হাত জোড় করে ক্ষমা চাইছি, বাধ্য হয়ে মিথ্যা বলেছি: আমির খান
Published: 31st, July 2025 GMT
‘আমি হাত জোড় করে ক্ষমা চাইছি, কিছু মানুষকে আমি মিথ্যা বলেছিলাম যে আমার ছবি (সিতারে জমিন পর) ইউটিউবে মুক্তি পাবে না। আমি এটা বলেছিলাম, কারণ, আমার কিছুই করার ছিল না। আমি চেয়েছিলাম থিয়েটারের ব্যবসাকে রক্ষা করতে, তা না হলে আমার স্বপ্ন ওখানেই ধূলিসাৎ হয়ে যেত। সিনেমা দিয়েই আমার শুরু আর সিনেমার প্রতি আমি অত্যন্ত অনুগত। তাই আমি সব সময় থিয়েটারের ব্যবসাকে রক্ষা করার প্রয়াস করব। এটা আমাদের প্রথম প্রয়াস ছিল, তাই বাধ্য হয়ে আমাকে মিথ্যা বলতে হয়েছিল। আমার প্রযোজনা সংস্থা প্রযোজিত আগামী সব ছবি প্রথমে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে, তারপর ইউটিউবে “পে-পার-ভিউ” মডেলে দেখা যাবে’—গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে আমির হাত জোড় করে সবার উদ্দেশে ক্ষমা চেয়ে আবেগপ্রবণ কণ্ঠে কথাগুলো বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আমির জানান যে ভারতের মোট জনসংখ্যার মাত্র ২ থেকে ৩ শতাংশ মানুষ সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখেন। তাঁর ভাষ্যে, ‘ইউপিআই আসার পর ডিজিটাল পেমেন্ট ভারতীয়দের জন্য অনেক সুবিধাজনক হয়ে উঠেছে। তাই আমি মনে করি যে ডিজিটাল মাধ্যমে আসার জন্য এটা সঠিক সময়। আমার মতে, ইউটিউব এমন এক প্ল্যাটফর্ম, যা সবাই ব্যবহার করেন। যেকোনো ডিভাইসে এটা চালানো যায়। এক দিনে প্রায় ৫৫ কোটি ভারতীয় ইউটিউব ব্যবহার করেন। তাই আমার মনে হয়েছিল যে ইউটিউবে এলে আমি আমার কাহিনি সব জায়গায় দেখাতে পারব। আর ইউপিআইয়ের সাহায্যে সব ভারতীয় সহজে এর পেমেন্ট করতে পারবেন।’
নবীনকে আহ্বান
আমির জানান যে কিছুদিন পর থেকে ‘আমির খান প্রোডাকশন’ প্রযোজিত প্রায় সব ছবি তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে দেখা যাবে। সিনেমার প্রতি প্রেম থেকে আমির নবীন নির্মাতাদের নতুন প্ল্যাটফর্ম দিতে চলেছেন। অভিনেতা জানান, ‘অনেক নবাগত পরিচালক আছেন, যাঁরা তাঁদের ছবি আনার জন্য প্ল্যাটফর্ম পান না। তাঁদের ছবি আমাদের পছন্দ হলে সেসব ছবি আমার ইউটিউব চ্যানেলে রিলিজ করব। তাই শুধু আমার ছবি, নতুনদের আমরা সুযোগ দেব। আমার বাবার (তাহির হুসেন) প্রযোজিত ‘অনামিকা’, ‘খুন কী পুকার’সহ আরও ছবি ‘আমির খান টকিজ’-এ মুক্তি দেওয়া হবে। আমাদের এই মডেল সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক নয়, “পে-পার-ভিউ”ভিত্তিক। ১০০ রুপির বিনিময়ে ছবি দেখা যাবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি