ জুলাই ২০২৫

স্টিভ উইটকফ এর আগে বলেছিলেন, এই যুদ্ধবিরতি গাজায় স্থায়ী শান্তির পথ খুলে দেবে। তবে ইসরায়েলের কর্মকর্তারা বারবার বলেছেন, জিম্মিরা মুক্তি পাওয়ার পর তাঁরা আবার যুদ্ধ শুরু করবেন এবং গাজা থেকে সব ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে দেবেন।

এমনকি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, যুদ্ধবিরতির সময় তাঁরা হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের একটি আটকশিবিরে সরিয়ে নেবেন; যেন পরে পুরো গাজা থেকে তাঁদের সরিয়ে ফেলা যায়।

চলতি মাসের শুরুতে ওয়াশিংটনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যুদ্ধবিরতির আলোচনা হলেও গাজায় তাঁদের কাজ এখনো শেষ হয়নি।

আরও পড়ুনগাজায় নারীদের জন্য ‘মায়াকান্না’ নেতানিয়াহুর৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হামাস সদস্যদের খুঁজে খুঁজে বের করা হবে: ট্রাম্প