বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে ৪৮ কোটি টাকা সুদ মওকুফের সিদ্ধান্ত ঘিরে সৃষ্ট বিতর্কের জেরে পদত্যাগ করেছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে মোশারফ হোসেনের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন পর্ষদের কয়েকজন সদস্য। পরদিনই তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।

ব্যাংকের ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠান সুরুজ মিয়া স্পিনিং মিলসের নামে রয়েছে প্রায় ৮৮ কোটি টাকার ঋণ। এর বিপরীতে ব্যাংকটির পর্ষদ সম্প্রতি ৪৮ কোটি টাকা সুদ মওকুফের অনুমোদন দেয়; এ অনুমোদন বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তির জন্য পাঠানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, কমার্স ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির বর্তমান চেয়ারম্যান মো.

মহসিন মিয়া অতীতে সুরুজ মিয়া স্পিনিংয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পর্ষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের সঙ্গে তিনিও সুদ মওকুফে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। কিন্তু ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাতে আপত্তি জানান।

ওই সূত্র জানায়, দ্রুত বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তিপত্র আনতে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়। তিনি রাজি না হওয়ায় বৈঠকে তাঁকে অপসারণের হুমকি দেওয়া হয়। পরদিন পদত্যাগ করেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে জানতে ব্যাংকের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মো. মহসিন মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ব্যাংকটির নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মোশারফ হোসেন চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তিন বছরের জন্য যোগ দেন। এর আগে তিনি ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের এমডি ছিলেন। ব্যাংকিং পেশায় তিনি যুক্ত হন ১৯৮৭ সালে, উত্তরা ব্যাংকে অবেক্ষাধীন কর্মকর্তা হিসেবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কম র স ব য স দ মওক ফ পদত য গ

এছাড়াও পড়ুন:

বিএলআরআই নিয়োগবিধিতে বৈষম্যের অভিযোগে গবিতে মানববন্ধন

বাংলাদেশ লাইভস্টক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (বিএলআরআই) নিয়োগবিধিতে সমন্বিত বিএসসি ডিগ্রি অন্তর্ভুক্ত না করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা।

আরো পড়ুন:

সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন

ইবিতে ছাত্রীর পোশাক নিয়ে শিক্ষকের কটূক্তি, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘অধিকারের নামে কেন এই বৈষম্য?’, ‘কম্বাইন্ড ডিগ্রিধারী ছাত্র-ছাত্রী চাই ন্যায্য সম্মান’, ‘কম্বাইন্ড ডিগ্রি অপরাধ নয়’, ‘ভেটেরিনারি একটাই পরিবার, কম্বাইন্ড ডিগ্রিতে সমান অধিকার’, ‘কম্বাইন্ড ডিগ্রিধারী ছাত্র-ছাত্রী চাই ন্যায্য সম্মান’, ‘ভেটেরিনারি পরিবারে সমান অধিকার’, ‘সমন্বিত শিক্ষা দেশের সম্মান’, ‘আদিম পশু পালনে নয়, বরং সমন্বিত ভেটেরিনারি শিক্ষা দেশের সম্মান’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়োগবিধি সংশোধন না হলে আরো কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এ সময় গবি ছাত্র সংসদের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. হুমায়ুন কবির বলেন, “বাংলাদেশ লাইভস্টক রিসার্চ ইনস্টিটিউট কম্বাইন্ড ডিগ্রিধারীদের নিয়োগে বৈষম্য করছে। এটি আমাদের প্রতি স্পষ্ট অবিচার। আমরা ইতোমধ্যে প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ম্যামসহ বিএলআরআই কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু তারা বারবার বিষয়টি উপেক্ষা করছে। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।”

আরেক শিক্ষার্থী মো. মাহিদুজ্জামান সিয়াম বলেন, “দেশের প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের বৃহত্তর স্বার্থে ২০১৬ সালে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর উদ্যোগে কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালু হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও এই কোর্স চালু করা হয়। আমরা পশু চিকিৎসা ও পশু পালন—উভয় বিষয়ে সমন্বিত জ্ঞান অর্জন করি। অথচ বিএলআরআই আমাদের কোনো গবেষণা বা চাকরির সুযোগ দিচ্ছে না। এটি বৈষম্যমূলক ও স্বৈরাচারী আচরণ।”

মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেন এবং সমস্যার দ্রুত সমাধানে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ দাবি করেন।

ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ