সূর্যের আলোতে সময় কাটানোর উপকারিতার কথা কে না জানে! কিন্তু আপনি জানেন কী—কিছু সময় অন্ধকারে থাকলে নানা রকম স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, অন্ধকারে থাকলে শরীরে বিষ্ময়কর কিছু পরিবর্তন ঘটে। যা সুস্থতার সঙ্গে সম্পর্কীত। 

গবেষকেরা বলছেন, ‘‘রাতের অন্ধকার এমনকি চাঁদের আলোও ‘ইকোথেরাপির’ কাজ করতে পারে। ’’

গবেষণা থেকে জানা যায়
রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলে মুহূর্তে শূন্যতার সঙ্গে সংযোগ ও বিষ্ময়করক অনুভূতি হবে। সাম্প্রতিক গবেষণা মানসিক সুস্থতার ওপর এই আবেগগুলো প্রভাব রয়েছে।  

২০২৪ সালের একটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে, ‘‘ রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলে মানুষ সংযোগ অুনভব করে।’’ গবেষকরা NSCI তৈরির জন্য অংশগ্রহণকারীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন এবং এটি পরীক্ষা করার জন্য, তারা ৪০৬ জনেও ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন, যারা রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন তাদের মানসিক সুস্থতার হার বেশি। এবং এই মানুষদের  সুখি হওয়ার প্রবণতাও বেশি। 
গবেষণায় আরও দেখানো হয়েছে, প্রকৃতির সঙ্গে যাদের সংযোগ বেশি তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি। 

আরো পড়ুন:

নারীরা কেন পুরুষদের তুলনায় বেশিবার প্রস্রাব করেন?

প্রতিদিন এন্টাসিড খাচ্ছেন? কোন কোন রোগ হতে পারে জেনে নিন

রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলে যে যে উপকার পাওয়া যায়

• সামাজিক এবং মানসিক সুস্থতা বাড়ে
• উদ্বেগ, চাপ, বিষণ্ণতা কমে
• শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে
• হৃদরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে

সূত্র: হেলথলাইন

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপক র

এছাড়াও পড়ুন:

সাড়ে ১১ বছরেও বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, বেড়েছে কোন্দল

সাড়ে ১১ বছরেও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা যায়নি। কমিটি না থাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম চলেছে ঢিমেতালে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে চট্টগ্রাম উত্তরের সাতটি আসনে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপি নেতাদের বিরোধ আরও চাঙা হয়ে উঠেছে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ।

সর্বশেষ গোলাম আকবর খন্দকার ও গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে গত মঙ্গলবার বিকেলে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির পর রাতে উত্তর জেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তৃণমূল পর্যায়ের নেতা–কর্মীদের প্রত্যাশা, সংঘাত থামিয়ে বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকা নেতৃত্বকে দায়িত্ব দেবে দল; যাতে উত্তরের সাতটি সংসদীয় আসন বিএনপির থাকে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর গোলাম আকবর খন্দকারকে আহ্বায়ক করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির ৪৪ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। এই কমিটিতে সদস্যসচিব ও যুগ্ম আহ্বায়ক রাখা হয়নি। কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকা ৯ জনকে পরে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এই কমিটি কোন্দল থামাতে পারেনি, উল্টো বেড়ে যায়। সর্বশেষ কোন্দল নিরসনে নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটিকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমানের সঙ্গে পরামর্শ ও মতামতের ভিত্তিতে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয় কেন্দ্র থেকে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

রাউজানে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা–কর্মী বিএনপির এক নেতার প্রশ্রয়ে রয়েছেন। তাঁরাই বিএনপির অনেক সভা–সমাবেশে হামলা করেছেন। আমি কোনো সন্ত্রাসীকে প্রশ্রয় দিইনি।গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, সাবেক সভাপতি, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি

এর আগে ২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত উত্তর জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিল। ওই কমিটির সভাপতি ছিলেন গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী আর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আসলাম চৌধুরী। এরপর আর পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়া ও হাটহাজারী উপজেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা যায়নি। শুধু চলতি বছরের শুরুতে রাউজানে সভাপতি–সম্পাদক দুজনের কমিটি হয়। তবে গিয়াস উদ্দিন কাদেরের অনুসারীরা এটির বিরোধিতা করেন। গোলাম আকবরের অনুসারীদের দিয়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ ওঠে।

আওয়ামী লীগের সময়ে গত ১৬ বছর রাউজানে বিএনপি মিছিল–সমাবেশ করতে পারেনি। গত বছরের ৫ আগস্টের পর সেখানে মিছিল করে বিএনপি। এরপর গিয়াস ও গোলাম আকবর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। গত ১৯ মার্চ ইফতার মাহফিলে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হন। মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম–রাঙামাটি সড়কের রাউজানে সত্তারহাট এলাকায় তাঁদের দুজনের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হন। এতে ছররা গুলিতে আহত হন গোলাম আকবর খন্দকার নিজেও। তিনি দাবি করেছেন, তাঁর গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে।

রাউজানে গত বছরের ৫ আগস্টের পর সহিংসতায় মোট ১৩টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ১০টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয় শতাধিকবার। তিন শতাধিক মানুষ এসব ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন।

জানতে চাইলে পদ স্থগিত হওয়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাউজানে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা–কর্মী বিএনপির এক নেতার প্রশ্রয়ে রয়েছেন। তাঁরাই বিএনপির অনেক সভা–সমাবেশে হামলা করেছেন। আমি কোনো সন্ত্রাসীকে প্রশ্রয় দিইনি।’

সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়া ও হাটহাজারী উপজেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা যায়নি। শুধু চলতি বছরের শুরুতে রাউজানে সভাপতি–সম্পাদক দুজনের কমিটি হয়। তবে গিয়াস উদ্দিন কাদেরের অনুসারীরা এটির বিরোধিতা করেন। গোলাম আকবরের অনুসারীদের দিয়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ ওঠে।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার বলেন, হামলার পেছনে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য দলের প্রতিপক্ষ দায়ী। তিনি পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করেন বলে দাবি করেন।

একই অবস্থা মিরসরাই উপজেলায়। ২৪ মার্চ মিরসরাই উপজেলা, বারইয়ারহাট ও মিরসরাই পৌরসভা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। উপজেলা বিএনপির কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় আবদুল আওয়াল চৌধুরীকে। সদস্যসচিব হন আজিজুর রহমান চৌধুরী। ৮৩ সদস্যের নতুন কমিটির নেতৃত্বে থাকা এই দুজনই উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নুরুল আমিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। কমিটিতে নিজেদের পক্ষের প্রতিনিধিত্ব কম থাকায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের অনুসারীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। কমিটি গঠনের প্রতিবাদে ২৫ মার্চ দলের এই অংশের নেতা–কর্মীরা মিরসরাইয়ে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ করে ঝাড়ুমিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। ২৬ মার্চ ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিল করে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যান সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের অনুসারীরা। উপজেলার বারইয়ারহাট পৌরসভার জামালপুর এলাকায় দলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে মোহাম্মদ জাবেদ নামের এক যুবক নিহত হন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন বিএনপির অন্তত ১৩ নেতা–কর্মী। পরে কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করেন নেতারা।

চট্টগ্রামের রাউজানে গত মঙ্গলবার বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সময় ভাঙচুর করা গাড়ি

সম্পর্কিত নিবন্ধ