ইউরোপীয় পার্লামেন্টের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলের আমির শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাসে এ বৈঠক হয়।

বৈঠক শেষে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় ইউরোপীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই চাই, দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। এ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে যে ঐকমত্য গড়ে উঠেছে, তা বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।’

আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের বলেন, দেশের নির্বাচনব্যবস্থায় প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতি চালুর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তাহেরের ভাষায়, ৫৪ বছরে প্রচলিত পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। গত ১৫ বছরে তিনটি জাতীয় নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তো বলাই বাহুল্য। পিআর পদ্ধতিতে একক প্রার্থী থাকবে না, কেন্দ্র দখলের প্রবণতা কমবে, আর টাকার খেলা হ্রাস পাবে। অন্তত একবার পরীক্ষামূলকভাবে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করা উচিত।

আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আরও বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে যাব না, এটা আমরা বলিনি। আমরা মনে করি, পিআর পদ্ধতিটাই উত্তম এবং সে দাবি করছি। আমরা যুক্তি দিচ্ছি, আমরা বোঝানোর চেষ্টা করছি। আমরা আশা করছি, আমাদের যুক্তি মানবে এবং সেই ভিত্তিতেই আমরা নির্বাচনে যাব। আমরা চাই, যুক্তিসংগত সংস্কারের পর একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক। আলোচনার টেবিলে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব, যদি উদার ও নিরপেক্ষ মানসিকতা থাকে।’

তাহের বলেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলকে তাঁরা জানিয়েছেন, এনসিসির (ন্যাশনাল কনসেনসাস কমিটি) আলোচনায় ৩১টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৬টি দলই পিআর পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছে। জামায়াত সংসদের উচ্চ ও নিম্ন উভয় কক্ষেই পিআর পদ্ধতি চালুর দাবি জানিয়েছে।

জামায়াতের চার সদস্যের প্রতিনিধিদলে সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও আমিরের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মাহমুদুল হাসান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মুনির সাতৌরী। দলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন লুক্সেমবার্গের ইসাবেলা ভিয়েডার-লিমা (ইপিপি), পোল্যান্ডের আরকাদিউস মুলারচিক (ইসিআর), এস্তোনিয়ার উর্মাস পায়েট (রিনিউ ইউরোপ) এবং নেদারল্যান্ডসের কাতারিনা ভিয়েইরা (দ্য গ্রিন্স)।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউর প য় প র ল ম ন ট র

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, নির্বাচনী আচরণবিধির সংশোধন চায় ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি দেন ছাত্রদলের নেতারা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আসন্ন জকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ। ন্যায্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতে আমাদের অনুরোধ, ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় প্রত্যেক ভোটারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনে অমোচনীয় কালি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং স্বচ্ছ, নাম্বারযুক্ত ব্যালট বক্স রাখা আবশ্যক।’

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যালট ছাপার সংখ্যা, ভোট প্রদানকারীর সংখ্যা এবং নষ্ট ব্যালটের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। মিডিয়া ট্রায়াল বা ভুল তথ্য প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে নির্বাচনকালীন সময়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ডাকসুর তফসিল ঘোষণার ৪১ দিন, চাকসুর ৪৪ দিন, রাকসুর ৮০ দিন এবং জাকসুর তফসিল ঘোষণার ৩১ দিন পর নির্বাচন হয়েছে। যেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এ ছাড়া বাকি চার বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিল ঘোষণার সময় ও নির্বাচনের মধ্যবর্তী পার্থক্য বিবেচনা করে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, এজন্য ছাত্রদল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ