কুমিল্লার মুরাদনগরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের অনুসারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো পক্ষই মামলা করেনি। ওই ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি বলে জানিয়েছে মুরাদনগর থানা-পুলিশ।

আজ সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান।

আরও পড়ুনমুরাদনগরে উপদেষ্টা আসিফের অনুসারীদের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত ৩৫১৬ ঘণ্টা আগে

এর আগে গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলা সদরের আল্লাহু চত্বরে উপদেষ্টা আসিফের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল এবং সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগ আছে, এ সময় স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের অনুসারীরা সেখানে হামলা চালান। পরে আসিফের অনুসারীদের সঙ্গে তাঁদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৭ সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হন।

তবে আসিফ মাহমুদের অনুসারীদের দাবি, হামলায় তাঁদের পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জনের দাবি, আসিফের অনুসারীরা আওয়ামী লীগের লোকজনসহ হামলা চালিয়ে তাঁদের পক্ষের অন্তত ১৫ জনকে আহত করেছেন।

আজ সকালে আসিফ মাহমুদের অনুসারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (বর্তমানে কার্যক্রম স্থগিত) মুরাদনগর উপজেলার আহ্বায়ক উবায়দুল সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলাম। কায়কোবাদের লোকজন আমাদের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছেন। তাঁরা শুধু আমাদের ওপরই নয়, গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরও নির্মমভাবে হামলা চালিয়েছেন। আমরা এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। গতকালের হামলার ঘটনায় আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। গতকাল আহত ব্যক্তিরা স্থানীয়ভাবে ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।’

আসিফের অনুসারীরা আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন অভিযোগ করে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গতকাল ছাত্রদলের প্রোগ্রাম ছিল। সেখানে তাঁরা (আসিফের অনুসারীরা) পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছেন। সবচেয়ে বড় সত্য হচ্ছে, মুরাদনগরে আসিফের অনুসারী বা এনসিপি নামে যাঁরা মাঠে আছেন, তাঁরা সবাই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের লোক। গতকালের ঘটনায় আমাদের আহত নেতা-কর্মীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনার পর আমরা পরবর্তী কর্মসূচি বা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব। এ ছাড়া কাউকে আটকও করা হয়নি, তবে পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, এ জন্য পুলিশ সতর্ক রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র অন স র দ র স দ র অন স র র অন স র র ম র দনগর কর ম দ র র ঘটন য় উপদ ষ ট ব এনপ র গতক ল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'

সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।

থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।

অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন।  আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।

মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ