বাংলাদেশে পরিচ্ছন্ন ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার
Published: 19th, September 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশকে এখনই পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের দিকে অগ্রসর হতে হবে, যাতে দেশ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন পথে এগিয়ে যেতে পারে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অ্যানথ্রোপোসিন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান কার্ল পেজ ও তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে এক ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ ও জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হিসেবে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল থাকার সামর্থ্য রাখে না। তিনি বলেন, এখন সময় এসেছে বাংলাদেশকে গুরুত্বসহকারে বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানির কথা বিবেচনা করার, যার মধ্যে বৃহৎ পরিসরে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন অন্যতম।
গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের ভাই কার্ল পেজ পরবর্তী প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তি এবং হাইব্রিড সিস্টেমের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেন, যা নির্ভরযোগ্য ও শূন্য কার্বন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বার্জ-ভিত্তিক পারমাণবিক রিঅ্যাক্টরগুলো সাশ্রয়ী, কম রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন এবং বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প খাতকে কয়েক দশক ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম।
কার্ল পেজ বলেন, পারমাণবিক শক্তি আজ আর বিশ্বব্যাংকের মতো বড় উন্নয়ন অর্থায়ন সংস্থাগুলোর কাছে নিষিদ্ধ বিষয় নয়। ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ ইতিমধ্যেই তাদের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে এ প্রযুক্তি গ্রহণ করছে।
অ্যানথ্রোপোসিন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, উদ্ভাবনে বাংলাদেশের শক্তিশালী রেকর্ড রয়েছে। তাই দেশটি পরিচ্ছন্ন জ্বালানির রূপান্তরে নেতৃত্ব দিতে পারে। এর সুফল হবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রাখা এবং শিল্প খাতের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি।
কার্ল পেজ আরও বলেন, বাংলাদেশ উদীয়মান প্রযুক্তির জন্য একটি কৌশলগত কেন্দ্র এবং পারমাণবিক উদ্ভাবনে শান্তিপূর্ণ নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি একটি নতুন জাতীয় বিদ্যুৎ নীতি প্রণয়ন করেছে। এতে সৌর জ্বালানির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
তবে প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, পারমাণবিক বিকল্প নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কঠোর গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাই অপরিহার্য। তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এসব সুযোগ অনুসন্ধান করব। তবে প্রতিশ্রুতিশীল এসব প্রযুক্তি নিয়ে গভীর গবেষণা দরকার। কোনো সন্দেহ নেই, বাংলাদেশকে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা দ্রুত হ্রাস করতেই হবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৭০ শতাংশ নির্বাচন সামগ্রী কেনাকাটা সম্পন্ন
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, “আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নির্বাচন সামগ্রীর ৭০ শতাংশ কেনাকাটা এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
সিনিয়র সচিব জানান, মার্কিং সিল, গালা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের লক, হেসিয়ান ব্যাগসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন সামগ্রী এরইমধ্যে ইসির গুদামে পৌঁছেছে। চলতি সেপ্টেম্বরের মধ্যেই অবশিষ্ট সামগ্রী সরবরাহ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।”
তিনি বলেন, “প্রায় ৭০ শতাংশ কেনাকাটার কাজ শেষ হয়েছে। সেপ্টেম্বরে অবশিষ্ট কেনাকাটাও শেষ হবে। চাহিদা অনুযায়ী সব সামগ্রী সময়মতো পৌঁছে যাবে।”
তিনি জানান, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) থেকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী— স্ট্যাম্প প্যাড ও অমোচনীয় কালি সরবরাহ করা হবে। ১৫ অক্টোবরের মধ্যে এই সামগ্রী হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউএনডিপি। এর একটি অংশ চলতি মাসেই আসবে এবং বাকিটা আগামী মাসে।
তিনি বলেন, “স্থানীয় বাজার থেকে আট ধরনের সামগ্রী সংগ্রহ করা হচ্ছে, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে- গালা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের লক, অফিসিয়াল সিল, মার্কিং সিল, ব্রাস সিল, হেসিয়ান বড় ব্যাগ, হেসিয়ান ছোট ব্যাগ ও গানি ব্যাগ।
সচিব আশ্বস্ত করে বলেন, “নির্বাচন সামগ্রী নিয়ে আমাদের কোনো সংশয় নেই। আমরা যে সময়সীমা নির্ধারণ করেছিলাম, সেই সময়ের মধ্যেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারব। নির্বাচনের আগে মাঠ পর্যায়ে সব নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছে যাবে।”
ইসির ঘোষিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ নভেম্বরের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে নির্বাচন সামগ্রী বিতরণ সম্পন্ন হবে। এর মধ্যে থাকবে- ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স, সিল, কালি ও ভোট গ্রহণের প্রয়োজনীয় সব উপকরণ।
সচিব বলেন, “সময়মতো সামগ্রী পৌঁছানো গেলে নির্বাচন পরিচালনায় কোনো ধরনের বাধা তৈরি হবে না। এতে নির্বাচনের সুষ্ঠুতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”
ঢাকা/এএএম/এস