ভারতের ওপর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাল্টা শুল্ক বৃদ্ধি করতে পারেন ট্রাম্প
Published: 5th, August 2025 GMT
ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণ’ বাড়াতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন তিনি। রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনার জেরে ভারতের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘ভারত ভালো বাণিজ্যিক অংশীদার নয়। কারণ, তারা আমাদের সঙ্গে অনেক ব্যবসা করে। কিন্তু আমারা তাদের সঙ্গে কোনো ব্যবসা করি না। তাই আমরা ২৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করি। তবে আমি মনে করি, আগামী ২৪ ঘণ্টায় আমি তা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি করতে যাচ্ছি। কারণ, তারা রাশিয়ার তেল কিনছে।’
এমন সময় ট্রাম্প এ হুমকি দিলেন, যখন ৭ আগস্ট থেকে বিভিন্ন দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কার্যকর হতে যাচ্ছে। এর আগে গতকাল সোমবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে তিনি বলেছিলেন, রাশিয়ার তেল কেনার দায়ে তিনি ভারতের পণ্যের ওপর শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি করবেন। যুক্তরাষ্ট্রকে এই শুল্ক পরিশোধ করবে ভারত।
আরও পড়ুনঅনড় ভারত, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করছে না দেশটি০৪ আগস্ট ২০২৫গত ৩১ জুলাই এক নির্বাহী আদেশ জারি করেন ট্রাম্প। তাতে বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্কের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়। আদেশ অনুযায়ী, ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। পাশাপাশি রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে অতিরক্তি জরিমানা আরোপের কথাও বলা হয়। তবে কী পরিমাণ জরিমানা আরোপ করা হবে, সে সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। আগামী ৭ আগস্ট থেকে পাল্টা শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল কিনছে ভারত। তবে এ নিয়ে ওয়াশিংটনের আপত্তি রয়েছে। সূত্রের বরাতে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখেও ভারতীয় তেল শোধনাগারগুলোকে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধের নির্দেশনা দেয়নি নয়াদিল্লি সরকার।
আরও পড়ুনট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্কে ভারতের অর্থনীতি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কী বলছেন অর্থনীতিবিদেরা৩১ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুন২৫ শতাংশ শুল্কে ভারতের যেসব খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে৩১ জুলাই ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানে ইমরান খানের দলের বিক্ষোভে ব্যাপক ধরপাকড়, ১৪৪ ধারা জারি
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গতকাল দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন। তবে এ কর্মসূচি ব্যাহত করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ধরপাকড় হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই)। লাহোর থেকেই ৩০ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আন্দোলন ঠেকাতে বিভিন্ন জেলায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি পালন করতে না পারায় ইসলামাবাদে সড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে পিটিআই।
রাষ্ট্রীয় উপহার–সংক্রান্ত একটি মামলায় ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট থেকে ইমরান খান কারাবন্দী। বর্তমানে তিনি আদিয়ালা কারাগারে দুর্নীতির মামলায় সাজা ভোগ করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৯ মে সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে সন্ত্রাসবাদ আইনে একাধিক মামলায় বিচার চলছে। আজ দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে রাজপথে নামেন দলের নেতা–কর্মীরা।
লাহোর পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (অপারেশনস) ফয়সাল কামরান বলেন, শহরের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা করায় ৩০ জনের বেশি পিটিআই কর্মীকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
পিটিআইয়ের অফিশিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে লেখা হয়েছে, ‘রেহানা দারের মতো একজন প্রবীণ নেতাকে পাঞ্জাব পুলিশ যেভাবে নির্লজ্জভাবে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক দৃশ্য।’
উত্তর পাঞ্জাবে পিটিআইয়ের যুব শাখার সভাপতি রাজা শাহবাজ ভাট্টি দাবি করেছেন, তিনি পুলিশের হামলায় আহত হয়েছেন। পুলিশ আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানান তিনি।
বাহাওয়ালপুর পিটিআই দাবি করেছে, বেলুচিস্তানের কোহলু জেলায় বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিতে জড়ো হওয়া একাধিক কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পিটিআই নেতা আসাদ কায়সার গত সোমবার বলেছেন, পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরেও ধরপাকড় শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
পাঞ্জাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান শায়ান বাশির দাবি করেছেন, পুলিশ অন্তত ২০০টি অভিযান চালিয়েছে। এ সময় অসংখ্য নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়। পরে মুচলেকা দিয়ে তাঁদের ছাড়িয়ে নেওয়া হয়।