আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ আবার নিতে চান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনকে মোকাবিলার জন্য এমন পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি। তবে সাবেক ও বর্তমান মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, বাগরাম পুনরায় নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার লক্ষ্য শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তানে নতুন করে মার্কিন অভিযানের মতো দেখাতে পারে। এ কাজের জন্য ১০ হাজারের বেশি সেনা এবং অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজন পড়বে।

গতকাল বৃহস্পতিবার লন্ডন সফরে ছিলেন ট্রাম্প। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমরা বাগরাম ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে চাই।’ এই ঘাঁটিটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীনের কাছে কৌশলগত স্থানে অবস্থিত উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘চীন যেখানে নিজেদের পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে, সেখান থেকে বাগরামের দূরত্ব মাত্র এক ঘণ্টার।’

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দশক ধরে আফগানিস্তানে অভিযান চালায় মার্কিন বাহিনী। তখন দেশটিতে মার্কিন সেনাদের প্রধান ঘাঁটি ছিল বাগরাম। ২০২১ সালে তালেবানের অগ্রযাত্রার মুখে বাগরামসহ আফগানিস্তানের অন্যান্য এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে যুক্তরাষ্ট্র। সে সময় এই সেনা প্রত্যাহার ঘিরে সৃষ্টি হওয়া বিশৃঙ্খলা বেশ আলোচিত হয়েছিল।

বাগরামে দুটি রানওয়ে রয়েছে। এর একটিতে কার্গো ও বোমারু বিমান ওঠানামা করতে পারে। ঘাঁটিটিতে মার্কিন বাহিনীর একটি কারাগারও ছিল। সেটি পরিচিতি পেয়েছিল আফগানিস্তানের গুয়ান্তানামো হিসেবে।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে বাগরাম থেকে সব সেনা প্রত্যাহারের জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর দোষারোপ করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি বলেছিলেন, সেখানে অন্তত কিছু মার্কিন সেনা মোতায়েন রাখা উচিত ছিল। যদিও ২০২০ সালে নিজের প্রথম মেয়াদে তালেবানের সঙ্গে ট্রাম্প যে চুক্তি করেছিলেন, তাতে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সব সেনা প্রত্যাহারের কথা উল্লেখ ছিল।

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের একটি চলমান পর্যালোচনার মধ্যেই বাগরাম নিয়ে এই মন্তব্য করলেন ট্রাম্প। তাঁর প্রশাসনের অনেক নীতিনির্ধারকের মতে, চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। এ থেকে মনোযোগ সরানোর জন্য ট্রাম্প হয়তো বাগরামের বিষয়টি সামনে এনেছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বাগরামে বিমানঘাঁটিটি প্রথম নির্মাণ করেছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। আশির দশকে আফগান যুদ্ধের সময় দেশটিতে সোভিয়েতদের প্রধান ঘাঁটি ছিল এটি। ২০০১ সালে তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর বাগরামের দখল নেয় যুক্তরাষ্ট্র। পুনর্নির্মাণ করে সেখানে তারা ৭৭ বর্গকিলোমিটারের একটি ঘাঁটি গড়ে তোলে।

বাগরাম ঘাঁটির একটি রানওয়ে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন র য ক তর ষ ট র র জন য র একট

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানিস্তানের বাগরাম ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে চান ট্রাম্প, আছে যেসব সমস্যা

আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ আবার নিতে চান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনকে মোকাবিলার জন্য এমন পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি। তবে সাবেক ও বর্তমান মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, বাগরাম পুনরায় নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার লক্ষ্য শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তানে নতুন করে মার্কিন অভিযানের মতো দেখাতে পারে। এ কাজের জন্য ১০ হাজারের বেশি সেনা এবং অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজন পড়বে।

গতকাল বৃহস্পতিবার লন্ডন সফরে ছিলেন ট্রাম্প। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমরা বাগরাম ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে চাই।’ এই ঘাঁটিটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীনের কাছে কৌশলগত স্থানে অবস্থিত উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘চীন যেখানে নিজেদের পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে, সেখান থেকে বাগরামের দূরত্ব মাত্র এক ঘণ্টার।’

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দশক ধরে আফগানিস্তানে অভিযান চালায় মার্কিন বাহিনী। তখন দেশটিতে মার্কিন সেনাদের প্রধান ঘাঁটি ছিল বাগরাম। ২০২১ সালে তালেবানের অগ্রযাত্রার মুখে বাগরামসহ আফগানিস্তানের অন্যান্য এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে যুক্তরাষ্ট্র। সে সময় এই সেনা প্রত্যাহার ঘিরে সৃষ্টি হওয়া বিশৃঙ্খলা বেশ আলোচিত হয়েছিল।

বাগরামে দুটি রানওয়ে রয়েছে। এর একটিতে কার্গো ও বোমারু বিমান ওঠানামা করতে পারে। ঘাঁটিটিতে মার্কিন বাহিনীর একটি কারাগারও ছিল। সেটি পরিচিতি পেয়েছিল আফগানিস্তানের গুয়ান্তানামো হিসেবে।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে বাগরাম থেকে সব সেনা প্রত্যাহারের জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর দোষারোপ করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি বলেছিলেন, সেখানে অন্তত কিছু মার্কিন সেনা মোতায়েন রাখা উচিত ছিল। যদিও ২০২০ সালে নিজের প্রথম মেয়াদে তালেবানের সঙ্গে ট্রাম্প যে চুক্তি করেছিলেন, তাতে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সব সেনা প্রত্যাহারের কথা উল্লেখ ছিল।

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের একটি চলমান পর্যালোচনার মধ্যেই বাগরাম নিয়ে এই মন্তব্য করলেন ট্রাম্প। তাঁর প্রশাসনের অনেক নীতিনির্ধারকের মতে, চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। এ থেকে মনোযোগ সরানোর জন্য ট্রাম্প হয়তো বাগরামের বিষয়টি সামনে এনেছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বাগরামে বিমানঘাঁটিটি প্রথম নির্মাণ করেছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। আশির দশকে আফগান যুদ্ধের সময় দেশটিতে সোভিয়েতদের প্রধান ঘাঁটি ছিল এটি। ২০০১ সালে তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর বাগরামের দখল নেয় যুক্তরাষ্ট্র। পুনর্নির্মাণ করে সেখানে তারা ৭৭ বর্গকিলোমিটারের একটি ঘাঁটি গড়ে তোলে।

বাগরাম ঘাঁটির একটি রানওয়ে

সম্পর্কিত নিবন্ধ