‘আ. লীগ ক্ষমতায় এলে দেইখ্যা নেব’, ওসিকে ভারতীয় নম্বর থেকে হুমকি
Published: 3rd, August 2025 GMT
সুনামগঞ্জের ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোখলেছুর রহমান আকন্দকে ভারতীয় একটি মোবাইল নম্বর থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। রবিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে রাইজিংবিডিকে বিষয়টি জানিয়েছেন ওসি।
তিনি বলেন, ‘‘গত বৃহস্পতিবার রাত ১টা ৩৪ মিনিটে ভারতীয় একটি মোবাইল একটি নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে কল আসে। যেটা আমার অপরিচিত নম্বর ছিল। তাই আমি গুরুত্ব দেইনি। পরে ওই নম্বর থেকে অনেকবার ফোন ও মেসেজ আসে। একপর্যায়ে আমি ফোন রিসিভ করে কে বলছেন- জানতে চাই। তখন ফোনের অপর প্রান্তের ব্যক্তি বলে, মোখলেছুর রহমান বলছেন? ওসি ছাতক থানা। আমি উত্তর দেই হ্যাঁ। আমি ওনাকে জিজ্ঞাসা করি, কে বলছেন? সে তখন উত্তর দেয়, আমার পরিচয় পরে দেব, আওয়ামী লীগ হারায় নাই, ১০ বছর পরেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে, তখন দেইখ্যা নেব। এ কথা শুনে আমি ফোন কেটে দেই। বুঝতে পারি, তার উদ্দেশ্য ভালো নয়।’’
ওসি বলেন, ‘‘এরপর একাধিকবার সে আমাকে মেসেজ দিয়েছে, ‘নিরীহ মানুষকে হয়রানি বন্ধ করেন’, ‘আওয়ামী লীগ হারাইয়া যায় নাই’ , ‘আওয়ামী লীগ ১০ বছর পরে হইলেও ফিরবে’, ‘বিষয়টা মাথায় রাইখেন’। আমি তখন তাকে মেসেজ দিয়ে জানালাম, পরিচয় দিয়ে মেসেজ দেবেন দয়া করে। এরপর সে মেসেজ দেয়, ‘দিন ঘুরলে বাংলাদেশের যেখানেই থাকেন ধরা হবে। মাইন্ড ইট।’’
আরো পড়ুন:
কুমিল্লায় সাবেক ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অটোরিকশা-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ৫
বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পাশাপাশি এ ঘটনায় থানায় জিডি করেছেন বলে জানান মোখলেছুর রহমান আকন্দ।
ঢাকা/মনোয়ার/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।