বিদেশে ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশিদের খরচ করার মোট হিসাব কিছুটা কমলে একক দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্যে বেড়েছে। 

দেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে গিয়ে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডে সেবা ও পণ্য কিনে চলতি বছরের জুলাইয়ে ৮৮৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা খরচ করেছেন, যা জুনের চেয়ে ৬৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা কম। জুনে এই ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৯৫৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

আরো পড়ুন:

ট্রাম্পকে ইউক্রেনের পাশে থাকার আহ্বান রাজা চার্লসের

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

একসময় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি খরচ করতেন। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্রবণতা ক্রমেই নিম্মমুখী হয়েছে।

যুক্তরাজ্যে ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশিদের খরচ বেড়েছে, যেখানে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেশ কয়েকটি দেশে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডে বেশি খরচ করে। এর মধ্যে জুলাইয়ে শীর্ষে রয়েছে ক্রমান্বয়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর। বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে খরচের ৫০ শতাংশের বেশি এই কয়েকটি দেশে হয়েছে। তবে জুনের চেয়ে জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যে বেশি খরচ করেছে বাংলাদেশিরা। বিপরীত দিকে আমেরিকায় খরচ কমিয়েছে।

বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশ ভারতে ভ্রমণ ও চিকিৎসার জন্য যেতেন। ভিসা কড়াকড়ির কারণে ভারতে খরচ কমেছে। বিপরীতে যুক্তরাজ্য, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ বেড়েছে; ফলে ভারতের চেয়ে খরচও বেড়েছে।

প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি বছরের জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশিরা ১৪৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা খরচ করেছেন, যা মোট খরচের ১৬ দশমিক ২১ শতাংশ। যুক্তরাজ্যে খরচের এ অঙ্ক জুনে ছিল ৯৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। একইভাবে জুলাইয়ে আমেরিকায় ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশিরা ১২১ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচ করেছেন, যা মোট খরচের ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আমেরিকায় খরচের এ অঙ্ক জুনে ছিল ১২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। জুলাইয়ে থাইল্যান্ড গিয়ে বাংলাদেশিরা খরচ করেছেন ৬৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যা মোট খরচের ৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ভারতে ৬০ কোটি এবং মালয়েশিয়ায় ৫৯ কোটি এবং সিঙ্গাপুর ৫৪ কোটি টাকা কার্ডে খরচ করেছেন বাংলাদেশিরা।  

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, একজন বাংলাদেশি নাগরিক বিদেশে গিয়ে প্রতি বছর ১২ হাজার ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে পারেন। এই অর্থ কার্ডের মাধ্যমে খরচ করতে পারেন, আবার বিদেশে যাওয়ার সময় নগদ ডলারও সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারেন। তবে কার্ডের মাধ্যমে ডলার পেমেন্ট করতে গেলে একবারে সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার পর্যন্ত খরচ করার সুযোগ রয়েছে।

ঢাকা/নাজমুল/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র য ক তর জ য খরচ কর ছ ন য ক তর জ য খরচ র

এছাড়াও পড়ুন:

কাতারে ইসরায়েলের হামলার পর যৌথ প্রতিরক্ষায় সম্মত উপসাগরীয় দেশগুলো

যেকোনো ধরনের বিদেশি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক যৌথ ব্যবস্থা নিতে সম্মত হয়েছে উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলভুক্ত (জিসিসি) দেশগুলো। আজ বৃহস্পতিবার ছয় সদস্যের জোটটির যৌথ প্রতিরক্ষা কাউন্সিল কাতারের রাজধানী দোহায় এক বিশেষ অধিবেশনে এ বিষয়ে সম্মত হয়। ৯ সেপ্টেম্বর দোহায় ইসরায়েলের হামলার প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জিসিসির প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠক শেষে এক যৌথ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, মন্ত্রীরা তাৎক্ষণিকভাবে গোয়েন্দা তথ্যবিনিময় সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছেন। একীভূত সামরিক কমান্ডের মাধ্যমে এটা করা হবে। আঞ্চলিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করা হবে। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পূর্বসতর্কতা ব্যবস্থা দ্রুততর করা হবে। পাশাপাশি মন্ত্রীরা যৌথ প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা হালনাগাদেরও নির্দেশ দিয়েছেন।

যৌথ ঘোষণায় মোট ছয়টি বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে। বাকি দুটি হলো জিসিসিভুক্ত দেশগুলো তিন মাসের মধ্যে যৌথ আকাশ এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা মহড়ার অনুমোদন দিয়েছে। এরপর দেশগুলো একটি যৌথ বিমান মহড়ায় অংশ নেবে। অংশগ্রহণকারী মন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা জোর দিয়ে বলেন, কাতারের ওপর হামলার অর্থ হলো পুরো জিসিসির ওপর হামলা।

জিসিসির প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কাতারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী শেখ সৌদ বিন আবদুর রহমান আল থানি। বৈঠকে জিসিসির ছয় দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী, দেশগুলোর ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধি এবং জোটটির মহাসচিব জাসিম আল-বুদাইউই অংশ নেন। আলোচনায় মন্ত্রীরা দোহায় ইসরায়েলের হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের গুরুতর লঙ্ঘন উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা জানান।

এই বৈঠকের আগে সোমবার দোহায় আরব লিগ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) এক বিশেষ বৈঠকে প্রায় ৬০টি দেশ অংশ নেয়। সেখানে জিসিসির দেশগুলোর প্রতিনিধিরা আলাদা করে বৈঠক করেছিলেন। বৈঠক শেষে জোটটির সদস্যদেশের সমন্বিত সামরিক ব্যবস্থা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

১৯৮১ সালে জিসিসি গঠিত হয়। এর পর থেকে জোটটির কোনো সদস্যদেশে ৯ সেপ্টেম্বরের আগপর্যন্ত সরাসরি হামলা চালায়নি ইসরায়েল। জোটটির প্রায় সব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের সুসম্পর্ক রয়েছে।

আরও পড়ুনইসরায়েলের বিরুদ্ধে কি যৌথ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলবে উপসাগরীয় আরব দেশগুলো১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এদিকে গাজা উপত্যকার গাজা নগরীতে গত বুধবার শুরু হওয়া ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলায় আজ অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। একই সময়ে গাজার অন্যান্য স্থানে নিহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন। প্রায় দুই বছরের ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল অন্তত ৬৫ হাজার ১৪১। আহত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯২৫ জন।

ইসরায়েলের দাবি, গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় সাড়ে তিন লাখ ফিলিস্তিনি গাজা নগরী ছেড়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের তথ্যমতে, উপত্যকার বৃহত্তম শহরটিতে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা শুরুর আগে কমবেশি ১০ লাখ ফিলিস্তিনি ছিলেন, যাঁদের অনেকে অন্যান্য জায়গা থেকে একাধিকবার স্থানচ্যুত হয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনগাজা নগরীতে দুই দিনে দেড় শতাধিক হামলা ইসরায়েলের১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ