Prothomalo:
2025-11-03@09:32:22 GMT

ইয়াসিনের ইউনিভার্সিটি

Published: 18th, September 2025 GMT

তখন জুন মাস। তখন ইয়াসিনের ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা চলবে। ইয়াসিন ইউনিভার্সিটির ছাত্র। সে ইউনিভার্সিটির হলে থাকবে।

ইয়াসিন যে হলে থাকবে, সেই জেড হলের ৩৩৩ নম্বর রুমে নতুন ব্যাচের গেস্টরুম নিতে থাকবে সিনিয়র ভাইরা। ইয়াসিন পরীক্ষার জন্য ছুটি চাইবে; কিন্তু ছুটি পাবে না। তাদের ইমিডিয়েট জুনিয়ররা ফরমাল গেস্টরুমে বারবার ভুল করবে। এই মর্মে সিনিয়ররা তাদের দিকনির্দেশনা দেবে যে কীভাবে জুনিয়রদের শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। হুট করে তাদের মধ্য থেকে মাহমুদ হাত উঠিয়ে বলবে, ‘ভাই, আমার ছুটি লাগবে। কাল আমার পরীক্ষা।’ ভাইদের একজন সদয় হয়ে বলবে, ‘ঠিক আছে।’ দরজা দিয়ে বের হওয়ার সময় মাহমুদ একটু মুচকি হেসে ফেলবে। ওটা লক্ষ করবে এক সিনিয়র। সিনিয়র এই মুচকি হাসির ভিন্ন কোনো অর্থ খুঁজবে। এই একটু মুচকি হাসির জন্য মাহমুদকে আবার রুমে ডেকে আনা হবে। ডেকে এনে গালে একটা চড় মারা হবে। তারপর বলা হবে, যা।

৩৩৬ নম্বর রুমে অন্য এক ব্যাচের মিটিং চলবে। সিনিয়র ভাইরা জুনিয়রদের গেস্টরুম নিতে বলে থাকবে; কিন্তু অনির্দিষ্টকালের জন্য গেস্টরুম ছুটি দেওয়া হবে। মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হবে যে সিনিয়ররা আমাদের বন্ধুর গায়ে হাত দিয়েছে তাই আজ থেকে সব গেস্টরুম প্রোগ্রাম বন্ধ। নেতারা যতক্ষণ না বিষয়টার বিচার করবেন, ততক্ষণ আমরা কেউই প্রোগ্রামে যাব না। কেউ বন্ধুদের সঙ্গে বেইমানি করব না।

একটা কথা এখানে বলে রাখা দরকার হবে, এমন না যে শুধু একদিন মারার কারণে জুনিয়ররা কঠোর হয়েছে। জুনিয়ররা আগে থেকেই মার খেয়ে থাকবে। আর এই ক্রমাগত মার খেয়ে থাকাটাই জুনিয়রদের ক্ষোভের কারণ।

এমনিতে গেস্টরুমে জায়গা থাকবে না, তদুপরি সেখানে তৃতীয় বর্ষে ওঠার পরেও আটজনের রুমে পঁচিশ-ত্রিশজনকে ঠাসাঠাসি করে থাকতে হবে, উপরন্তু সেখানে এক সিনিয়র ভাই তার বহিরাগত ছোট ভাইকে এনে সিটে রাখবে। সেই বহিরাগতর সামনেই জুনিয়রদের গালাগালি করা হবে। মারধর করা হবে। এসব কর্মকাণ্ডেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটবে জুনিয়রদের আজকের এই কঠোরতায়।

জুনিয়রদের স্ট্রাইকের খবর শুনে সিনিয়ররা কয়েক দিন রুমে এসে জুনিয়রদের বোঝানোর চেষ্টা করবে। জুনিয়ররা মানতে নারাজ হবে। নেতাদের সঙ্গে কথা হবে। নেতারা বলবেন, তোমরা সিনিয়র ভাইদের সঙ্গে কথা বলো।

পরে ওই দিন রাতে আবার গেস্টরুম ডাকা হবে। সিনিয়ররা তখন হুমকি দিতে থাকবে যে ‘সিট তোদের ইয়া দিয়া ঢুকায়া দিমু। কাইলকা পর্যন্ত সময় দিলাম, পার্সোনালি রুমে আইসা মাফ না চাইলে সবগুলারে লাত্থি দিয়া হল থাইকা বাইর কইরা দিমু।’

জুনিয়ররা হয়তো ভাববে এই হুমকিতে কাজ হবে না। কিন্তু পরদিন সন্ধ্যা থেকেই ইয়াসিন দেখবে যে তার ব্যাচমেটরা এক এক করে সিনিয়র ভাইদের রুমে গিয়ে নিজেদের পক্ষে সাফাই গেয়ে মাফ চেয়ে আসছে।

রাতের মধ্যে ইয়াসিন দেখবে যে শোভন, পাভেল, মাহমুদ এবং সে নিজে বাদে বাকি সবাই মাফ চেয়ে চলে আসছে। ইয়াসিন ভাববে এখন কী করা যায়। সব দোষ তো তাদের ওপর এসে পড়বে। ইয়াসিনরা ভাববে যে তাহলে তো তারা প্রথমে গিয়ে মাফ চাইলেই পারত। আরও ভাববে, যাক যা হওয়ার হয়েছে। হল থেকে বের করে দিলে বের হয়ে যাব। মাফ চাওয়া যাবে না।

আগামীকাল ইয়াসিনের ভাইভা থাকবে, তাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়বে সে। রাত দুইটার দিকে রুমে ইমিডিয়েটরা এসে চিল্লাফাল্লা শুরু করবে। শোয়াইব বলে উঠবে, ‘…কিরে পোলারা, যারা সিনিয়রগো রুমে যাস নাই এখনি রুম থাইকা বাইর হইয়া যা।’

গালিটা খুব লাগবে ইয়াসিনের। ইয়াসিন রুম থেকে বের হয়ে যাবে। ইয়াসিনের গন্তব্য এফ হলের বায়েজিদের রুম। ভিসি চত্বর অবধি আসার পর তার মনে হবে যে কালকে ভাইভা, তার ফরমাল ড্রেস তো হলের রুমে। অতএব সে আবার যাবে তার হলের রুমে। গিয়ে দেখবে রুম ভেতর থেকে তালা দেওয়া। পরে শুনবে যে সিনিয়রদের নির্দেশে তার বন্ধুরা ভেতর থেকে সিটকিনি লাগিয়ে দিয়েছে। যাতে ইয়াসিনরা রুমে ঢুকতে না পারে। অগত্যা হতাশ হয়ে এফ হলে চলে আসবে ইয়াসিন। পরে সকালে গিয়ে ড্রেস এনে ডিপার্টমেন্টের ভাইভায় অংশগ্রহণ করবে।

ওই দিন সন্ধ্যায় কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস নেওয়ার জন্য সে হলে যাবে। সারা দিন তার গোসল করা হবে না। সুতরাং সে গোসল করবে। গোসল করে যখন বের হবে এবং ৩১৩ নম্বর রুম ক্রস করবে, তখন রুম থেকে ১৯-২০ ব্যাচের আসাদুল্লাহ আর সজীব তার দুই হাত ধরে বলবে, ‘রুমে আয়, কথা আছে।’ ইয়াসিনের উত্তর হবে, ‘আমি রুমে যেতে পারব না। আমি হল ছেড়ে দিচ্ছি। আর হলে আসব না।’ তাদের উত্তর হবে যে ‘রুমে শোভন আছে আয়।’ ইয়াসিন তখন ভাববে যে শোভন বুদ্ধিমান ছেলে এবং যেহেতু সে আছে তাই তার সমস্যা হওয়ার কথা না। ইয়াসিনের এটা ভাবতে দেরি এরই মধ্যে একপ্রকার জোর করে রুমে ঢোকানো হবে তাকে।

রুমে ঢোকানো মাত্রই ইয়াসিনের হাত থেকে সজীব ফোন কেড়ে নিয়ে বলবে, ফোনের পাসওয়ার্ড দে। ইয়াসিন বলবে যে দিতে পারব না। এইটা বলা দেরি, সজীব, আসাদুল্লাহ, শোয়াইব ক্ষুধার্ত কুকুরের মতো ইয়াসিনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। ইয়াসিনের মাথায় ঘাড়ে বুকে অনবরত ঘুষি মারতে থাকবে। একপর্যায়ে ইয়াসিনের নাক ফেটে অনবরত রক্ত পড়তে থাকবে। নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে দেখে মার থামাতে বলবে ইয়াসিন।

এদিকে ১৯-২০ ব্যাচের সারোয়ার, সাইদ ও মাহমুদ একসঙ্গে শোভনকে মারা শুরু করবে। ইয়াসিন তখন বুঝতে পারবে না যে আসলে কী হচ্ছে! কী করা উচিত। এই সময় সজীব ইয়াসিনের ফোন চেক করতে থাকবে। ফেসবুক চেক করতে করতে কিছু কমেন্ট পাবে। কমেন্টগুলো বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা মাত্র। কমেন্টগুলো দেখার পর আবারও ইয়াসিনের মাথায় অনবরত ঘুষি আর গালে অনবরত চড় মারা শুরু হবে।

এদিকে ইয়াসিন যতই সজীবকে দেখবে ততই সে অবাক হবে। কেননা, এই সজীব আর ইয়াসিনের বাড়ি থাকবে একই জেলায় এবং দুজনই একই কলেজের ছাত্র। কলেজে সজীব থাকবে ইয়াসিনের সিনিয়র। সজীবকে দেখেই ইয়াসিনরা মোটিভেশন হবে যে ঢাবিতে তাদেরকে পড়তে হবে। কেননা, ইত্যবসরে সজীব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে থাকবে। ভার্সিটির কোচিংয়ে সজীবকে যে টিচাররা পড়িয়ে থাকবে সেইম টিচারদের কাছে ইয়াসিনও পড়বে। আশ্চর্য এই সজীবই এক পর্যায়ে তার প্যান্ট ধরে টানাটানি করতে থাকবে। বলবে যে প্যান্ট খোল.

.রচোদ। ঠিক তখনই হাতে ক্রিকেট খেলার একটা কাঠের স্টাম্প নিয়ে অবতারণা হবে আসাদুল্লাহর। সে এসেই ইয়াসিনের কলার ধরে হাঁটু ও পায়ে বেধড়ক পেটাতে থাকবে। অন্যদিকে শোভনকে মারার কাজ করবে বাকিরা!

আসাদুল্লাহ যখন ইয়াসিনকে মারতে থাকবে, ঠিক তখনই ফোনে রেকর্ড চালু করে জোর করে বিভিন্ন বিষয়ে তার স্বীকারোক্তি আদায় করা হবে। পাভেলকে মারার জন্য তখন ইয়াসিনকে দিয়ে কল করে তাকে নিচ থেকে রুমে ডেকে আনা হবে।

এর মধ্যে কল আসবে ইয়াসিনের। কল করবে তার মা এবং তার গার্লফ্রেন্ড শিলু। তখন ইয়াসিনের কলার ধরে আসাদুল্লাহ বলবে, ‘লাউডস্পিকার দিয়ে কথা ক।’ তখন যথাসম্ভব গলা ঠিক করে কথা বলার চেষ্টা করবে সে। মায়ের সঙ্গে কথা বলার সময় মা তাকে একবার জিজ্ঞেস করবে, ‘গলাটা এমন লাগতাছে ক্যান বাজান?’ ইয়াসিন বলবে, ‘খারাপ লাগতাছে মা। বহুদিন বাড়ি আসি না। তোমগো লাইগা মন খারাপ লাগতাছে।’ মা বলবেন, ‘বাড়ি আইসা পড় বাজান।’ যখন ইয়াসিনের মা এই সব কথা বলতে থাকবে তখনই ইয়াসিনের মন চাইবে যে সে চিল্লাইয়া তার মাকে এই কথা বলতে, ‘মা, তোমার পোলারে ছাত্রলীগের...ত্তারা মারতাছে। ওরা পাগলা কুত্তার চাইতেও পাগলা হইয়া গেছে মা। বাঁচাও আমারে। আমারে বাঁচাও মা।’

ইত্যবসরে পাভেল রুমে আসবে এবং পাভেলকেও মারা হবে। পরে পাভেলকে দিয়ে ফোন করে মাহমুদকে আনা হবে। মাহমুদ রুমে আসবে এবং মাহমুদকেও মারা হবে। পরে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পালাক্রমে চলবে ইয়াসিনদের ওপর পৈশাচিক নির্যাতন। বেশি মারধরের শিকার হবে ইয়াসিন, কেননা ফ্যাসিবাদী হাসিনাকে নিয়ে ইয়াসিনের কমেন্টগুলোই তার কারণ। ফেসবুকে ওদের যা কিছু সন্দেহজনক মনে হবে, তার সব ছবি তুলে রাখবে। এমনকি মেসেঞ্জারে প্রেমিকার সঙ্গে ইয়াসিনের চ্যাটিং চেক করতেও তাদের বাদ সাধবে না।

এরপর আসবে শোয়াইব, ইয়াসিনের মাথার চুল মুঠ করে ধরে মুখে অনবরত চড়াতে থাকবে আর ধমকাতে থাকবে যে ‘তরে খুন কইরা ফেললেও আমার কিছু যায় আসে না। দরকার হইলে ঢাবিতে আরেকটা আবরার ঘটামু।’

এরপর পালাক্রমে রাত দুইটা বা আড়াইটা পর্যন্ত চলবে নির্যাতন। মাঝখানে ইয়াসিনের ব্যাচমেটদের কয়েকজন কয়েকবার রুমে আসবে ও যাবে। তাতে নির্যাতনের মাত্রা কমবেও না আবার বাড়বেও না। থেকে থেকে নির্যাতন চলবেই। ইয়াসিনের তখন শুধু থেকে থেকে মার কথা মনে পড়বে। মা বলত, যখনই কোনো বিপদে পড়বি তখনই ইয়াসিন সুরা পড়বি। ইয়াসিন মনে মনে ইয়াসিন সুরা পড়ার চেষ্টা করবে। সে মাদ্রাসার ছাত্র। সুরাটি তার মুখস্থ। একদিকে তার শরীরে একের পর এক আঘাত এসে পড়বে, আরেক দিকে সে ক্রমাগত সুরা ইয়াসিন পড়ে যাবে। এত আঘাতের মাঝেও সে খুব সতর্ক থাকবে, যেন সুরাটি কোনোভাবেই সে ভুলভাল না পড়ে।

সেদিন আবার হলে আমভর্তা খাওয়ার উৎসব মতো একটা কিছু চলবে। সিনিয়ররা যারা দিনের বেলায় এই উৎসবে থাকতে পারে নাই, তাদের জন্য এই মাঝ রাত্রিতে আমভর্তা বানিয়ে এনে পরিবেশন করবে কিছু অনুগামী জুনিয়র। সেই আমভর্তা খেতে খেতে ইয়াসিনদের ইচ্ছেমতো মারতে মারতে ভর্তা বানিয়ে ছাড়ার নেশায় পেয়ে বসবে সিনিয়রদের। হয়তো মারতে মারতে একসময় তারা ক্লান্ত হয়ে পড়বে, হয়তো রাত অনেক হলো বলে চোখে ঘুম জড়িয়ে আসবে, তাই এই সময়টায় সিনিয়র আসাদুল্লাহ বলে উঠবে, ‘যা, আইজকার মতো তোগো মাফ কইরা দিলাম। তোরা আমার লগে এখন জয় বাংলা স্লোগান দিবি। চাইলে তোগো পুলিশে দিতে পারতাম। পকেটে বোমা হান্দাইয়া কইতে পারতাম তোরা শিবির করোছ।’

এরপর রুমের কেউ একজন এক পাতা প্যারাসিটামল এগিয়ে দেবে। এগিয়ে দিতে দিতে বলবে, সবাই মিলে খা আর এখনই রুম থেকে বাইর হইয়া যা।

এরপর রুম থেকে আস্তে আস্তে বের হয়ে যাবে তারা। ইয়াসিনদের বলা হবে যে কালকে বিকেলের আগেই সব জিনিসপত্র নিয়ে হল থেকে চলে যেতে হবে।

রুমের কাছে আসতেই ইয়াসিন দেখবে যে এরই মধ্যে ব্যাচমেটরা সব জিনিসপত্র বের করে করিডরের একপাশে স্তূপ করে রেখেছে এবং ভেতর থেকে রুমের সিটকিনি মারা। সিটকিনি মেরে দেওয়ার মানে হলো রুমে এখন প্রবেশ নিষেধ। ইয়াসিনের তখন নিজের কাছে নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে হবে। মনে মনে বলবে, হলের রাজনীতি আমিও বুঝি। চাইলেই আমি সেইফ প্লে করতে পারতাম; কিন্তু করি নাই। করি নাই, কারণ তোরা আমার বন্ধু। বন্ধুগো লগে বেইমানি করা ঠিক না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আস দ ল ল হ জ ন য়রদ র জ ন য়রর স ন য়রর কম ন ট র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ