বাচ্চাদের পানির বোতল ও টিফিন বক্সেও ভ্যাট বসল
Published: 13th, January 2025 GMT
বাচ্চাদের পানির বোতল ও টিফিন বক্সেও ভ্যাট বসল। শহর–গ্রামনির্বিশেষে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্লাস্টিকের তৈরি টিফিন বক্স ও পানির বোতল ব্যবহার করে থাকে। এসব পণ্য মধ্যবিত্ত পরিবারের নিত্যপণ্যে পরিণত হয়েছে। এবার ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের ফলে টিফিন বক্স ও পানির বোতলের দামও বাড়বে।
প্লাস্টিকের তৈরি টিফিন বক্স ও পানির বোতলের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। উৎপাদন পর্যায়ে এই ভ্যাট বসবে। শেষ পর্যন্ত তা ভোক্তার ঘাড়েই চাপবে। এত দিন এসব পণ্যে কোনো ভ্যাট ছিল না।
গত বৃহস্পতিবার শতাধিক পণ্য ও সেবায় বাড়তি ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর বিষয়ে অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার।
কত দাম বাড়বে, তার একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। প্লাস্টিকের পানির বোতলের দাম যদি ১০০ টাকা হয়, তাহলে উৎপাদন পর্যায়ে, অর্থাৎ কারখানা থেকে বের হওয়ার সময় ১৫ টাকা ভ্যাট দিতে হবে উৎপাদককে। এর মানে উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ টাকা দাম বেড়ে যাবে, যা শেষ পর্যন্ত ক্রেতাকেই দিতে হবে। একইভাবে টিফিন বক্সের দামও বাড়বে।
বর্তমানে মেঘনা গ্রুপ, প্রাণ গ্রুপ, বেঙ্গল গ্রুপসহ বিভিন্ন খ্যাতনামা শিল্পগোষ্ঠী পানির বোতল, টিফিন বক্সসহ বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন করে। করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোও বর্তমানে এ ধরনের ব্যবসায় যুক্ত হয়েছে।
অন্যদিকে কম দামি হাওয়াই চপ্পলের দামও বাড়তে পারে। ১৫০ টাকা পর্যন্ত হাওয়াই চপ্পল ও প্লাস্টিকের পাদুকার ক্ষেত্রে উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট বসানো হয়েছে।
এর আগে গত মে মাসের শেষ সপ্তাহে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্লাস্টিকের তৈরি পানির বোতল, টিফিন বক্স, হাওয়াই চপ্পল, প্লাস্টিকের পাদুকাসহ বিভিন্ন পণ্যে উৎপাদন, আমদানি ও সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার আবার ওই চার পণ্যের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতির নির্দেশ বাতিল করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।