সামর্থ্য নিয়ে সংশয় ছিল না তেমন। স্বর্ণা আক্তারের প্রতি দলও আস্থা রেখে যাচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। ২১ ওয়ানডে আর ৩৫ টি-টোয়েন্টি খেলার পর অবশেষে তিনি পেয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম ফিফটি। সেটিও রেকর্ড গড়ে। মেয়েদের ওয়ানডেতে বাংলাদেশের দ্রুততম ফিফটি এখন স্বর্ণারই। ৩৪ বলে ৫০ ছুঁয়ে ব্যাটটা উঁচিয়ে ধরে উইকেটেই সেজদা দিয়ে শুকরিয়া আদায় করেছেন স্বর্ণা।

টপ অর্ডারদের গড়ে দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে শেষদিকে তাঁর মারমুখী ব্যাটিংয়ে নারী বিশ্বকাপে বিশাখাপট্টনমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৩২ রান করেছে বাংলাদেশ।

এই রানের ভিতটা গড়ে দিয়েছিলেন দুই ওপেনারই। শুরুর ১০ ওভার দেখেশুনে পার করে দিয়ে তারা তোলেন ২৮ রান। বাংলাদেশ তাঁদের প্রথম উইকেট হারায় ৫৩ রানে। ৭৬ বলে ৩০ রান করে আউট হয়েছেন ফারজানা হক।

তবে তাঁদের সেই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের ইনিংসটা মাঝে টানেন শারমিন আক্তার ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা। দুজনের ৯১ বলের জুটিতে আসে ৭৭ রান। ৪২ বলে ৩২ রান করে নিগার আউট হয়ে গেলে উইকেটে আসেন স্বর্ণা।

এর মধ্যেই শারমিন ফিফটি পেয়ে যান। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি পাওয়া এই ব্যাটার যদিও রানআউট হয়ে যান মাইলফলকটা ছুঁয়েই। স্বর্ণা শুরু থেকেই ছিলেন মারমুখী। দ্বিতীয় বলে সুইপ করে বাউন্ডারি মেরে বার্তা দিয়ে রাখা স্বর্ণা ৩ ছক্কা আর সমান চারে ৩৫ বলে ৫১ রান করে অপরাজিত থাকেন। তাঁর ৩ ছক্কাও বাংলাদেশের রেকর্ড। এর আগে মেয়েদের ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ২টি ছক্কা মেরেছিলেন নিগার সুলতানা।

এর মধ্যেই দেশের হয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডটা নিজের করে নিয়েছেন স্বর্ণা। এত দিন এই রেকর্ডটি ছিল নিগার সুলতানার। গত এপ্রিলে লাহোরে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৯ বলে ফিফটি করেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন স বর ণ র ন কর র কর ড উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

চলে গেলেন পাকিস্তানের বিখ্যাত মোহাম্মদ ভাইদের বড়জন

চলে গেলেন ক্রিকেটের মোহাম্মদ ভাইদের সবচেয়ে বড়জন।  হানিফ মোহাম্মদ ও মুশতাক মোহাম্মদদের ভাই  সাবেক ক্রিকেটার ওয়াজির মোহাম্মদ আজ ৯৫ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে মারা গেছেন। তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পিসিবির এক্স হ্যান্ডলে বলা হয়, ‘পাকিস্তানের সাবেক টেস্ট ব্যাটসম্যান ওয়াজির মোহাম্মদের মৃত্যুতে পিসিবি গভীরভাবে শোকাহত। মোহাম্মদ ভাইদের মধ্যে চারজন টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৫২ থেকে ১৯৫৯ সালের মধ্যে তিনি দেশের হয়ে ২০টি টেস্ট খেলেন। তার পরিবার ও বন্ধুদের সমবেদনা জানাচ্ছে পিসিবি।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাকিস্তানের শুরুর দিনগুলোয় টেস্টে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন সাবেক ব্যাংকার ওয়াজির। তাঁরা মোট পাঁচ ভাই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলা রাইস মোহাম্মদই শুধু টেস্ট খেলেননি। মোহাম্মদ ভাইদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত পাকিস্তানের হয়ে ৫৫ টেস্ট খেলা কিংবদন্তি হানিফ মোহাম্মদ মারা গেছেন ২০১৬ সালে। মুশতাক মোহাম্মদ পাকিস্তানের হয়ে ৫৭ টেস্ট খেলেছেন। আরেক ভাই সাদিক মোহাম্মদ ৪১ টেস্ট খেলেন পাকিস্তানের হয়ে।

সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ২০১৬ সালে ইসরার আলীর মৃত্যুর পর ওয়াজিরই ছিলেন পাকিস্তানের জীবিত থাকা সবচেয়ে বেশি বয়সী টেস্ট ক্রিকেটার। ১৯৫২ সালে প্রথম টেস্ট সিরিজ খেলতে ভারত সফরে যাওয়া পাকিস্তান দলের অংশ ছিলেন ওয়াজির।

লোয়ার-মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ২৭.৬২ গড় ওয়াজির প্রতিভার প্রতি সুবিচার করে না। তবে পঞ্চাশের দশকে টেস্টে পাকিস্তানের শুরুর দিনগুলোতে বেশ কিছু সাফল্যে তাঁর বড় অবদান আছে। ১৯৫৪ সালে ওভাল টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের ২৪ রানের জয়ে বড় ভূমিকা ছিল ওয়াজিরের। পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬০ মিনিট ক্রিজে থেকে তাঁর ৪২ রানের ইনিংসটি পাকিস্তানকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেয়। প্রথম দল হিসেবে ইংল্যান্ডে প্রথম সফরেই টেস্ট জয়ের নজির সেই সফরে গড়েছিল পাকিস্তান। দুই বছর পর করাচিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাকিস্তানের ৯ উইকেটের জয়ে প্রথম ইনিংসে ৬৭ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন ওয়াজির।

আরও পড়ুন৩৪ বলের ফিফটিতে স্বর্ণার রেকর্ড, বাংলাদেশ ২৩২১ ঘণ্টা আগে

১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর পাকিস্তান ক্রিকেটে বেশ কিছু কারণে স্মরণীয়। সেই সফরে গ্যারি সোবার্স যেমন ৩৬৫ রানের রেকর্ড গড়েন, তেমনি হানিফও খেলেন ৩৩৭ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস। সেই সফরে ওয়াজির ৫ টেস্টে দুই সেঞ্চুরিসহ ৪৪০ রান করেন। পোর্ট অব স্পেনে পাকিস্তানের ইনিংস ও ১ রানের জয়ে দলের প্রথম ইনিংসে ১৮৯ রান করেন ওয়াজির।

১০৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৪০.৪০ ব্যাটিং গড়ের ওয়াজিরকে পাকিস্তান ক্রিকেটে আদর করে ‘উইজডেন’ নামে ডাকা হতো। কারণ ক্রিকেটের অনেক খুঁটিনাটি পরিসংখ্যান তাঁর ঠোঁটের ওপরে থাকত। ভাই মুশতাকের মতো ওয়াজিরও ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে বসবাস করতেন।

ওয়াজির মোহাম্মদ, হানিফ মোহাম্মদ, মুশতাক মোহাম্মদ ও সাদিক মোহাম্মদ মিলে টেস্ট খেলেছেন মোট ১৭৩টি। হানিফ মোহাম্মদের ছেলে শোয়েব মোহাম্মদের ৪৫ টেস্টও যোগ করলে মোহাম্মদ পরিবারে মোট টেস্টের সংখ্যা দাঁড়ায় ২১৮।  ১৯৬৯ সালে করাচিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে একসঙ্গে তিন ভাই হানিফ, সাদিক ও মুশতাক পাকিস্তান দলে খেলেন। যা টেস্ট ইতিহাসে তিন ভাইয়ের একসঙ্গে টেস্ট খেলার তৃতীয় ঘটনা।

আরও পড়ুন১৬ রানে শেষ ৫ উইকেট নেই পাকিস্তানের, স্বস্তিতে নেই দক্ষিণ আফ্রিকাও১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ