দাবি মানেন, আন্দোলন থেকে সরে আসব: গোলাম পরওয়ার
Published: 19th, September 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘‘সরকার জনমত যাচাই না করে প্রভাবিত হয়ে বিশেষ রাজনৈতিক শক্তির কাছে মাথা নত করায় আন্দোলনে নেমেছে জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো। আমরা বলতে চাই জুলাই সনদ করবেন, গোপনে বিএনপির কাছে যাবেন, এটি হতে দেওয়া হবে না। আমাদের নিরপেক্ষভাবে ডাকেন, আমাদের পাঁচ দফা দাবি মানেন, আমরা আন্দোলন থেকে সরে আসব।’’
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন, পিআর পদ্ধতির প্রবর্তনসহ ৫ দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
‘আলোচনায় সমাধান হচ্ছে না বলে জামায়াতের আন্দোলন’
জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন দিন: গোলাম পরওয়ার
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘‘যা যা সংস্কার কমিশনে সকলে একমত হয়েছে, তা জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করতে সরকারকে সাংবিধানিক আদেশ জারি ও গণভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের বড় ভাই দাবি করা রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, এটির জন্য ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ চাওয়া হোক। আমরা বলতে চাই, রাজনৈতিক সংস্কারকে সুপ্রিম কোর্টে নেওয়া যাবে না। কোর্টে গেলে প্যাচ লাগবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে আমাদের নামে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। অনেকে বলছেন, আমরা নাকি নির্বাচন চাই না। আন্দোলন কর্মসূচি দিয়ে নাকি নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছি। অথচ জামায়াতের আমির বলেছেন, ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত সময়। আমরা ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন চাই, কিন্তু তা সংস্কার, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, গণহত্যার বিচার, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, ফ্যাসিবাদের দোসরদের কার্যক্রম নিষিদ্ধের মধ্য দিয়ে।’’
গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘‘প্রধান উপদেষ্টার জুলাই ঘোষণাপত্রের মধ্যে দুর্বলতা ছিল। জুলাই ঘোষণাপত্রের ড্রাফট আমাদের না দেখিয়ে বিএনপিকে সরবরাহ করা হয়েছে। সেখানে ২৫ অনুচ্ছেদে লেখা হয়েছে, আগামী নির্বাচিত সরকার এসে জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন করবে। সেজন্য বিএনপি খুশি হয়েছে। তারা বলতে পারছে, পরবর্তী সরকার এসে জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন করবে। তাহলে আমরা ছয় মাস কষ্ট করে সংস্কার, ঐক্যমত কমিশনে কেন খাটলাম। এত কিছুর তো দরকার ছিল না।
পিআর পদ্ধতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দেশে নিবন্ধিত ৩১ দলের মধ্যে ২৫টি দল পিআর পদ্ধতি নিয়ে একমত হয়েছে। কিন্তু, বিএনপি পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে। তারা প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ১০ বছর মানতে চায় না। গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তারা আপত্তি জানিয়েছে। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ব্যক্তি স্বার্থ না থাকায় কালো টাকার খেলা, পেশিশক্তি প্রদর্শন, কারচুপি, মনোনয়ন বাণিজ্য হবে না। ফলে ওইসব রাজনৈতিক দল মনোনয়নের নামে কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য করতে পারবে না। তাই তারা পিআর পদ্ধতি চায় না। তারা সংসদে কর্তৃত্ববাদী শাসন চালাতে পারবে না বলে পিআর ঠেকাতে চায়। আমরা বলছি, স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদী শাসন চিরতরে বন্ধ, সংসদে সকল দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণে আগামী নির্বাচন পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হওয়ার কোনো বিকল্প নাই। বাংলাদেশের জনগণ আর স্বৈরাচারী শক্তির ফ্যাসিবাদী শাসন দেখতে চান না।’’
সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘‘স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের সকল জুলুম-নির্যাতন, গুম-খুন,গণহত্যা, লুটপাটসহ সব ধরনের দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করতে হবে। সেই সঙ্গে স্বৈরাচারী শক্তির দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। এ দাবিগুলো এখন দেশের জনগণের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। তাই, বিলম্ব না করে অতিদ্রুত জনগণের দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।’’
ঢাকা/আমিরুল/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ ল ম পরওয় র জ ল ই সনদ র জন ত ক আম দ র ব এনপ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন দিন: গোলাম পরওয়ার
জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজনের জন্য ঐকমত্য কমিশনের প্রধান হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন,“এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হচ্ছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সবচাইতে উপযুক্ত সরকার। যেহেতু আপনি (ড. ইউনূস) ঐকমত্য কমিশনের প্রধান। কোনো সংকট তৈরি না করে জুলাই সনদের ভিত্তিতে আপনি নির্বাচন দিন।”
আরো পড়ুন:
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন ১৮ কোটি মানুষের দাবি: জামায়াত
একবার হলেও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় জামায়াত
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর কর্তৃক পাঁচ গণদাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, “জামায়াতে ইসলামী বরাবরই চেয়েছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাক। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, একটি রাজনৈতিক মহলের প্রভাব খাটানোর ফলে সরকার লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পারছে না।”
“আমরা দাবি করেছি, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির মাধ্যমে নির্বাচন দিতে হবে। ৫ আগস্ট ড. ইউনূস জুলাই ঘোষণা পেশ করেছিলেন। সেই ড্রাফটটা একটা বিশেষ মহলের প্ররোচণায় পড়ে জনআকাঙ্ক্ষাবিরোধী অনেক কিছু উপস্থাপন করা হয়েছিল। আমরা সেটা সংশোধন করতে বলেছিলাম। যদি নির্বাচনের আগে তা সংশোধন করা না হয়, তবে দেশ মহাবিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে পারে।”
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনি কথা দিয়েছিলেন যে আমরা বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামোর সবটাই সংস্কার করব। কিন্তু যারা এখনই বলতে পারে যে আমরা আগামী সরকারে এসে সেটা মুছে দেব, আমরা জানি না কে আসবে, কিন্তু এই কথার মধ্যে দুরভিসন্ধি কাজ করছে।”
তিনি বলেন, “জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না দেওয়ায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। অনেকেই আমাদের বলছেন আলোচনায় থাকা সত্ত্বেও কেন আপনারা আন্দোলনে যাচ্ছেন। তার কারণ আলোচনা করা সত্ত্বেও কোনো সমাধান হচ্ছে না। কোনো কিছুর চাপের মুখে সরকার এক শুভঙ্করের ফাঁকির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের আন্দোলন রাজনীতির অংশ। জরিপে ৭০ শতাংশ জনগণ বলেছে, তারা পিআরের পক্ষে। আমরা চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি যে, গণভোট দিন। জনগণ যদি পিআর মানে, আপনাদেরও মানতে হবে। না মানলে জনগণ যে সিদ্ধান্ত দেবে, আমরা তা মেনে নেব।”
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন দলটির নেতাকর্মীরা। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেট থেকে মিছিল শুরু হয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
এ সময় দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি